উদ্বোধনী যাত্রায় বিরতিহীন বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি পৌনে ৫ ঘণ্টায় রাজশাহী থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টায় ট্রেনটি রাজশাহী থেকে যাত্রা শুরু করে। বিকেল সাড়ে ৪টায় এটি কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছায়। আকাশপথের বাইরে যেকোনো মাধ্যমে এটিই এখন রাজশাহী ও ঢাকার মধ্যে চলাচলের দ্রুততম মাধ্যম।
আজ সকালেই ঢাকা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বনলতা এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করেন। এর পরই লাল-সবুজ রঙের সুসজ্জিত ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রাজশাহী স্টেশন ত্যাগ করে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা শরিফুল আলম বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, উদ্বোধনী যাত্রায় যাত্রীদের কাছ থেকে কোনো ভাড়া আদায় করা হয়নি। ৯২৮ আসনের সর্বাধুনিক ট্রেনটিতে প্রায় সব সিটেই যাত্রী ছিলেন। শুভেচ্ছাস্বরূপ দুপুরে সব যাত্রীকে নাস্তা পরিবেশন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন উদ্বোধনী যাত্রায় রাজশাহী থেকে ঢাকায় আসেন। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এমপি ও রেলের মহাপরিচালক কাজী মো. রফিকুল আলম এই যাত্রায় তার সফরসঙ্গী হন।
নতুন এই ব্রডগেজ ট্রেনটির কোচগুলো ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে “বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য মিটারগেজ ও ব্রডগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ” প্রকল্পের আওতায় আমদানি করা কোচগুলো এতে ব্যবহার করা হয়েছে।
নতুন এই কোচগুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- বায়ো টয়লেট সংযোজন। এর ফলে মানববর্জ আর রেললাইনের ওপর পড়বে না। প্রতিবন্ধী যাত্রীদের চলাচলের সুবিধায় রয়েছে প্রশস্ত দরজা ও নির্ধারিত আসন। প্রতিটি কোচ স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি, উচ্চ গতি উপযোগী ও আধুনিক যাত্রী সুবিধাসম্বলিত। তাপানুকূল কোচগুলোতে আধুনিক ও উন্নতমানের রুফ মাউন্টেড এয়ার কন্ডিশনার ইউনিট ও এয়ার কার্টেইন রয়েছে। এছাড়াও ট্রেনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে জার্মানিতে তৈরি আধুনিক এয়ার ব্রেক সিস্টেম, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এলইডি বাতি। সুইং ডোরের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করা হয়েছে স্লাইডিং ডোর।
১২টি কোচ নিয়ে এই ট্রেনটি চলবে। মোট আসন সংখ্যা ৯২৮। এর মধ্যে এসি চেয়ার ১৬০টি ,শোভন চেয়ার ৬৪৪টি, খাবার গাড়িতে আসন ১০৮টি এবং পাওয়ার কারে ১৬টি। এটি শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন চলবে। ট্রেনটি রাজশাহী থেকে সকাল ৭টায় ছেড়ে ঢাকা পৌঁছাবে সকাল ১১.৪০টায় এবং ঢাকা থেকে ছাড়বে বেলা ১.১৫টায় এবং রাজশাহী পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৬টায়। এই ট্রেনের ভাড়া একই রুটে চলমান ট্রেনের ভাড়ার তুলনায় নন-স্টপ সার্ভিস চার্জ ১০% বেশি আরোপিত হবে। এছাড়া এই ট্রেনটিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রথম নিজস্ব ক্যাটারিং এন্ড ট্যুরিজম সার্ভিসেস (বিআরসিটিএস) দ্বারা খাবার সরবরাহ করা হবে। খাবার মূল্য ১৫০ টাকা সহ শোভন চেয়ারের টিকিট ৫২৫ টাকা এবং এসি চেয়ারের টিকিট ৮৭৫ টাকায় পাওয়া যাবে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ THE DAILY STAR