আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। যার আদি নাম আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবস। প্রতি বছরের মার্চের ৮ তারিখে এই দিবসটি
সারা বিশ্বে পালন করা হয়। বিশ্বব্যাপী এই দিনটি একটি সামাজিক দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। এই দিন সামাজিক,
অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নারীদের সাফল্য উদযাপন করা হয়ে থাকে বিশ্বব্যাপী।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অবদান নিয়ে আলোচনা হয় বিশ্বব্যাপী। তবে নারী দিবসের মূল বক্তব্যটা কিন্তু সেই লিঙ্গ সমতাকেই
ত্বরান্বিত করার মধ্যেই প্রথিত।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস এক যুগ বা দেড় যুগের নয় বরং এক শতাব্দীর ইতিহাস। ১৯০০ শতকের শুরুতে পৃথিবী
যখন বদলাতে শুরু করেছিল তখন একইসাথে বদলে গিয়েছিল নারীদের চিরাচরিত প্রথাকে ত্যাগ করা।
মধ্যযুগের বর্বরতাকে দূরে ঠেলে সমাজকে অবাক করে দিয়ে শুরু হয়েছিল নারীদের বিশ্বজয়। আর আজকের দিনে নারী
বিশ্ব জয় করে পা রেখেছে মহাকাশ জয়ে। তাই নারী দিবসের তাৎপর্যের মতোই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাসও
তাৎপর্যমণ্ডিত।
এদিনে যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া এক আন্দোলনই নারী দিবস পালনের পটভূমি। ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ নিউ ইয়র্কের সুতা
কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হোন। সেদিন বেতন বৈষম্য, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা আর কাজের
বৈরি পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে নারীরা একজোট হলে তাদের ওপর কারখানা মালিকরা আর মদদপুষ্ট প্রশাসন
দমন-পীড়ন চালায়।
প্রায় অর্ধশতাব্দী পর ১৯০৮ সালে জার্মানিতে এ দিনটি স্মরণে প্রথম নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯১০ সালে ডেনমার্কের
কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে প্রায় ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে অংশ
নিয়েছিলেন।
এ সম্মেলনেই প্রথমবারের মতো প্রতি বছরের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ
প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ নারী দিবস পালিত হয়। বাংলাদেশে ১৯৭১ সাল থেকেই ৮
মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সোমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করছে।
এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’।
১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ ৮ মার্চ দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালনের আহ্বান করলে এরপর থেকে সারা বিশ্বব্যাপী
দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এরপর থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালন করা হয়ে থাকে নারী দিবস।
বাংলাদেশে নারীসমাজের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নারী অধিকার রক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ও সমতা সৃষ্টির জন্য দিবসটির গুরুত্ব
অপরিসীম।
আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস-‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’
previous post