চিনিকলের ফেলে দেয়া প্রেসমাড (গাদ) পক্রিয়াজাত করে বায়ো গ্যাস উদ্ভাবন করছেন রাজশাহীর এক তরুণ উদ্যোক্তা। উৎপাদিত বায়ো গ্যাস পরিশোধনের মাধ্যেমে বাসা-বাড়ির জ্বালানি ও গাড়িতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া গ্যাস উৎপাদনের পর কাচামালের যে উচ্ছিষ্ট থাকছে তা থেকে তৈরী হচ্ছে বায়ো সার। এই সার ব্যবহারে কৃষকদের উৎপাদন খরচ ৬০ ভাগে কমিয়ে আনা সম্ভব, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে দাপ্তরিক জটিলতার কারনে থকমে আছে গ্যাস ও সারের বাজারজাতকরন পক্রিয়া। সরকারী সহযোগীতা পেলে এই বায়ো গ্যাস প্ল্যান্ট তৈরী করে দেশের তরুণরাও নিজ উদ্যোগে স্বাবলম্বী হবার সক্ষমতা রাখে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজশাহী নগরের রাজারহাতা এলাকার চিকিৎসক রফিকুল ইসলামের ছেলে তফিকুল ইসলাম যুক্তরাজ্যতে পড়াশোনার পাশাপশি একটি বায়ো গ্যাস কোম্পানিকে চাকুরি সুযোগ পান। পরে সেখানে থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরে নগরের বসুয়া এলাকায় নিজেই নির্মাণ করেন ইফাত ব্যায়ো সিএনজি প্লান্ট লিমিটেড। যেখানে কাচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে চিনিকলের প্রেসমাড বা আখের রস পরিশোধনের উচ্ছিষ্ট গাদ।
তফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এক টন গোবরে ১৬ থেকে ২২ কিউবিক মিটার গ্যাস উৎপাদন হলেও চিনিকলের প্রেসমাড থেকে উৎপাদন হয় ১৫০ থেকে ২০০ কিউবিক মিটার গ্যাস। এছাড়া এখানকার বায়ো সার রাসায়নিকের চেয়ে অনেক বেশি সাস্রয়ী ও মাটির উর্বরতা বাড়াতেও সক্ষম।’
তিনি বলেন, ‘এই বায়ো গ্যাস ও বায়ো সার উৎপাদন বেশী হওয়ায় খরচও কম হয়। ফলে সাশ্রয়ী মূল্যে তারা এই গ্যাস ও সার বাজারজাত করা সম্ভাব হবে। বাসা বাড়ি ও গাড়িতে এই গ্যাস ব্যবহার করলে ৪০ ভাগ এবং বায়ো সার ব্যবহারে কৃষকদের উৎপাদন খরচ ৬০ ভাগে কমিয়ে আনা সম্ভব।’
ইফাত বায়ো সিএনজি লিমিটেডের প্রধান মার্কেটিং কর্মকর্তা রিয়াদ আহমেদ বলেন, ‘তাদের উৎপাদিত বায়ো গ্যাস বাজারজাতকরনের অনুমোদনের জন্য সকল নিয়ম মেনে বিষ্ফোরক অধিদপ্তরে ধরনা দেয়া হলেও কোন সদুত্তর মিলছেনা। কয়েক দফায় সংশ্লিষ্টার পরিদর্শনও করেছেন। এছাড়াও পরীক্ষামূলকভাবে এই সার ব্যবহারে ভাল ফল পাওয়া গেলেও এটিও আটকে আছে অনুমোদনের অপেক্ষায়। তবে কি কারণে তারা অনুমোদন পাচ্ছে না তা আমাদের জানা নেয়।’
রাজশাহী বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষনা কেন্দ্রের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জামিলুর রহমান, দেশে এই প্রথম চিনিকলের প্রেসমাড থেকে বায়ো গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে। আগে শুধু প্রেসমাড থেকে সার তৈরী করা হতো। এখন তা থেকে গ্যাস ও সার দুটোই হচ্চে। প্রাকৃতিক উপাদানে প্রস্তুতকৃত এই গ্যাস ও সার গোবর থেকে উৎপাদিত গ্যাস ও সারের চেয়ে পরিমানে ও গুণগত মানের দিক থেকে অনেক এগিয়ে। এই বায়ো গ্যাস প্লান্ট অনুমোদনের যোগ্য বলে জানান এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ ডেইলি সানশাইন