রাজশাহী জেলা শহর থেকে তানোর উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। উপজেলার প্রধান সড়ক হওয়াই কয়েক লাখ মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে জেলা শহর রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জে। সড়কটি এক সময় এলাকার লাখো মানুষের কাছে স্বপ্নের থাকলেও এখন সবচেয়ে বড় দুভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পবা উপজেলার বায়া থেকে বাগসারার তেঘর মাদ্রাসার মোড় পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা কাপেটিং উঠে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তে পরিণত হয়েছে। একই অবস্থা মুণ্ডুমালা থেকে আমনুরা ৮ কিলোমিটার রাস্তার। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়াই এমন ভাঙা রাস্তায় যানবহন চলাচলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। খুব দ্রত এসব রাস্তা সংস্কার না হলে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে সকল প্রকার যানবহন।
তবে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর(এলজিইডি) তানোর-পবা উপজেলা সহকারী প্রকৌশলীরা এ রাস্তার বিষয়ে সুখবর দিয়ে বলেছেন এবার আশ্বাস নয়, আগামী ৩ মাসের মধ্যে বা জাতীয় সংসদ নির্বাচণের আগেই আমনুরা হতে বায়া পর্যন্ত ভাঙা রাস্তা সংস্কার করে চকচকে করে দেয়া হবে। সে অনুপাতে জরুরিভাবে অফিসিয়াল কাজ শেষ করা জোর চেষ্টা চলছে।
বাগধানী, দুয়ারী রাস্তায় এখন শুধু কোন রকমে বাস চলাচল করলেও অন্য যানবহনগুলো ২০ কিলোমিটার ঘুরে থানা মোহনপুর হয়ে জেলা শহরে প্রবেশ করছে। তাতে করে সময়-খরচ দুটোই বেশি লাগছে।
রাজশাহী থেকে তানোর হয়ে আমনুরা মোট রাস্তার পরিমাণ ৫০ কিলোমিটার। পবা উপজেলা বায়া থেকে বাগসারা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তা ও তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা থেকে আমনুরা ধামধুম পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার রাস্তা অবস্থা একেবারে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। তবে বাগসারা থেকে তানোর-মুণ্ডুমালা প্রায় ২৪ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা ভালোই আছে।
দোয়ারী ও বাগসারার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভাঙাচোরা রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। সে কারণে এ রাস্তায় অনেক যানবহন চলাচল না করে ২০ কিলোমিটার ঘুরে কাশেম বাজার মোহনপুর থানা হয়ে রাজশাহী যাচ্ছে।
এ রাস্তায় প্রতিনিত চলা বাস চালক মনিরুল ইসলাম বলেন, বাগধানী থেকে বায়া পর্যন্ত রাস্তার এমন গর্তে সৃষ্টি হয়েছে যে ১০ কিলোমিটার রাস্তায় ১৫ মিনিটের আদলে সময় লাগে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট তার পরেও বাস চলে হেলে দুলে। আর মুণ্ডুমালা হতে আমনুরা যেতে ভয় হয় যে বাস হয়তো রাস্তাতেই পড়ে থাকবে।
আর এ রাস্তায় যাতায়াত করা যাত্রীরা দুষছেন এলাকার জনপ্রতিনিধিদের। একাধিক যাত্রী জানান, উপজেলার প্রধান সড়কের হাল এমন অথচ জনপ্রতিনিধিরা কিছুই করেন না। তারা হবে হবে বলে বছর এমন কি যুগ পার করে দিয়েছে। তবুও রাস্তা সংস্কার হয়না।
তানোর উপজেলার কৃষনপুর গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন জানান, বাগধানী থেকে বায়া পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তা যে অবস্থা এ ১০ কিলো রাস্তার জন্য ট্রাকে ঢাকায় মাছ বিক্রি করতে যাওয়ার জন্য ট্রাক ভাড়া গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ। তবু ভাঙ্গা রাস্তা মাছের ট্রাক নেয়ার সময় ট্রাকে মাছের দেয়া পানি ঝাকুনি খেয়ে পরে যাচ্ছে মাছও মরে যাচ্ছে। তাই খুব দ্রত এ রাস্তা সংস্কারে দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীন সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) পবা উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, বায়া থেকে বাগধানী পর্যন্ত ভাঙা রাস্তা ১০ কিলোমিটার চলতি বছরেই সংস্কার করা হবে। ইতি মধ্যে প্রায় ২ দশমিক ৬০০ মিটার বা আড়াই কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার করা হয়েছে। বাকি রাস্তাগুলো সংস্কারের অর্ডার হয়ে গেছে কিছু দিনের মধ্যে ঠিকাদার কাজ শুরু করবে।
স্থানীন সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর(এলজিইডি) তানোর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মুণ্ডুমালা হতে আমনুরা ধামধুম ৭ কিলোমিটার রাস্তা শুধু সংস্কারই নয়,রাস্তার দুই পাশে তিন ফিট করে সম্প্রাসরণ ও করা হবে। ইতি মধ্যে এ রাস্তার জন্য প্রায় ৬ কোটির বেশি টাকার টেন্ডার আহব্বান করা হয়েছে। এছাড়াও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই তানোর উপজেলায় অনেক রাস্তার কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ ডেইলি সানশাইন