রাজশাহী বিভাগে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ ও আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। গত ১৩ এপ্রিল রাজশাহীতে ঢাকাফেরত এক ব্যক্তির শরীরে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। এর পর ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত ১৬ দিনে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় ৯৬ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীও রয়েছেন। আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে একজনের।
বুধবার (২৯ এপ্রিল) রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এদিন সকাল ৯টা পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগের আট জেলাতেই করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী জেলায় একদিনে চারজন বেড়ে করোনায় আক্রান্ত রোগী দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে।চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আগের দুইজনই রয়েছে। তবে নওগাঁয় একদিনে ১৬ জন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে। নাটোরে প্রথমবারের মতো আটজন শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া জয়পুরহাটে একদিনে নয়জন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জনে।
বগুড়ায় একজন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ জনে। এছাড়া তার পাশের জেলা সিরাজগঞ্জে করোনায় আক্রন্ত হয়েছেন দুইজন। তবে পাবনা ছয়জন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ জনে। সবমিলিয়ে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় ৯৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এদিকে, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজসহ বিভাগে দু’টি ল্যাবে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা হচ্ছে। অপরটি হচ্ছে- বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ। একটি ল্যাবে প্রতিদিন ৯৪ জন করে মোট ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা যাচ্ছে। এর বাইরে বিভিন্ন জেলা আসা নমুনাগুলো অতিরিক্ত হয়ে যাওয়ায় সেগুলো ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন এভাবে কার্যক্রম চলছে।
সূত্রমতে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ৯৬ জনের মধ্যে রাজশাহীতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আর বগুড়ায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন দুইজন। বাকি ৯৩ জনের মধ্যে ৩৭ জন হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর বাকিরা নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। এছাড়া কনোনা উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী বিভাগে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৭৬ জন। পর্যায়ক্রমে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে।
রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচলক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য বলেন, রাজশাহী বিভাগে করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। একদিনে নতুন করে ৪৪ জন করোনা পজিটিভ মিলেছে। আরও নমুনা সংগ্রহে রয়েছে। সবগুলো পরীক্ষা হলে রাজশাহী বিভাগে করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহী বিভাগে অনেকেরই আক্রন্তের উৎস মেলেনি। রাজশাহী, জয়পুরহাট ও বগুড়ার বেশ কয়েকজনের আক্রান্ত হওয়ার উৎস পাওয়া যায়নি। বিশেষ করে রাজশাহীতে একজন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। তার আক্রান্তের উৎস পাওয়া যায়নি।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ