রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল তার ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন।
নাগরিকদের মৌলিক অধিকার চিকিৎসা, বাসস্থান ও শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে ১৮ দফা প্রতিশ্রুতি দেন তার নির্বাচনী ইশতেহারে। যার ১৮ নম্বর প্রতিশ্রুতি রয়েছে জনগণের ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন অব্যাহত রাখা।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বক্তব্য নগরবাসীর সেবা করার সুযোগ চেয়ে বুলবুল বলেন, ‘জনগণের ভোটের অধিকার আদায়, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, জেল জুলুম সন্ত্রাসের প্রতিবাদ, গণতন্ত্র রক্ষা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।’
তিনি বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ নির্বাচন অতীব গুরুত্বপূর্ণ। দেশের এখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এক দলীয় স্বৈরশাসনের জাতাকলে জনজীবন আজ নিষ্পেষিত। রাজশাহীবাসী এহেন অবস্থার বাইরে নয়। মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশে শ্বাস নেয়ার জন্য সকলে উদগ্রীব হয়ে আছে। এই প্রতিকুল অবস্থায় মহানগরবাসীর বিভিন্ন সমস্যার উন্নয়ন ও প্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকার এবং সরকারের গণতন্ত্র নস্যাতের নীল-নকশাকে প্রতিহত ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসাবে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি।’
তিনি বলেন, গণতন্ত্র রক্ষা ও আধুনিক রাজশাহীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাকে মেয়র পদে নির্বাচিত করা হলে রাজশাহী উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় ও জনকল্যাণে কাজ করতে চাই।
গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ছাড়া কাউকে আটক করা যাবে না সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালা ২০১৬ এর ধারা ৩, ৭ (গ) স্বরণ করিয়ে দিয়ে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, রাজশহীতে বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ নিয়ে নির্বাচন অফিসের অভিযোগ দিয়েও লাভ হচ্ছে না। গণগ্রেপ্তার বন্ধ না করা হলে নির্বাচন আফিস অচল করে দেয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেন বুলবুল।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে তিনি বলেন, রাজশাহী মহানগরবাসীর করের বোঝা লাঘব ও সহজসাধ্য করার জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরলীকরণ প্রক্রিয়ায় নূন্যতম কর নির্দ্ধারণ করা হবে। রাজশাহীতে বন্ধ হওয়া গ্যাস সংযোগ পুনরায় চালু করার জন্য জনগণকে সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তিনি আরও বলেন, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার যেমন চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা বিষয়ে ইতোপূর্বে গৃহীত প্রকল্পের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে যথাযথ উন্নয়ন করা হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে শুধু সনদধারী না হয়ে প্রকৃত অর্থে জ্ঞানী, দক্ষ ও মানবিক গুণের অধিকারী হয়ে দেশপ্রেমিক তথা সুনাগরিক হয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করে সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় মোটিভেশন প্রোগ্রাম চালু করতে চান বুলবুল।
এছাড়াও রাস্তা তৈরী, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, যানজট নিরসনে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, খেলার মাঠ তৈরী, মাদক নিরাময় কেন্দ্র তৈরী, কর্মসংস্থানের জন্য কলখারখানা গড়ে তোলা ও মেগা সিটি গড়ে তোলার জন্য সিটি করপোরেশনের আয়তন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন বুলবুল।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ^র চন্দ্র রায়। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জাল হোসেন তপু, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন প্রমূখ।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ^র চন্দ্র রায় বলেন, ‘তিন সিটি নির্বাচনে প্রি-টেস্ট হিসেবে এ সরকারের অধিনে বিএনপির শেষ নির্বাচন। কারণ নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে নিরপেক্ষ সরকার নিশ্চিত না করে আর কোন নির্বাচনে বিএনপি বা ২০ দল যাবে না।’
এদিকে, সোমবার সকালে নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। গণসংযোগে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য জননেতা মিজানুর রহমান মিনু, উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, তানোর পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান, ১৪নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি আবু তালহা মিলন, সাধারণ সম্পাদক জাকের আলী শান্তি, সংগঠনিক সম্পাদক বরজাহান আলী, জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, ২৪নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা গৌতম, আলাউদ্দিন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান জনি ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবার আলী জ্যাকি ও নাহিন আহম্মেদ প্রমূখ।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ ডেইলি সানশাইন