করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজশাহী জেলা প্রশাসনের খাদ্য সহায়তা পাচ্ছে সাড়ে ৬০ হাজার কর্মহীন পরিবার। এ জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৬০৭ মেট্রিক টন খাদ্য সামগ্রী। ছাড়াও ১৪ লাখ ৫০ হাজার নগদ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কর্মহীন মানুষের বাড়িতে এই খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) হামিদুল হক।
তিনি জানান, জেলা প্রশাসনের কাছে আরও ১৮৯ মেট্রিক টন চাল ও ৪ লক্ষ ৫ হাজার নগদ অর্থ মজুদ আছে। এর বাইরে স্থানীয় সরকারের তহবীল থেকেও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আগামীতে দরিদ্র পরিবার চিহ্নিত করে চাহিদা সাপেক্ষে সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে। রাজশাহীতে করোনা পরিস্থিতির মোকাবেলার প্রস্তুতি জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হামিদুল হক এসব তথ্য জানিয়েছেন। বুধবার দুপুরে জেলা প্রশসনের সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
রাজশাহীবাসীর উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক বলেন, পরবর্তি নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ঘরে থাকুন। যে কোন পরিসিস্থতে রাজশাহী প্রস্তুত আছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় জনগণের সহযোগীতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও রাজশাহীর উপজেলা পর্যায়ে ১০টি সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে ১৬ জন চিকিৎসক ও ১৩ জন নার্সকে প্রস্তুত আছে। ৪৬২ বেডের এসব চিকিৎসা কেন্দ্রে ১১৫টি বেড করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য পৃথকভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। চিকিৎসাকর্মীদের মাঝে ৩৩৭টি পিপিই বিতরণ করা হয়েছে। মজুদ রয়েছে আরো ৬৬৩টি।
ডিসি জানান, দেশে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজশাহী নগরে ৯ হাজার দরিদ্র পরিবারের মাঝে ৯০ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা ও নগদ ৩ লাখ ৫ হাজার টাকা দেয়া হেয়ছে। এছাড়াও গোড়াগাড়ীতে ৬ হাজার ৬০০ পরিবারের জন্য ৬৬ মেট্রিক টন, ও নগদ ১ লক্ষ টাকা, তানোরে ৫ হাজার ৪০০ পরিবারের জন্য ৫৪ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা ও নগদ ১ লক্ষ টাকা, পবায় ৬ হাজার পরিবারের মাঝে ৬০ মেট্রিক টন ও নগদ ১ লক্ষ টাকা দেয়া হয়েছে।
এচাড়াও মোহনপুরে ৪ হাজার ২০০ পরিবারের মাঝে ৪২ মেট্রিক টন খাদ্যদ্রব্য ও নগদ ১ লক্ষ টাক, বাগমারায় ১০ হাজার ৮০০ পরিবারের মঝে ১০৮ মেট্রিক টন খাদ্যদ্রব্য ও নগদ ১ লক্ষ টাকা, দুর্গাপুরে ৪ হাজার ৮০০ পরিবারের মধ্যে ৪৮ মেট্রিক টন ও নগদ ১ লক্ষ টাকা, পুঠিয়ায় ৪ হাজার ২০০ পরিবারের মধ্যে ৪২ মেট্রিক টন ও ১ লক্ষ টাকা, চারঘাটে ৪ হাজার ২০০ পরিবারের মাঝে ৪২ মেট্রিক টন ও ১ লক্ষ টাকা এবং বাঘায় ৫ হাজার ৪০০ পরিবারের মাঝে ৫৫ মেট্রিাক টন খাদ্য সহায়াত ও ৩ লাখ ৪৫ হাজার নগদ অর্থ সহায়াত প্রদান করা হয়েছে।
হামিদুল হক জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারগুলোর তালিকা করা হয়েছে। তালিকা নিয়ে অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক জানান, সাপ্তাহিক হাটগুলো বন্ধ করা হয়েছে। তবে নিত্য পণ্যের দ্রব্য সামগ্রীর দোকানগুলো খোলা রাখাতে বলা হয়েছে। তবে কাঁচা বাজারগুলোতে এখনো জনসমাগম হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ভাবা হচ্ছে। পাইকারি বাজার ও খুচরা বাজার পৃথক করা হয়েছে। পণ্যবাহী পরিহনগুলো চলাচল করছে। সেটি নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলেও জানান প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরিফুল হক।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ দৈনিক সানশাইন