ফুলের নাম এলামন্ডা। শুধু এ নামেই ফুলটি পরিচিত নয়। ভিন্ন ভিন্ন নাম আছে তার। ফুলটি দেখতে মাইকের মত বলে দেশের বিভিন্ন এলাকার লোকজন ‘মাইক ফুল’ বলেও থাকেন। ঘন্টা ফুল, কেউ কেউ কলকি বা কলকে ফুল নামে চেনে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনেক ফুলেরই নতুন নামকরণ করেছিলেন। তিনি এই ফুলের নাম দিয়েছিলেন ‘অলকানন্দা ফুল’। এই ফুল কয়েক রঙের হয়ে থাকে। লতা টাইপের গাছে প্রচুর পরিমানে ফুল আসে বলে বাগানবিলাসী মানুষদের কাছে বেশ পছন্দের হয়ে উঠেছে ফুলটি।
রাজশাহী মহানগরী উপশহর এলাকার রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক উপাধ্যক্ষ ও বর্তমানে দি নর্থ পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আমিনুর রহমান চৌধুরীর বাড়িতে শোভা পাচ্ছে এলামন্ডা ফুল। উপশহর মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা দিয়ে অল্প পূর্বে এগিয়ে গেলেই দেখা মিলবে বাড়িটির। লতা দিয়ে বাড়ির দোতলার বেলকনিতে উঠে গেছে ফুলের গাছটি। বেলকনির একটি পাশে শোভা পাচ্ছে অসংখ্য এলামন্ডা ফুল। বাড়িটির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় পথচারীরা মুগ্ধ দৃষ্টিতে বাড়িটির দিকে তাকিয়ে থাকে।
এলামন্ডা ফুলের আদি নিবাস ব্রাজিল। গুল্ম জাতীয় পত্র ঝরা ফুল গাছ । শীতে গাছের সমস্ত পাতা ঝরে যায় ও বসন্তের শেষে গাছে নতুন পাতা গজায় এবং তারই সাথে গাছে ফুল কলির আগমন ঘটে। পাতার রঙ গাঢ় সবুজ। নমনীয় কোমল পাপড়ি পাঁচটি এবং ফুল গন্ধহীন। গ্রীষ্মের শুরুতে গাছে ফুল ফোটে এবং এর ফুল ফোটার ব্যপ্তিকাল হেমন্তকাল সময় জুড়ে। তবে বর্ষা ঋতুতে গাছে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ফুল ধরে। ফুল শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে একই সাথে দুই থেকে পাঁচটি পর্যন্ত ফুটতে দেখা যায়। টবেও চাষ করা যায়। বীজ ও ডাল কাটিং এর মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার করা যায়। এলামন্ডার ভেষজ গুণাগুণ রয়েছে। ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ফুলটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
দি নর্থ পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আমিনুর রহমান চৌধুরী জানান, এসব তিনি দেখার সময় পান না। ফুলের গাছ লাগানো থেকে শুরু করে পরিচর্যা করে থাকেন তার স্ত্রী শাহিন আক্তার। বাড়িতে গাছ লাগানো তার সখ। বাড়ির ছাদে প্রচুর গাছ আছে। বাড়ির কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি এসব পরিচর্যা করেন।
অধ্যক্ষ আমিনুর রহমান চৌধুরী গাছ পাগল তার স্ত্রী শাহিন আক্তারের বিষয়ে বলেন, গাছগুলো তার কাছে সন্তানের মতো। একবেলা ভাত না খেলেও তার চলবে। কিন্তু তার বাগানের গাছের পরিচর্যা না করতে পারলে তিনি শান্তিতে থাকেন না।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine