তফসিল ঘোষণার আগে ও পরে মাঠে হুংকার ছড়ালেও শেষ পর্যন্ত রাজশাহীতে বিএনপিকেই মাঠ ছেড়ে দিয়েছে জামায়াত। রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঘোষণা দিয়েও মেয়র পদে প্রার্থী দেয়নি স্বাধীনতাবিরোধী এ দলটি। বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ দলটির নেতারা জানান, ২০ দলের সিদ্ধান্ত মেনে তারা ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তবে কৌশলে রাসিকের সবকটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী দিয়েছে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত।
আগামী ৩০ জুলাই হতে যাওয়া রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের তফসিল ঘোষণার আগেই রাজশাহীতে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে মাঠে সক্রিয় হয় জামায়াত। রাজশাহীতে মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি সিদ্দিক হোসেন মেয়র পদে লড়বেন বলে ঘোষণা দেয়া হয়। ব্যানার ফেস্টুনও ঝোলান নগরীর মোড়ে মোড়ে। তফসিল ঘোষণার পর মনোনয়ন উত্তোলন ও জমাও দেয়নি এ দলের কোনো নেতা।
তবে রাজশাহী জামায়াতের নেতারা জানান, তারা ক্ষ্যান্ত দিয়েছেন। গত ১২ মার্চ তাদের ঘোষিত প্রার্থী গ্রেফতারের পর আর মুক্তি পাননি। এ কারণে নগরজুড়ে ‘নাগরিক পরিষদের’ ব্যানারে ব্যাপক প্রচার চললেও সিদ্দিক হোসেনের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরে রাখার মনস্থির করে দলটি।
কারাগারে থেকে অবশ্য ভোট করতে আইনি কোনো বাধা নেই। তবে নানা কারণে রাজনীতিতে বিপর্যস্ত জামায়াত আর নতুন করে এই ধকল নিতে চাইছে না। মনোনয়নপত্র দাখিল ও জমা দেওয়ার শেষ দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির আবু ইউসুফ সেলিম বলেন, ‘২০ দলীয় জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।
‘রাজশাহীতে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে আমরা বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকেই সমর্থন দিচ্ছি বলেও জানান তিনি।
সেলিম বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। প্রার্থী কারাগারে থাকলে তার মনোনয়নপত্র তুলতে আদালতের অনুমতি নিতে হয়। চার-পাঁচ দিন আগে আমরা এই অনুমতিও পেয়েছিলাম। কিন্তু বুধবার রাতে কেন্দ্রের নেতারা এখানে মনোনয়নপত্র না তোলার জন্য নির্দেশনা দিলেন। ফলে আমরা এখানে প্রার্থী দিচ্ছি না।
জামায়াতের এ নেতা দাবি করে বলেন, ‘এখানে আমাদের যথেষ্ট ভোট আছে। মেয়র পদে প্রার্থিতার জন্য আমাদের প্রথম পছন্দই ছিল রাজশাহী। কিন্তু কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বাইরে তো যাওয়া যাচ্ছে না। ফলে আমাদের সরে দাঁড়াতে হলো।
এদিকে মেয়র পদে সরে দাড়ালেও নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রার্থী দেয়া হয়েছে কাউন্সিলর পদে। এমনটি নগরীর সবকটি সংরক্ষিত আসনেও রয়েছে জামায়াতের প্রার্থী। তারা দলীয় পরিচয় গোপনে রেখেই ভোটের মাঠে নেমেছে। জামায়াত নেতারা বিষয়টি ঘোষণা না দিলেও কাউন্সিলর প্রার্থীর তালিকা দেখে তা প্রমাণিত হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, মেয়র পদ ছেড়ে দিলেও কৌশলে তারা কাউন্সিল প্রার্থী দিয়েছেন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। তাদের জয়ের জন্য মাঠে থাকবেন জামায়াত নেতারা।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ ডেইলি সানশাইন