শিক্ষা নগরী হিসেবে পরিচিত রাজশাহীতে এবার দুটি বঙ্গবন্ধুর মূর্যাল স্থাপন করা হচ্ছে। এরমধ্যে রাজশাহী কলেজে একটি ও অপরটি নির্মিত হচ্ছে নগরীর লক্ষীপুর মোড়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে।
রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী এবং কলেজ সংলগ্ন সড়কের পথচারীদের অনেকেই এখন থমকে যাচ্ছেন। দাঁড়িয়ে মনোযোগ দিয়ে কলেজের প্রশাসন ভবনের সামনে নির্মিতব্য একটি বিশাল আকৃতির মূর্যাল দেখছেন। কারণ এখানেই নির্মিত হচ্ছে বিশাল আকৃতির বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ম্যুরাল।
কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ম্যুরালটি বাংলাদেশের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় আবক্ষ ম্যুরাল। বর্তমানে নির্মিত ম্যুরালের প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আর বাকি ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হতে সময় লাগতে পারে আরও সপ্তাহ খানিক। তারপরেই উদ্বোধন করা হবে ম্যুরালটি।
রাজশাহী কলেজ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দিতে এই আবক্ষ ম্যুরালটি তৈরি করছে রাজশাহী কলেজ কর্তৃপক্ষ। জাতিসত্তার ভাষা আন্দোলন ও দেশের প্রথম শহিদ মিনার রাজশাহীতে হয়েছে। বর্তমান ও আগামি প্রজন্ম বই পড়ে ইতিহাস জেনে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে জানতে পারছেন। বঙ্গবন্ধুকে যেন শিক্ষার্থীরা বুকে লালন করে তার আদর্শ নিয়ে দেশের সেবায় নিয়োজিত হতে পারে সেই লক্ষ্যেই ম্যুরালটি তৈরি করা হচ্ছে।
ম্যুরাল তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে ইট, বালি, রড, পাথর, মার্বেল ও টাইলস। যার মাঝে পাথর, মার্বেল এবং টাইলসগুলো দেশের বাইরে থেকে আনা হয়েছে। রাজশাহী কলেজে গিয়ে দেখা যায়, ম্যুরালের কাজ চলছে। কাজ চলাকালীন কলেজের অনেক শিক্ষার্থী ম্যুরালটি দেখে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। শুধু কলেজ ক্যাম্পাস নয়। বাইরে থেকেও দেখা যাচ্ছে এই ম্যুরাল। বিশেষ করে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী ও রাস্তায় যাওয়া পথচারীরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে স্তব্ধ হয়ে ম্যুরালের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখছেন ও আলোচনা করছেন ম্যুরালটি নিয়ে।
কলেজ প্রাঙ্গণেই কথা হয় কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সাথে। রাজশাহী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিলা মুন জানান, আমাদের কলেজে কোনোকিছুর অভাব নেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য আলোকিত মানুষ হয়ে সবাই যেন দেশের সেবাই নিয়েজিত হয়, সেই শিক্ষায় দেয় রাজশাহী কলেজ। কয়েক বছরে কলেজের চিত্রটি একদম পাল্টে গেছে। ক্যম্পাসের সকল জায়গায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, সকল ভবনে সুন্দরভাবে সাজানো গোছানোসহ সবুজ পরিবেশে এই ম্যুরাল আমাদের অনেক কিছু শেখাবে।’
আরেক শিক্ষার্থ নাহিদ হাসান জানান, ক্যাম্পাসের প্রাণকেন্দ্রে এই ম্যুরাল আমাদের অনেক কিছু শেখাবে। আমরা বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী পড়ে অনেক কিছু শিখেছি। নতুন প্রজন্ম এই ম্যুরালটি দেখে জানার আগ্রহ জাগবে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে শিখবে।
রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমান জানান, শুধু রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী নয়, নগরীর সকল শিক্ষার্থী এই ম্যুরালটি দেখে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারবে। নতুন প্রজন্মের মাঝে বঙ্গবন্ধুর জীবন সম্পর্কে জানার আগ্রহ জন্মাবে। অনেক চিন্তাভাবনা করে ম্যুরালটি তৈরি করা হচ্ছে। দেশের ভাষা আন্দোলনে রাজশাহীর গুরুত্ব ছিলো অনেক বেশি। শুধু তাই নয়, দেশের সর্বপ্রথম শহিদ মিনারও এই রাজশাহী কলেজে তাই বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালও যেন এই কলেজের একটি উজ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। তিনি আরও জানান, এই জন্য কলেজের প্রাণকেন্দ্রে তৈরি করা হচ্ছে ম্যুরালটি। এই ম্যুরালে বঙ্গবন্ধুর দর্শনটাই উঠে আসছে।
এদিকে প্রায় একই আদলে রাজশাহী নগরীর লক্ষীপুর মোড়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত হচ্ছে আরেক বঙ্গবন্ধুর মূর্যাল। রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, এ ম্যুরালটির নির্মাণ কাজ শিগরিরই শেষ হবে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine