রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) এক শিক্ষার্থীর মোবাইল ছিনতাই চেষ্টার সময় এক বহিরাগতকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুন্নুজান হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে (রামেক) ভর্তি করা হয়।
বহিরাগত যুবক ফয়সাল উদ্দীন রাহাত মেহেরচণ্ডী পূর্বপাড়ার রহিজ উদ্দীনের ছেলে। তিনি নিজেকে বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী এবং ২৬ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কর্মী দাবি করেন। তবে ২৬ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ বলছে, ফয়সাল ছাত্রলীগের কেউ নয়।
ছিনতাইয়ের শিকার মার্কেটিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুবেল কাজী জানান, তিনি তৃতীয় বিজ্ঞান ও রবীন্দ্র ভবনের মাঝের রাস্তা দিয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে টুকিটাকির দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় পেছন থেকে দ্রুতগতিতে একটি মোটরসাইকেল আসে। এতে থাকা দুই যুবকের মধ্যে পেছনের জন থাবা দিয়ে তার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। ছিনতাই চেষ্টায় ব্যর্থ হলেও তার হাত থেকে মোবাইলটি পড়ে যায়। এসময় তারা মোটরসাইকেল নিয়ে লাইব্রেরির রাস্তা হয়ে প্যারিস রোডের দিকে চলে যায়।
তিনি আরও জানান, তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি তার বন্ধু ও ছাত্রলীগ নেতা ফেরদৌস মো. শ্রাবণকে জানান। ছিনতাইকারীরা প্যারিস রোড ঘুরে এসে মুন্নুজান হলের সামনের অবস্থান করছিলো। আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে একজন পালিয়ে যায়। পরে অন্যজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
শাখা ছাত্রলীগের মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফেরদৌস মো. শ্রাবণ বলেন, ঘটনাটি জানার পর আমরা চারদিক ছড়িয়ে পড়ি। তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি খুবই উচ্চশব্দ সম্পন্ন ছিলো, তাই সেটাকে শনাক্ত করতে সুবিধা হয়েছে। পরে আমরা সেখানে গিয়ে তাকে আটক করি। এসময় ছিনতাইকারীরা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে আমাদের মারতে আসে। ঘটনাস্থলে সে মারধরের শিকার হয়।
তবে ছিনতাইয়ের কথা অস্বীকার করে মারধরের শিকার ফয়সাল উদ্দীন রাহাত বলেন, ক্যাম্পাসে আমার এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। আমি মোটরসাইকেলে বসে অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে আমার মোটরসাইকেলের চাবি খুলে নেয়। চাবি খুলে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ‘ছিনতাইকারীর সঙ্গে কিসের কথা’ এই কথা বলে তারা আমাকে মারধর করতে শুরু করে। আমি কোনোভাবেই ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত নই।
জানতে চাইলে ২৬ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি রুহুল আমিন সরকার প্রিন্স বলেন, ফয়সালকে চিনি। সে আমার এলাকার। তবে সে আমাদের ছাত্রলীগ কর্মীও নয়। নিজেকে বাঁচাতে হয়তো সে ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ছিনতাইয়ের চেষ্টার সময় এক বহিরাগতকে ধরা হয়েছে এমন তথ্য মতিহার থানা পুলিশ খবর দিই। পরে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে উপস্থিত মতিহার থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মমতাজ উদ্দিন বলেন, আহত যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে। তাকে এখন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ