ঈদের ঠিক আগের দিনে ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয়ের ফাঁদে পড়েছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন। কোনো ট্রেনই ঠিক সময়ে স্টেশন ছাড়ছে না। স্টেশনে ভিড়ছেও দেরিতে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। নারী ও শিশুদের ভোগান্তির কোনো শেষ নেই।
দিনের প্রথম ট্রেন ধূমকেতু সকাল ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যেও কমলাপুরে এসে পৌঁছায়নি। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ২০ মিনিটে স্টেশন ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়ে সকাল ৭টা ৪০মিনিটে। তিস্তা সকাল সাড়ে ৭টায় স্টেশন ছাড়ার কথা থাকলেও তা ছেড়ে যায় ৮টা ১০ মিনিটে। মহানগর প্রভাতী ৭টা ৪৫মিনিট ছাড়ার কথা থাকলেও ছাড়ে সকাল ৮টা ২৮মিনিটে। মহুয়া এক্সপ্রেস সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত স্টেশনেই দাঁড়িয়ে ছিল।
সকাল ৮টায় কমলাপুর স্টেশন ছাড়ার কথা নীলসাগর এক্সপ্রেসের। কিন্তু নীলসাগর এখনও কমলাপুরে এসে পৌঁছায়নি। এখন এ ট্রেনটির ছাড়ার সম্ভাব্য সময় দেওয়া হয়েছে দুপুর সাড়ে ১২টায়।
নীলসাগর এক্সপ্রেসযোগে চিলাহাটি যাবেন মিতু। তিনি বলেন, সকাল ৮টায় ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলে এখনও ট্রেন কমলাপুরে আসেনি। কখন আসবে জানি না। টিকিট কাটতে ভোগান্তিতে পড়েছিলাম, এবার ট্রেনের অপেক্ষা।
সালেহা বেগম দুই বছর বয়সী শিশুকে নিয়ে আজ গ্রামে যাওয়ার কথা ধুমকেতু ট্রেনযোগে। কিন্তু সকাল ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও এখনও স্টেশনে আসেনি। শিশুটি একটু পর পর কান্না করছে। তিনি বলেন, ট্রেন না আসায় বিপদে আছি। এখানে নেই ভালো কোনো ওয়াশরুম, নেই শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা। এখন ছেলের কান্না থামাবো নাকি অপেক্ষার প্রহর গুনবো।
মহানগর প্রভাতীর অ্যাটেন্ডেন্ট ফয়সাল বলেন, লাইন ক্লিয়ার না থাকায় আমাদের ছাড়তে দেরি হচ্ছে। লাইন ক্লিয়ার হলেই আমরা ট্রেন ছাড়বো।
হাসিবুর নামে মহানগর প্রভাতীর এক যাত্রী বলেন, শুনেছি ঈদযাত্রায় কোনো ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয় নেই। আজ দেখে বোঝা যাচ্ছে ট্রেনের সার্ভিস। আমরা এক প্রকার বিপদে পড়েছি।
ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের বিষয়ে রেলওয়ের স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তীর সঙ্গে মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন মাস্টার মো. সাখাওয়াত জোসেন খান বলেন, ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী থাকায় ধীরগতিতে চলছে। এ কারণে ট্রেন স্টেশনে আসতে ও ছাড়তে একটু দেরি হচ্ছে। তাছাড়া ট্রেনের ছাদেও যাত্রীরা উঠছেন। তাদের কারণেও ধীরগতিতে চলতে হচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন রুটে সব মিলিয়ে ৬৯টি ট্রেন ছাড়ার কথা রয়েছে শুক্রবার। এর মধ্যে ৩২টি ট্রেন আন্তঃনগর, ৫টি স্পেশাল, বাকিগুলো মেইল ট্রেন।
৫টি স্পেশাল ট্রেন সকালে ঢাকা টু মোহনগঞ্জ ও ঢাকা থেকে লালমনিরহাট, রাতে ঢাকা টু রাজশাহী, ঢাকা টু পার্বতীপুর এবং ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ২৪