দায়িত্বে গাফিলতির কারণেই রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার হলিদাগাছির দীঘলকান্দি গ্রামে তেলবাহী আটটি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয় বলে জানিয়েছে ওই ঘটনায় গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের একজন বিভাগীয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে তাকে অন্যত্র বদলিও করা হয়েছে। একই ঘটনায় সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে একজন সহকারী প্রকৌশলীকেও।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) খোন্দকার শহীদুল ইসলাম এ তথ্য জানান। পাবলিক সার্ভিস দিবস উপলক্ষে দুপুরে নিজ কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
মতবিনিময়কালে খোন্দকার শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এরই মধ্যে গঠিত তদন্ত কমিটির ওই প্রতিবেদন রেলওয়ে মহাপরিচালকের দফতরে পাঠানো হয়েছে। এখন সেখান থেকে পরবর্তী যে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হবে সেই অনুযায়ী কাজ করা হবে।
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী মৃণাল কান্তি বণিক, প্রধান সংকেত প্রকৌশলী অসিম কুমার তালুকদার, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মাসুদুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১০ জুলাই চারঘাটের দীঘলকান্দিতে তেলবাহী ট্রেনের আটটি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়। এতে প্রায় ২৮ ঘণ্টা রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে আবদুর রশিদ নামে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের একজন সহকারী প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
দীঘলকান্দি এলাকায় একটি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। ওই সড়কটির সংস্কার কাজ চলছিল। এতে রেললাইনেও কিছু কাজ করতে হয়।
কাজটি করেছিলেন রেলের কর্মীরা। কাজ শেষে স্লিপারের সঙ্গে লাইন আটকানো কয়েকটি পিন তারা লাগাননি। ফলে প্রায় ২৮ টন ওজনের ৩১টি ওয়াগনের ওই তেলবাহী ওয়াগন ট্রেনটি সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় ঘটে দুর্ঘটনা।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহীদুল ইসলাম আরও জানান, ট্রেন লাইনচ্যুতির ওই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সে কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, রেলের কয়েকজন কর্মী, ম্যাট ও প্রকৌশলীর গাফিলতির জন্য দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। তাই ওই বিভাগের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন একজন সহকারী প্রকৌশলীও। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে গত ১১ জুলাই রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার হলিদাগাছিতে ফার্নেস অয়েলবাহী আটটি ট্যাংকার ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়।
পরে আটটি ওয়াগন তুলতে সক্ষম হয় উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেন। লাইনচ্যুত হওয়ার ২৮ ঘণ্টা পর আবার সচল হয় রাজশাহী-ঢাকা রেলপথ।
তবে এ দুর্ঘটনার কারণে পুরো পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সিডিউল ভেঙে পড়ে। এটি স্বাভাবিক হতে প্রায় এক সপ্তাহ সময় লেগে যায়।
এদিকে, রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আবদুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে সঠিক সময়েই পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সব আন্তঃনগর, লোকাল/মেইল ও শাটল ট্রেন চলছে। তবে মাঝে-মধ্যে সকালের সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের নির্ধারিত যাত্রায় বিলম্ব ঘটছে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর