রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক এমপি তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুক ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন তিনি। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় শহীদ এইচএম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়ামে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে স্থানীয় কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর উপশহর এলাকার বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুক। এরপর দ্রুত তাকে রামেক হাসপাতালে নেন স্বজনরা। সেখানে কিছুক্ষণ পরই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
শুক্রবার তাজুল ইসলামের জানাজায় অংশ নিয়ে রাজশাহী সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমি যখন থেকে রাজনীতি শুরু করেছি, তখন থেকে তাজুল ইসলমাকে দেখে আসছি। নানা সুখে-দুঃখে আমরা একসঙ্গে পথ চলেছি।
জানাজার নামাজে অংশ নেন তাজুল ইসলামের ভাই বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ, বড় ছেলে বদরুল ইসলাম তাপস, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অন্যতম সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, সাবেক এমপি রায়হানুল হক, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ ও মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার প্রমুখ।
এর আগে তাজুল ইসলামের মরদেহে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে কাউন্সিলররা ও রাজশাহী মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়।
তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুক ১৯৯১ সালে রাজশাহী-৫ আসনের এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে তিনি এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন কিনেছিলেন। কিন্তু তিনি মনোনয়ন পাননি। নৌকা না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত হননি।
পেশায় আইনজীবী তাজুল ফারুকের রাজনৈতিক জীবনের সূচনা ঘটে ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। তিনি ১৯৬৬ সালে পাবনার ঈশ্বরদী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ১৯৬৮ সালে রাজশাহী কলেজে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসেন। ১৯৬৯ এর দূর্বার গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
তাজুল ফারুক ১৯৭৪ সালে মূল সংগঠন আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্বে আসেন। তিনি ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত রাজশাহীর দুর্গাপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলের দুঃসময়ে কাজ করেন। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯০ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সমর্থনের দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরের বছরই এমপি নির্বাচিত হন। এরই মধ্যে তিনি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা ১৯৯২ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর পরের বছরই সভাপতি নির্বাচিত হন।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ জাগোনিউজ২৪