রাজশাহী নগরীর মালোপাড়ায় অবস্থিত ভূবন মোহন পার্কটির ইতিহাস বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে জড়িত। এই পার্কে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পর্যন্ত পদধুলি দিয়ে গেছেন। উত্তর অঞ্চলের মানুষের মাঝে স্বাধীনতা ও দেশপ্রমের চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করতে তৎকালীন স্বাধীনতাকামী নেতৃবৃন্দ স্থানটিতে এসে সভা-সমাবেশ করে গেছেন। সেই গৌরবের ইতিহাস ধরে রাখতে রাজশাহী সিটি করপোরেশন শহীদ মিনার স্থাপন করেছে। তবে শহীদদের জন্য নির্মিত সেই বেদী আজ অবহেলীত; স্বাধীন বাংলার জনসাধারণের দারাই পদদলিত। কদর শুধু বিশেষ দিবসগুলোতেই।
সরেজমিনে নগরীর ভূবন মোহন পার্ক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে দেখা যায়, শহীদদের জন্য নির্মিত বিশাল বেদীর ওপর মরা পাতা আর ধুলা-বালি জমে রয়েছে। আর তার ওপর বিভিন্ন বয়সের মানুষ জুতা পায়ে চরে বেড়াচ্ছে। শীতের সকালের মিষ্টি রোদ উপভোগ করছে, অধিকাংশেরই হাতে রয়েছে মাদক (সিগারেট)। এদের মধ্যে অনেকেই বেদীর পেছনে দাড়িয়ে পোরছাব করছে।
বেদীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম পরে জুতে পায়ে সিগারেট হাতে দাড়িয়ে থাকা এক যুবকের সাথে কথা হলে সে জানায়, সে বাংলাদেশ পরিটেকনিকের শিক্ষার্থী। এখানে এসেছে সময় পার করতে। বেদীতে জুতো পায়ে দাড়িয়ে থাকা উচিত কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে সে তাৎখনিক বেদী থেকে নেমে গিয়ে সরি বলে চরে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সন্ধ্যার পর এই শহীদ মিনারে বসে মাদক সেবীদের আড্ড। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বেদীর চারপাশ ঘুরে বেশকিছু ফেন্সিডিলের বোতলো চোখে পড়লো।
এদিকে স্থানটি পার্ক হিসেবে পরিচিত হলেও এর মধ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে গণসৌচাগার। হার্ডওয়ার পট্টি, স্যান্ডেল পট্টি ও স্বর্ণকার পট্টিসহ আশপাশের সকল ব্যবসায়ীরাই এই সৌচাগারটি ব্যবহার করছে। আর সেই সৌচাগারের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক এই পার্কটি জুড়ে। আবার এই পার্কের মধ্যেই গড়ে উঠেছে দোকানপাট। খোঁজ নিয়ে জানাজায়, স্থানটিতে খোদ রাজশাহী সিটি করপোরেশন’ই গণসৌচাগারটি অর্থের বিনিময়ে লিজ দিয়েছে।
রাজশাহীর বিভিন্ন মহলের দাবী, দ্রুত সময়ের মধ্যে পার্কটির পাশাপাশি শহীদ মিনারটি সংরক্ষণ করে ঐতিহাসিক এই স্থানটির যথাযথ মর্যাদা প্রদান করা হোক।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ ডেইলি সানশাইন