একাদশে ভর্তি : সময় সঙ্কটে অভিভাবকরা
একাদশে ভর্তির ফল প্রকাশে জটিলতা দেখা দেওয়ায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় সময় পার করছিলেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। অবশেষে অনেক জল্পনার অবসান ঘটিয়ে রোববার মধ্যরাতে এ ফল প্রকাশ করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি।
কারিগরি জটিলতার কারণে নির্ধারিত সময় থেকে চার দফা পিছিয়ে, ৩ দিন পর এ ফল প্রকাশ করা হয়। শেষ পর্যন্ত ফল প্রকাশ হওয়ায় খুশি শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। তবে ফল প্রকাশে বিলম্ব হওয়ায় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন অনেকে।
একাদশে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থী আনিকা তাসনিমের মা বলেন, অনলাইনে ভর্তির ফরম সংগ্রহ বা ফল প্রকাশ নিয়ে আমার বলার কিছু নাই। তবে এটা করে ফলাফল প্রকাশে যে বিড়ম্বনা সৃষ্টি করা হয়েছে, তার সম্পূর্ণ দায়ভার সরকার নিলেও ঝামেলা পোহাতে হয়েছে আমাদের।’
তিনি আরো বলেন, ‘একাদশের ফল প্রকাশ আজ হবে, কাল হবে এমন ঘোষণা দেওয়া হচ্ছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে। ফলে আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের থেকে বেশি উৎকন্ঠায় ছিলাম। সময়মত সন্তানকে কলেজে ভর্তি করাতে পারব কি না- তা নিয়েও ছিল সংশয়। শেষ পর্যন্ত ফলাফল প্রকাশ হওয়ায় চিন্তামুক্ত হয়েছি। এখন ভালোয় ভালোয় ভর্তি করাতে পারলেই বাঁচি!’
একাদশে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম সাকিবের বাবা জানান, ফলাফল প্রকাশের কথা শোনার পর প্রায় একঘণ্টা চেষ্টা করে ফলটা জানতে পেরেছেন। তিনি ক্ষুব্ধ স্বরে বলেন, ‘অবস্থা যদি এমনই হয়, তাহলে এমন ওয়েবসাইটের দরকার ছিল কি না, সেটাই এক প্রশ্ন। উপরন্তু এমনও শুনেছি অনেক শিক্ষার্থী নাকি আবেদনই করতে পারেনি। তাদের জায়গায় অন্য কেউ আবেদন করেছে। তাহলে এই ছেলেমেয়েগুলো কোথায় যাবে? তাদের শিক্ষাজীবন কি এখানেই শেষ হয়ে যাবে?’
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কলেজ অধ্যক্ষ এ প্রতিবেদককে জানান, ভর্তির জন্য অন্যান্য বছর ১০ থেকে ১৫ দিন সময় পাওয়া গেলেও এবার তার ব্যতিক্রম হয়েছে। সরকার যদি সাড়ে ১১ লাখ আবেদনকারীর মধ্যে ১০ লাখকে প্রথম তালিকায় ভর্তির সুযোগ দেয়, তাহলে প্রতিটি কলেজে গড়ে ১১৩ জন করে শিক্ষার্থীকে ভর্তি হতে হবে। আর এ জন্য নির্ধারিত সময়সীমা মাত্র চার দিন। সেক্ষেত্রে এই রমজানের বন্ধেই এসব শিক্ষার্থীকে তড়িঘড়ি করে আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে ভর্তি হতে হবে। এ অবস্থায় কম চাহিদার কলেজের তুলনায় নামিদামি কলেজগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে সংকটে পড়বে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি আবু বক্কর ছিদ্দিক জানিয়েছেন, ২৯ ও ৩০ জুন এবং ১ ও ২ জুলাই শিক্ষার্থীরা কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে পূর্বনির্ধারিত ১ জুলাই থেকেই ক্লাস শুরু হবে। আর এ সময়ের কোন পরিবর্তন হবে না।
প্রসঙ্গত, ৩০ মে প্রকাশিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং ২০১৩ ও ২০১৪ সালে পাস করা সাড়ে ১১ লাখ শিক্ষার্থী পছন্দের কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য এ তালিকার অপেক্ষায় ছিল।
মনোনীতদের প্রথম মেধা তালিকা প্রকাশের কথা ছিল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায়। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২৭ থেকে ৩০ জুন বিলম্ব ফি ছাড়া প্রথম মেধা তালিকার শিক্ষার্থীদের ভর্তি করে আসন খালি থাকা সাপেক্ষে ২ জুলাই দ্বিতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল। তবে সারা দেশের সব কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীতদের তথ্য সমন্বিত করে ওই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে গিয়ে জটিলতায় পড়ে বুয়েটের আইআইসিটি- যাদের কাছ থেকে কারিগরি সহায়তা নিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এবার মোট ১১ লাখ ৫৬ হাজার শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করলেও, একাধিক আবেদন করার সুযোগ থাকায় মোট আবেদন জমা পড়ে ৩৩ লাখ।
সূত্রঃ রাইজিংবিডি
Vorti kivabe hobe online na college gia.