এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় রাজশাহী বোর্ডে সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছে রাজশাহী জেলা। টানা বোর্ডে শীর্ষ থাকা বগুড়া জেলাকে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠে এসেছে রাজশাহী। বুধবার দুপুরে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. আনারুল হক প্রামাণিক আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন।
বোর্ডের সার্বিক ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রাজশাহী বিভাগের আট জেলার মধ্যে পাসের হারে শীর্ষে উঠে এসেছে রাজশাহী জেলা। জেলার মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ২৯ হাজার ৬৪২ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২৪ হাজার ৫২৬ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ১২৪ জন। পাসের হার ৮২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
এর মধ্যে ৭৯ দশমিক ২৭ শতাংশ ছেলে এবং ৮৭ দশমিক ১৯ শতাংশ মেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে এ জেলায়। গত বছর রাজশাহীতে পরীক্ষার্থী ছিল ২৪ হাজার ২৮৪ জন। ৭১ দশমিক ২০ শতাংশ হারে উত্তীর্ণ হয় ১৭ হাজার ২৮৯ জন শিক্ষার্থী। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল এক হাজার ৬৮৮ জন।
এবার বোর্ডে দ্বিতীয় অবস্থানে বগুড়া জেলা। এখানকার পাশের হার ৮১ দশমিক ১৮ শতাংশ। এ জেলার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২৬ হাজার ১৭৮ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২১ হাজার ২৫০ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৪৩৭ জন। এখানকার ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ ছেলে এবং ৮৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ মেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। গত বছর ২৬ হাজার ৯৫৮ জন অংশ নিয়ে পাস করেছিল ১৮ হাজার ৮২১ জন। পাসের হার ছিল ৬৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। সেইবার জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ১৫১ জন।
গতবারের মতো এবারো বোর্ডে তৃতীয় অবস্থানে নাটোর জেলা। এই জেলায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১২ হাজার ৭৮৮ জন। ৭৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ হারে পাস করেছে ৯ হাজার ৮০৩ জন। নাটোরে ৭২ দশমিক ৯০ শতাংশ ছেলে এবং ৮১ দশমিক ০১ শতাংশ মেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৮৪ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১৬৯ জন। গতবার ১২ হাজার ৪৭৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয় ৮ হাজার ৫৩১ জন। পাসের হার ছিল ৬৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
গতবছর বোর্ডে সপ্তম অবস্থানে ছিল সিরাজগঞ্জ জেলা। এবার উঠে এসেছে চারে। এই জেলায় মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ২৫ হাজার ৩৩০ জন। ৭৪ দশমিক ৬৩ হারে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৮ হাজার ৯০৫ জন। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ২৯ শতাংশ ছেলে এবং ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ মেয়ে। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৪৬ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩৫৮ জন। সেইবার ২৪ হাজার ৬৬৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৭৭ শতাংশ হারে উত্তীর্ণ হয় ১৫ হাজার ৪৮৩ জন।
এক ধাপ নিচে নেমে এবার বোর্ডে পঞ্চম অবস্থানে পাবনা জেলা। এই জেলায় ২০ হাজার ৬৪৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৫ হাজার ৩২১ জন। পাসের হার ৭৪ দশমিক ২২ শতাংশ। এর মধ্যে ৬৯ দশমিক ১৩ শতাংশ ছেলে এবং ৮৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ মেয়ে। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৪২ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৪২০ জন। সেইবার ১৮ হাজার ৬৫৬ জন পরীক্ষার্থী ছিল এ জেলায়। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ১২ হাজার ৪২৪ জন।
ফলাফলে একধাপ নিচে নেমেছে জয়পুরহাট জেলাও। পঞ্চম থেকে এবার বোর্ডে এই জেলার অবস্থান ষষ্ঠ। এই জেলার পাসের হার ৭২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গতবার এই হার ছিল ৬৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এ বছর ৭ হাজার ৪৩ জন অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ৫ হাজার ১১৬ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০৯ জন। এবার ৪৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ ছেলে এবং ৮০ দশমিক ৯৮ শতাংশ মেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। গত বছর জয়পুরহাটে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৬ হাজার ৩১০ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ৪ হাজার ৮১ জন। সেইবার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১১১ জন।
গতবারের ষষ্ঠ অবস্থান হারিয়ে এবার সপ্তমে নওগাঁ জেলা। এখানে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ হাজার ৯১১ জন। ৬৯ দশমিক ০৭ শতাংশ হারে উত্তীর্ণ হয়েছে ১০ হাজার ২৯৯ জন। এর মধ্যে ৬৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ ছেলে এবং ৭৬ দশমিক ২৭ শতাংশ মেয়ে। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫২ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১৪৩ জন। সেইবার ১৩ হাজার ৭৯৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ৮ হাজার ৬৯৬ জন। পাসের হার ছিল ৬৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
ফলাফলে এবার বোর্ডের তলানিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। এ জেলায় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এখানে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১২ হাজার ১৩৭ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৮ হাজার ৩৩০ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৩৫ জন। ৬৪ দশমিক ৪০ শতাংশ ছেলে এবং ৭৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ মেয়ে পাস করেছে এই জেলায়। গতবছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১২ হাজার ১৮৫ জন। সেইবার ৬০ দশমিক ৩১ শতাংশ হারে ৭ হাজার ৩৪৯ জন পাস করে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৮ জন।
এবার বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল এক লাখ ৫১ হাজার ১৩৪ জন। এর মধ্যে পাস করেছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৫০ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ৭২৯ জন। এ বছর ৮১ দশমিক ২১ শতাংশ মেয়ে এবং ৭২ দশমিক ৩২ শতাংশ ছেলে পাস করেছে। ফলাফল সন্তোষজনক বলে জানিয়েছে শিক্ষাবোর্ড।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ জাগোনিউজ২৪