‘দুপুরের পরে শুরু হয়েছে, এরপর ৫ থেকে ১০ মিনিট পরপর ফুটুস। এতটাই বিরক্তিকর ও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে তা বলার মত না।’- রাজশাহীতে গতকাল বৃস্পতিবার (৪ জুন) বিদ্যুতের যাওয়া আসা নিয়ে অতিমাত্রায় বিরক্ত হয়ে কথাগুলো বলেন নগরীর উপশহর দড়িখরবোনার বাসিন্দা মেহেদী হাসান।
তিনি বলেন, ‘বিকেল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত অন্তত ২০-২৫ বার বিদ্যুৎ গেছে। জেনারেটর চালু ও বন্ধ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছি।’ শুধু মেহেদী হাসান নয়, বিদ্যুতের যাওয়া আসা নিয়ে চরম বিরক্তি প্রকাশ করেন নগরবাসি। লোডশেডিংয়ের ফলে অতিষ্ঠ তারা।
নগরবাসি জানান, হুটহাট করে বিদ্যুতের এমন যাওয়া আসায় কোন কাজই ঠিকঠাক করতে পারেননি। অতিরিক্ত গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় চরম কষ্টে ভূগেছেন বাচ্চা-বৃদ্ধরা। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় অনেক কাজই ঠিক সময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি। ফলে অনেক লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা। আর করোনা সময়ে ঘরবন্দি জীবনে এমন লোডশেডিং অসহনীয় বলে উল্লেখ করেন তারা।
নগরবাসীর অভিযোগ, দুপুরের পর থেকে বিদ্যুতের বিরতিহীন যাওয়া আসা শুরু হয়েছে। রাত পর্যন্ত অন্তত ২০-২৫ বার বিদ্যুৎ গেছে। নামাজ, খাওয়া-দাওয়া সবই করতে হয়েছে বিদ্যুৎ ছাড়াই। তার উপর বিকেলে বৃষ্টি হওয়ায় অতিরিক্ত অন্ধকারে ঢেকে গেছে নগরী। ফলে আলো ও বিদ্যুতের অভাবে অনেক প্রয়োজনীয় কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে।
এমন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ রাজশাহীবাসী। গতকাল এমন অসহনীয় মাত্রার লোডশেডিংয়ে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও অফিস আদালতে কাজকর্ম বন্ধ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় কাজ সম্পন্ন না করতে পারায় অনেক লোকসানে পড়েছেন তারা।
দিনরাত মিলিয়ে ২০ থেকে ২৫ বার সমান তালে চলছে বিদ্যুতের যাওয়া আসা। কখনো লম্বা সময় আবার কখনো স্ব এক ঘণ্টা থেকে শুরু করে দুই বা আরও অধিক সময় পর্যন্ত চলে লোডশেডিং। এ কারণে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালতে নেমে আসে স্থবিরতা। ঘনঘন লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষের জনজীবন। বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরাও। বিদ্যুতের এই ভেলকি বাজিতে অতিষ্ঠ রাজশাহীবাসী।
স্থানীয় কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন, ছেলেমেয়েরা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ঠিকমতো পড়ালেখা করতে পারছে না। এছাড়া বিদ্যুৎ না থাকার কারণে কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে বলে জানান তারা। আর লকডাউনকালীন বিদ্যুৎ থাকা অতিরিক্ত কষ্টের ও অসহনীয় বলে মন্তব্য করেন তারা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, স্বল্পসময়ের জন্য দোকানপাট ও কল-কারখানা চালু রাখা হচ্ছে। সেই সময়টাতেও যদি ঠিকঠাক কাজ করতে না পারা যায় তাহলে ক্ষতির মুখে পড়েবেন তারা। এর আগে বিভিন্ন সময় রাজশাহীর ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, ইন্ডাস্ট্রি চলাকালীন বিদ্যুত চলে যাওয়ায় বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যেয়ে ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। ফলে তারা লোকসানের মুখে পড়েন।
বিদ্যুতের এমন দুরবস্থা কবে নাগাদ কাটিয়ে উঠবে এর কোন জবাব পাওয়া যায় না সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে। অতীতে বিদ্যুতের বিভ্রাট নিয়ে বিভিন্ন অযুহাত ও কারন দেখিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বিভিন্ন সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রে যান্ত্রিক ত্রুটি, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমসহ বিভিন্ন কারণ দর্শান তারা।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ দৈনিক সানশাইন