বৃহস্পতিবার রাতে পৃথক জায়গায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তিন যুবককে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো চন্দ্রিমা থানার আসাম কলোনীর বাবুর ছেলে মাহাদী, শাহ মখদুম থানা এলাকার বড়বনগ্রাম ভাড়ালীপাড়ার মহাসিন আলীর ছেলে রাজু আহমেদ ও বোয়ালিয়া থানার ফুতকিপাড়া কালি মন্দির সংলগ্ন সাইদুজ্জামানের ছেলে তৌফিক জামান সরন। শুক্রবার দুপুরে আসামীদের আইনি প্রক্রিয়া শেষে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, তানোরে ছুরি দেখিয়ে একজনের কাছ থেকে মোবাইল ছিনতাই করে তারা। পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত আবুল কালাম আজাদ জানান, গ্রেপ্তারকৃত তিনজন তানোরের বাগধানী এলাকায় ছুরি দেখিয়ে একজনের মোবাইল ছিনতাই করে। পরে ওই ব্যক্তি পবা থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
রাজশাহীতে বেপরোয়া হয়ে উঠছে ছিনতাইকারী চক্র। প্রতিদিনই নগরজুড়ে ঘটছে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা। আশেপাশের উপজেলাতেও এসব ঘটনা ঘটছে। নানান উপায়ে ছিনতাইকারী চক্র সাধারণ মানুষের উপরে ঝাপিয়ে পড়ছে। অস্ত্র দেখিয়ে ছিনিয়ে নিচ্ছে সর্বোস্ব। পথে হেটে, অটোরিকশায় কোথাও এখন আর নিরাপদ নয় মানুষ। সম্প্রতি নগরীর হেতেম খাঁ এলাকায় ছিনতাইকারীর হামলায় প্রাণ হারায় এক কলেজ ছাত্র। কোরবানী ঈদের কয়েকদিন আগে এ খুনের ঘটনা ঘটে। খুন হওয়া ফারদিন ইসনা আশারিয়া রাব্বি (১৮) দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মোজাফফরের ছেলে। তিনি রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
বৃহস্পতিবার টহল পুলিশ তল্লাশির সময় তাদের ওপর ধারা চাকু দিয়ে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এসময় পুলিশ তিন ছিনতাইকারীকে আটক করেছে। নগর ভবনের পাশেই নগরীর ব্যস্ততম এলাকা কাদিরগঞ্জের সানডায়াল কোচিং সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ধারালো চাকুর আঘাতে এএসআই মাইনুল হোসেন আহত হন।
আটককৃতরা হলো, নগরীর সপুরা এলাকার বাসিন্দা রনজিৎ হালদারের ছেলে অভিজিৎ হালদার রিংকু (২২), নগরীর কয়েরদাড়া এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে আমির হোসেন (১৬) ও জেলার গোদাগাড়ীর মান্ডইল এলাকার এমাজ উদ্দিনের ছেলে মোবারক হোসেন (১৭)। নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ জানান, আটককৃতরা ছিনতাইকারী দলের সদস্য।
২১ আগস্ট রাজশাহী রেল স্টেশনে অটোরিকশা চালকের সহযোগিতায় মার্কিন প্রবাসী নারীর ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সানজিদা খাতুন নামের ওই নারী তার স্বামীর সঙ্গে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে ফিরেন। এরপর ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে রাজশাহীতে যান। বনলতা ট্রেন থেকে গত ২১ আগস্ট নামার পরে রাজশাহী স্টেশন চত্তরে অটোরিকশা ধরার সময় তার হাতব্যাগটি ছিনতাই হয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই নারীর পক্ষ থেকে রাজশাহী রেলওয়ে জিআরপি থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এমন সব ঘটনায় নগরবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। নগরীর কয়েরদাঁড়া এলাকার এমএইচ কবীর বলেন, প্রায় নগরীতে এমন ঘটনা ঘটছে। রাস্তাঘাটে চলাচলের নিরাপত্তা নেই। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো বেশি সজাগ থাকতে হবে। এর প্রতিরোধ করা প্রয়োজন।
নগরীর উপশহর এলাকার মিলন জানান, রাজশাহী শান্তির নগরী। এমন সব ছিনতাইয়ের ঘটনায় নগরবাসীর মনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
নগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, মাঝে মধ্যেই এমন ঘটনা ঘটছে। পুলিশ ছিনতাইকারীদের ধরতে টহল জোরদার করেছে। এরই মধ্যে ভিডিও ফুটেজ দেখে মঙ্গলবার তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবারও পবায় তিন ছিনতাইকারীকে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে গোয়েন্দা তৎপরতাও বৃদ্ধি করা হয়েছে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ দৈনিক সানশাইন