ঈদকে সামনে রেখে রাজশাহীতে জমে উঠেছে পশু হাট। রাজশাহী মহানগরীর সিটি হাটসহ বিভিন্ন উপজেলার হাটগুলো জমে উঠেছে ক্রেতা সমাগমে। ঈদ কাছে চলে আসায় হাটগুলোতে বাইরের পাইকারের উপস্থিতি কমে গেছে। এখন কোরবানীর পশু নেয়ার জন্য ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছে। রাজশাহী মহানগরীর সিটি বাইপাস হাটে জমে উঠেছে পশু হাট। ঈদ কাছে চলে আসায় এ ক্রেতারা ছুটছে হাটে।
রাজশাহী প্রাণী সম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় কোরবানীর চাহিদা রয়েছে চারলাখ সাড়ে ৪ হাজার পশুর। জেলার নয় উপজেলায় ছোট বড় মিলে প্রায় সতের হাজার সাতশটি খামার রয়েছে। গতবার জেলায় পশু জবেহ হয়েছিল তিন লাখ ৯৬ হাজার ৫১৯টি। যার মধ্যে গাভী ও বকনা দুই হাজার ৯৮১টি, ষাড় ও বলদ ৭১ হাজার ২৫৬টি, মহিষ ৭৪৫টি, ছাগল তিন লাখ ১৭ হাজার ৬৯৪টি ও ভেড়া তিন হাজার ৮৪৩টি।
এখন পর্যন্ত খামার ও গৃহস্থ ঘরে কোরবানীর জন্য সম্ভাব্য মজুত রয়েছে তিন লাখ ৬৯ হাজার ৫৭৪টি। যার মধ্যে গাভী ও বকনা ছয় হাজার ১৮টি, ষাড় ও বলদ ৭১ হাজার ৮৩১টি, মহিষ দুই হাজার ৬৭৫টি, ছাগল দুই লাখ ৭৪ হাজার ৭৫টি ও ভেড়া ১৩ হাজার ৬৭৫ টি এবং অন্যান্য এক হাজার ১৩৬টি। প্রাণি সম্পদ অফিস থেকে প্রতিবছর ২শতাংশ বৃদ্ধি ধরে সম্ভাব্য চাহিদা নিরুপন করা হয়। এতে আগামী ঈদে ৩৪ হাজার ৮৭৫টি পশুর ঘাটতি রয়েছে। তবে ভারতীয় গরুর হাটে প্রচুর। সে কারণে ঘাটতি পেরিয়ে এখন হাটে পশুর আমদানী অনেক।
বাঘা উপজেলায় অবস্থিত দু’টি পশু হাট। এই হাটে যে সমস্ত এলাকা থেকে গরু আমদানী করা হচ্ছে তার মধ্যে গুরুত্ব বহন করে চলেছে উপজেলার সীমান্তবর্তী বির্স্তীর্ণ পদ্মার চরাঞ্চল এলাকা। সেখানে প্রত্যেক বাড়িতে রয়েছে ২ থেকে ৪টি করে গরু। বর্তমানে এ সকল গরু-সহ সমতল এলাকায় পালিত হাজার-হাজার গরু স্থানীয় চাহিদা পুরনের পাশা-পাশি রপ্তানী করা হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়।
স্থানীয় লোকজন জানান, ঈদের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ব্যস্ততা বাড়ছে ব্যবসায়ীদের। তারা বলছেন, প্রতিবছর ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে রাজশাহীর বাঘা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করতো ভারতীয় গরু। কিন্তু এবার তার প্রয়োজন হবে না। কারণ বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে এবার দেশি গরু আমদানি বেশি রয়েছে। বিশেষ করে অত্র এলাকার বানেশ্বর, রুস্তমপুর এবং চন্ডিপুরের হাটে পশু আমদানি চোখে পড়ার মতো।
অত্র এলাকার গরু ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান ও মিলন হোসেন জানান, রাজশাহী, নাটোর ও পাবনা’র একটি অংশ নিয়ে সপ্তাহ জুড়ে এই অঞ্চলে গরুর হাট বসে। এর মধ্যে রাজশাহীর সিটি হাটসহ পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরের হাট বসে প্রতি শনিবার, বাঘার রুস্তমপুরে বুধবার এবং চন্ডিপুরে হাট বসে শুক্রবার। অপর দিকে নাটোর জেলার তেবাড়িতে হাট বসে প্রতি রবিবার ও গোপাল পুরে সোমবার। এ ছাড়াও পাবনার অরণ কোলায় হাট বসে প্রতি শুক্র ও মঙ্গলবার।
সরেজমিন বুধবার বাঘার রুস্তমপুর ও শুক্রবার চন্ডিপুর গরুহাট ঘুরে দেখা গেছে, বেচা-বিক্রি ভালই জমে উঠেছে। সকাল থেকে গরু ছাগল আসতে শুরু করছে হাটে। এরপর একটানা ৬টা পর্যন্ত চলছে অসংখ্য গরু-ছাগলের আমদানি ও বেচা-বিক্রি।
বিক্রেতারা বলছেন , এবার স্থানীয় চাহিদা পুরন করছে বাঘা উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে পোষা দেশী গরু।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine