ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে (৯৩ মিনিটে) আর্জেন্টিনার হয়ে ব্যবধান কমানো গোল করেন সের্জিও আগুয়েরো। কিন্তু ততোক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। বাকি সময়ে আর কোন গোল না হওয়ায় ৪-৩ গোলের ব্যবধানে হেরে বিদায় নিলো আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখলো ফ্রান্স। তবে আজকের ম্যাচের নায়ক নিঃসন্দেহে এমবাপ্পে। এই তরুণের কল্যাণে পেনাল্টি থেকে প্রথম গোল পায় ফ্রান্স। আর পরে তার জোড়া গোলে নিশ্চিত হয় মেসিদের বিদায়।
ফরাসিদের জয়ের অন্যতম নায়ক ১৯ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পে। ম্যাচের ৬৪ ও ৬৮ মিনিটে করা দুই গোলে শুধু দল জেতানোই নয়, বরং রেকর্ড বইয়েও নাম লিখিয়েছেন তিনি। মেসি-রোনালদো যুগের পর তাকে কেন ভবিষ্যতের মহাতারকা ভাবা হয় তা তিনি ভালভাবেই বুঝিয়ে দিলেন।
আজকের গোল করার পথে তিনি ষষ্ঠ টিনএজ তারকা হিসেবে এক বিশ্বকাপে একাধিক গোল করলেন। এর আগে এই রেকর্ডে নাম ছিল পেলে (৬, ব্রাজিল), এদমুন্দ কোনেন (৪, জার্মানি), ম্যানুয়েল রোসাস (২, মেক্সিকো), হোসে আলতাফিনি (২, ব্রাজিল) ও মাইকেল ওয়েন (২, ইংল্যান্ড)। তবে এক জায়গায় এমবাপ্পে সবার চেয়ে এগিয়ে। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে মাইকেল ওয়েনের পর একমাত্র এমবাপ্পেই ১৯ বছর বয়সে এই রেকর্ড গড়লেন।
ম্যাচের প্রথম গোলেও ছিল এমবাপ্পের ভূমিকা। ম্যাচের ১৩ মিনিটে আর্জেন্টিনার গোলমুখে ফরাসি এই তারকার দ্রুতগতির দৌড় থামাতে গিয়ে ডি বক্সে ফাউল করেন আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার রোহো। রেফারি রোহোকে হলুদ কার্ড দেখানোর পাশাপাশি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। পেনাল্টি শট নিতে আসেন গ্রিজম্যান। তার নিচু করে মারা পেনাল্টি শট ঠেকাতে ঝাপিয়ে পড়েন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক ফ্রাংকো আরমানি। কিন্তু দিকভ্রান্ত সেই ঝাপ বিফলে যায়। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স।
সমতায় ফিরতে ৪১ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয় আর্জেন্টিনাকে। ফ্রান্সের ডি বক্সের কিছুটা বাইরে থেকে সরাসরি শটে গোল করে আর্জেন্টিনাকে সমতায় ফেরালেন আনহেল ডি মারিয়া। ৪৮ মিনিটে লিওনেল মেসির শট থেকে বল পেয়ে মার্কাদোর দারুণ শট ফরাসি গোলরক্ষক হুগো লোরিসের হাতে লেগে বল জালে ঢুকে যায়। ২-১ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
কিন্তু ম্যাচের আসল নাটক তখনও বাকি। ম্যাচের ৫৭ মিনিটে ফরাসি ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন পাভারের গোলে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সমতায় ফিরে ফ্রান্স। দেশের হয়ে পাভারের এটি প্রথম গোল। লুকাস হার্নান্দেসের ক্রস বা দিকে অনেকটা দূরে দাঁড়ানো পাভারের পায়ে গেলে ডি বক্সের বাইরে থেকে তার জোরালো শট আর্জেন্টিনার জালে ঢুকে যায়। ২-২ গোলে সমতায় ফেরে ফ্রান্স।
এরপরই কিলিয়ান এমবাপ্পের টানা দুই গোলে জয়ের কাছে চলে যায় ফ্রান্স। শেষদিকে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া আর্জেন্টিনার হয়ে সান্ত্বনার গোল করেন আগুয়েরো। কিন্তু তাতে অবশ্য ম্যাচের ফলাফলে প্রভাব পড়েনি। ফলে ৪-৩ গোলে হেরে শেষ ষোল থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় আর্জেন্টিনার।
আজ (৩০ জুন) রাতে আরেক ম্যাচে মুখোমুখি হবে পর্তুগাল-উরুগুয়ে। ৬ জুলাই রাত ৮ টায় নিঝনি নভগোরদ স্টেডিয়ামে এই ম্যাচের জয়ী দলের সঙ্গে লড়বে ফ্রান্স।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ২৪