কখনও রোদ, কখনও মেঘ! রোদ-মেঘের এই লুকোচুরি খেলার মাঝে রাজশাহী মহানগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোয় মানুষের ঢল নেমেছে।
বুধবার (০৫ জুন) পূবের সূর্য পশ্চিমে ঢলতেই মহানগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পরিবার-পরিজন কিংবা প্রিয়জন নিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।
মহানগরীর শহীদ জিয়া শিশুপার্ক, বড়কুঠি পদ্মার পাড়, একটু দূরেই থাকা সীমান্ত অবকাশ, সীমান্তে নোঙর, শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা এবং ভদ্রা শিশুপার্কসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়ছে।
ঈদুল ফিতরের ছুটিতে রাজশাহীর বাইরে থেকে আসা মানুষও দীর্ঘদিন পর বিনোদনকেন্দ্রে আনন্দ উপভোগ করতে আসছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে।
সবচেয়ে বেশি ভিড় জিয়া শিশু পার্কে। সেখানে শিশুদের সঙ্গে যেন বড়রাও শিশু হয়ে গেছেন। ঈদের দিনে শহরের এই বিনোদন কেন্দ্রে সবাই মিলেমিশে একাকার হয়ে যেন নিংড়ে তুলে নিচ্ছেন নিজেদের পেছনে ফেলে আসা পরমানন্দ।
ঈদের ছুটির প্রভাবে আজ অনেকটাই পাল্টে গেছে যানবাহনে ঠাসা আর কোলাহলে ভরা এই ছোট্ট রাজশাহী মহানগরীর চেহারা। সকালে ঈদ জামাতের পর থেকে কখনও রোদ, কখনও মেঘ। তাই বিকেলেই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন বিনোদন পিপাসুরা।
আবহাওয়া যাই হোক না বিনোদন পিপাসুদের কোনোভাবেই চার দেয়ালের মাঝে আটকানো যায়নি। ঈদের আনন্দ উপভোগের করতে একযোগে বেরিয়ে পড়েছেন। তবে রিকশার শহরে আজ বেড়ানোর অন্যতম বাহন রিকশার কদর তুঙ্গে, ভাড়াও বেশি।
মৌসুমি রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে বিনোদনকেন্দ্রমুখী মানুষের কাছ থেকে দ্বিগুণেরও বেশি ভাড়া হাঁকাচ্ছেন। এতে বেকায়দায় পড়ছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। আর উটকো যানবাহনের কারণে শহীদ জিয়া শিশু পার্কসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টেই যানজট দেখা গেছে।
পাঁচ বছরের ছোট্ট মেয়ে রুচিকাকে নিয়ে জিয়া শিশু পার্কে আসা সুলতানাবাদ এলাকার মাহফুজ আহমেদ বলেন, রাজশাহী শহরের জ্যামও এখন ঢাকার মতোই বাড়ছে। এই কারণে তার একমাত্র মেয়েকে নিয়ে সাধারণত কোথাও যাওয়াই হয় না।
আজ ঈদ। সকাল থেকে বের হতে চাচ্ছিল মেয়ে। রাস্তাঘাটে তেমন ভিড়ও নেই বলা যায়, অনেকটা ফাঁকা আর পরিবেশটাও দারুণ। তাই সুযোগটা নিয়েছেন। বিকেলে শিশু পার্কে এসেছেন। মেয়ে তার পছন্দ মতো বিভিন্ন রাইডে চড়তে চাইছে। তাকে সেই সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। একমাত্র মেয়ের আনন্দই তাদের ভালো লাগছে জানান মাহফুজ।
শিশু পার্কে বেড়াতে আসা দর্শনার্থী রাজিবুল ইসলাম বলেন, উৎসবের দিনগুলো ছাড়া বিনোদনগুলোতে সাধারণত আসা সম্ভব হয় না। ঈদের ছুটি পেয়ে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। যান্ত্রিক জীবন ছেড়ে খোলামেলা সবুজ পরিবেশে এসে ভালোই লাগছে।
আশরাফুল আলম নামের আরেক দর্শনার্থী বলেন, তার সাত বছরের মেয়ে তানজিলা খেই ধরেছে এখানে আসবে। সকাল থেকে অতিথি আপ্যায়নসহ নানান ব্যস্ততা শেষে মেয়েকে নিয়ে শিশু পার্কে এসেছেন। এতে মেয়র খুশি আর ধরছে না। মেয়ের খুশিতে তিনিও আনন্দিত। মেয়ের সঙ্গে তিনিও বিভিন্ন রাইড উপভোগ করছেন বলেও জানান।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর