উজান থেকে নেমে আসা ঢলে রাজশাহীতে পদ্মার পানি হু হু করে বাড়তে শুরু করে। এর ওপর ফারাক্কার সবক’টি লকগেট খুলে দেওয়ায় চোখ রাঙাচ্ছিল পদ্মা। বিপদসীমার কাছে থৈ থৈ করছিল কীর্তীনাশা পদ্মার পানি। কিন্তু আশার কথা হচ্ছে- তীরের মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে আবারও কমতে শুরু করেছে পদ্মার পানি।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার এনামুল হক বলেন, রাজশাহীতে পদ্মার বিপদসীমা নির্ধারণ করা আছে ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। এর মধ্যে গত ২ অক্টোবর রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানির উচ্চতা মাপা হয় ১৮ দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার। এরপর ৩ অক্টোবর পানির উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ১৯ মিটার। এটিই ছিল চলতি মৌসুমে পদ্মার রাজশাহী পয়েন্টে পানির সর্বোচ্চ উচ্চতা।
শুক্রবার (০৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানির সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ১৬ মিটার। আর শনিবার (০৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় মাপা হয়েছে ১৮ দশমিক ১২ মিটার। অর্থাৎ দু’দিনে পানি বাড়েনি। উল্টো ৭ সেন্টিমিটার কমেছে। ফলে রাজশাহীর পদ্মায় এবারের মত বিপদসীমা অতিক্রমের শঙ্কা কাটতে যাচ্ছে।
অতীতের পরিসংখ্যান টেনে এনামুল হক আরও বলেন, গেল ১৭ বছরে রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপদসীমা (১৮.৫০) অতিক্রম করেছে মাত্র দু’বার। এর মধ্যে ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টানা ৮ বছর রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। কেবল ২০০৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মার সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ মিটার। এরপর ২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মা বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল। ওই বছর পদ্মার উচ্চতা দাঁড়িয়েছিল ১৮ দশমিক ৭০ মিটার। এরপর পানি বাড়লেও আর এই রেকর্ড ভাঙেনি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে, পানি কমতে শুরু করলেও পদ্মা নদীতে এখনও প্রবল স্রোত। এই স্রোত আছড়ে পড়ছে রাজশাহী শহররক্ষা বাঁধে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজশাহীর টি-বাঁধ। তাই এরইমধ্যে সেখানে জনসাধারণের প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম বলেন, পদ্মার প্রবল স্রোতে শহররক্ষা বাঁধের টি-গ্রোয়েন কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধ রক্ষায় এরইমধ্যে বালু ভর্তি আড়াই হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এরপরও প্রতিদিন সেখানে প্রচুর দর্শনার্থী ভিড় করেন। এতে বাঁধ আরও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই আপাতত টি-বাঁধে দর্শনার্থীদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ