রাজশাহীতে নিয়ম অমান্য করে বিদ্যুতের পোল জুড়ে অন্যান্য তারের জটলায় বাড়ছে ঝুঁকি, নষ্ট হচ্ছে শহরের সৌন্দর্য। মাঝে মধ্যেই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। অপরিকল্পিত ভাবে পোলের সাথে রাখা এই তারগুলোর কারণে হওয়া সটসার্কিটের ফলে বিভিন্ন এলাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুত বিহীন থাকছে। আর এ বিষয়ে নীতিমালা না থাকায় কোন পদক্ষেপ নিতে পারছে না বিদ্যুত সেবা নিশ্চিতকারী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিনে নগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট, আলু পট্টি মোড়, রাণি বাজার, লক্ষ্মিপুর মোড়, কোর্ট চত্ত্বরসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকার মোড়গুলো ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি পোলেই বিদ্যুতের তারের চাইতে বেশি অন্যান্য তারের জটলা। এই তারগুলোর বড় অংশ ডিস লাইন ও ইন্টারনেট লাইনের। এভাবে এলামেলো করে এক পোল থেকে অন্য পোলে তার বিছিয়ে শহর জুড়ে বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। কোন কোন পোলে তারগুলোর বর্ধিত অংশ গোল করে পেচিয়ে রাখা হয়েছে। আবার কোন কোন পোলে লাগান হয়েছে টিনের বক্স। সেগুলোতে অবৈধ ভাবে পোল থেকে বিদ্যুত নিয়ে দেয়া হয়েছে বিদ্যুতের সংযোগ।
এদিকে এই তারগুলোর থেকে মাঝে মধ্যেই সটসার্কিট হচ্ছে। অনেক সময় ট্রান্সফরমারের সাথে লেগে ট্রান্সফরমারে আগুর ধরছে। নষ্ট হচ্ছে রাষ্ট্রীয় যন্ত্র। আবার অনেক ক্ষেত্রে এই আগুন আশপাশের বাড়ি বা দোকানে ছড়িয়ে পড়ছে। এমন দুর্ঘটনা অন্যান্য সময়ের পাশাপাশি বর্ষা ও গ্রীষ্মকালে বেশি ঘটছে। এতে করে একদিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় যন্ত্রাংশ তেমনি দুর্ভোগ ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে গ্রহক ও পথচারী।
নিউমার্কেট এলাকার বাসিন্দা রাকিব অভিযোগ করে বলেন, গেল বর্ষায় পোলে থাকা ট্রান্সফরমারের আগুনে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়। দমকল বাহিনীর সদস্যরা এসে সেই আগুন নিভায়। পরে তারা জানায় পোলে থাকা ডিস ও ইন্টারনেটের তার থেকেই এই আগুনের সৃষ্টি। তিনি আরো জানান এভাবে তারাগুলোর কারণে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। আর পোলে তারের এমন অব্যবস্থাপনার কারণে আসছে বর্ষায় দুর্ঘটনা ও দুর্ভোগ আরো বাড়তে পারে। একই অভিযোগ করে লক্ষ্মিপুর এলাকার ব্যবসায়ী ফয়সাল হাবিব বলেন, এভাবে চলতে থাকলে নগরীর প্রতিটি বিদ্যুতের পোল এক একটি মরণ ফাঁদে পরিণত হবে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে রাজশাহীর নেসকো’র সার্কেল-১ এর পরিচালনা ও পর্যবেক্ষণ বিভাগের প্রকৌশলী ইঞ্জি: শিরিন ইয়াসমিন বলেন, এভানে অপরিকল্পিত ভাবে বিদ্যুতের তারের সাথে অন্যান্য সার্ভিস প্রোভাইডারদের কেবলের কারণে একদিকে যেমন আমাদের গ্রহকরা নিরবিচ্ছিন্ন সেবা পাচ্ছে না। তেমনি এসবের কারণে পথচারীদের ঝুঁকি বাড়ছে ও রাষ্ট্রায়ত্ব যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। আমরা মনে করি এবিষয়ে একটি নীতিমালা প্রয়োজন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে এবিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আমি আশা করি।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এই তারগুলোর কারণে একদিকে যেমন ঝুঁকি বাড়ছে, ঘটছে দুর্ঘটনা তেমনি নগরীর সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। তবে এই তারের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষরাও নাগরীকদের বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে। তাই সকল দিক বিবেচনায় খুব শিঘ্রই তারগুলো মাটির তলে অর্থাত আন্ডার গ্রাউন্ড করার ব্যবস্থা করা হবে। এ নিয়ে আমরা ইতি মধ্যেই বিভিন্ন মহলের সাথে কথা বলতে শুরু করেছি।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine