অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন এন্ড্রু কিশোরের ছেলে জয় এন্ড্রু সপ্তক। বৃহস্পতিবার (০৯ জুলাই) সকালে রাজশাহীতে পৌঁছেছেন তিনি। এখন তার বড় মেয়ে মিনিম এন্ড্রু সংজ্ঞা ফিরলেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে এই কিংবদন্তির। তিনিও বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন।
সদ্য প্রয়াত এন্ড্রু কিশোরের বড় বোনের স্বামী ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বুধবার (০৮ জুলাই) দিনগত রাত দেড়টার দিকে অস্ট্রেলিয়া থেকে ঢাকায় নামেন সপ্তক। সেখান থেকে তাকে সরাসরি বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীতে নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি জানান, এখন এন্ড্রু কিশোরের মেয়ে ফিরলেই ১৫ জুলাই শেষকৃত্য অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। সংজ্ঞার ফিরতে দেরি হচ্ছে। তিনি ফিরবেন ১৩ জুলাই রাতে। ১৪ জুলাই ঢাকা হয়ে রাজশাহী পৌঁছাবেন। ফ্লাইটের টিকিট জটিলতায় এর আগে তার মেয়ে দেশে পৌঁছানোর সম্ভাবনা নেই।
ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস আরও জানান, আগামী ১৫ জুলাই বিকেলে তাকে (এন্ড্রু কিশোর) সমাহিত করা হবে রাজশাহী সার্কিট হাউজের সামনে চার্চ অব বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সিমেট্রিতে। ওই দিন সকাল ৯টায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিমঘর থেকে এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ কফিনে করে বের করা হবে। নেওয়া হবে শহরের কাজীহাটায় থাকা রাজশাহী সিটি চার্চে।
সেখানে দু’ঘণ্টার ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে তার মরদেহ রাখা হবে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গ কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সেখান থেকে তাকে নেওয়া হবে রাজশাহী সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে। ভক্ত-অনুরাগীদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত তার মরদেহ রাখা হবে। শ্রদ্ধা জানানো শেষে মরদেহ বাংলাদেশ চার্চের কবরস্থানের সমাধিস্থলে নিয়ে যাওয়া হবে।
১৫ জুলাই বিকেলে ৪টার পর এন্ড্রু কিশোরকে সমাহিত করার কথা রয়েছে। যে সিমেট্রিতে (কবরস্থান) তাকে সমাহিত করা হবে, সেখানে তার বাবা, মা ও ভাইকেও সমাহিত করা হয়েছিল। তবে কিশোরের সমাধি হচ্ছে তার দেখিয়ে দেওয়া জায়গায়। যেখান থেকে পরিবারের সদস্যদের সমাধি সামান্য দূরে।
এ সময় উল্লেখ করে ডা. পাট্রিক বিপুল বিশ্বাস বলেন, ‘প্রতি বছর ১ নভেম্বর খ্রিস্টানরা সমাধিস্থলে যান এবং প্রয়াত স্বজনদের আত্মার মুক্তির জন্য স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করেন। ২০১৭ সালের এমন এক দিনে এন্ড্রু কিশোর আমাকে নিয়ে সিমেট্রিতে গিয়েছিল। প্রার্থনা শেষে সিমেট্রিটা ঘুরে দেখেছিল। পরে একটা মনোরম স্থান পছন্দ করে আমাকে বলেছিল যে সে যখন মারা যাবে, তখন যেন তাকে সেখানেই সমাহিত করা হয়। সেই জায়গাতেই তার সমাধির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সিমেট্রিতে ঢুকে হাতের বা পাশেই সেই জায়গা। মৃত্যুরে পর তার শেষ ইচ্ছের প্রতি সম্মান জানিয়ে সেখানে সমাধিস্থ করা হবে তাকে।’
১৯৭৩ সালের ডিসেম্বরে এন্ড্রু কিশোরের পরিবারের সদস্য হন ডা. পাট্রিক বিপুল বিশ্বাস। এন্ড্রুর বাবা-মা মারা যাওয়ার পর থেকে তিনিই এই পারিবারের অভিভাবক। গত ১১ জুন দেশে ফেরার পর ২০ জুন থেকে কিশোর তার জীবনের শেষ দিনগুলো ডা. বিশ্বাসের বাসভবনেই কাটিয়েছেন।
গত সোমবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকায় থাকা বোনের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলাদেশের প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর। এরপর তার মরদেহ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। ছেলে-মেয়ের অপেক্ষায় আগামী ১৫ জুলাই এন্ড্রু কিশোরের শেষকৃত্যানুষ্ঠানের দিন নির্ধারণ করেছে পরিবার।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ