রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ সিনেট ভবন ও পশ্চিম পাড়া শিক্ষকদের আবাসিক এলাকাকে সংরক্ষিত হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর ওই দুই স্থানে বহিরাগত ও শিক্ষার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে সংরক্ষিত এলাকাগুলোতে হরহামেশাই প্রবেশ করছে তারা। ঘটিয়ে চলেছে নানা অপকর্ম। এতে করে পশ্চিম পাড়া ও সিনেট ভবন এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসন কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও অবাধে প্রবেশ করছে বহিরাগতরা। তারা এখানে এসে অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। তাদের বেপরোয়া চলাচলের কারণে আমাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
জানা যায়, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষিত এলাকাগুলো থাকে বহিরাগতদের দখলে। এ সময় তারা বেপরোয়া গতিতে ও জোরে হর্ণ বাজিয়ে মোটরসাইকেল হাকিয়ে বেড়ান। এছাড়া পশ্চিম পাড়া ও সিনেট ভবন এলাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য জায়গার তুলনায় একটু নির্জন হওয়ায় এখানে অনৈতিক কাজকর্ম সংগঠিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, জায়গাগুলোতে ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটছে অহরহ। এতে করে হুমকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে শিক্ষক ও কর্মকার্তা-কর্মচারীদের। ক্যাম্পাসের অন্য জায়গায় মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও আবাসিক এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে না। যার ফলে বহিরাগতদের এসব অপকর্মের মাত্রা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে বলেও ওখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞানার্জনের জায়গা। ক্যাম্পাসের পাশাপাশি শিক্ষকদের আবাসিক এলাকাতেও যে ধরনের অশ্লীল কাজ হয় তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এছাড়া বহিরাগতরা যেভাবে চলাচল করে ছিনতাইয়ের ভয়ে থাকতে হয়। অনেক সময় বাচ্চা নিয়ে চলাচল করতে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় আমাদের। বিশেষ করে রোকেয়া হলের পেছনের অবস্থা খুবই খারাপ। বিশ্ববিদ্যালয় সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সংরক্ষিত এলাকাগুলোতে বহিরাগতরা যেন প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
শিক্ষকদের আবাসিক এলাকায় দায়িত্বরত বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্ড সাইদুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের পরিচয় দিয়ে প্রবেশ করছেন বহিরাগতরা। আবার অনেক সময় শিক্ষার্থীরাই বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করছেন। এছাড়াও রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের পরিচয় দিয়ে অবাধে চলাফেরা করছেন কেউ কেউ। প্রবেশে বাধা দিলে হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে আমাদের। মাঝে মাঝে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক কিছু অভিযান পরিচালিত হলেও তেমন কোনো সুরাহা হয়নি।
এদিকে, গত ২২ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন এলাকায় আপত্তিকর কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ বহিরাগত ৫ প্রেমিক যুগলকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর। এর আগে ১৮ জুলাই একই অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। বহিরাগতদের এমন কর্মকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও থেমে নেই তাদের অপরাধের মাত্রা।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ক্যাম্পাসের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে প্রক্টরিয়াল বডি অভিযান চালিয়ে থাকে। শিক্ষকদের আবাসিক এলাকায় যেন কোনো বহিরাগত প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর