রাজশাহী-ঢাকা রুটের পদ্মা, ধুমকেতু ও সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেন তিনটিতে প্রতিদিন হাজারো যাত্রী যাতায়াত করছে। তবে রেল কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের চাহিদা মাফিক টিকেট দিতে পাছে না। ফলে ট্রেনগুলোতে যতোজন যাত্রী সিটে বসে যাতায়াত করেন প্রায় সমপরিমাণ যাত্রী দাড়িয়ে যাতায়ত করতে বাধ্য হচ্ছেন।
এই ট্রেন তিনটির প্রতিটি ১২ থেকে ১৫টি বগি নিয়ে যাতায়ত করলেও ইঞ্জিনগুলোর বগি বহনের ক্ষমতা ১৮টি। রাজশাহী রুটে নিয়মিত চলাচল করা প্রায় ৯০টি ট্রেনেরও একই অবস্থা। তবে প্রতিবন্ধকতা সত্বেও প্রতিনিয়তই যাত্রীদের রেল ভ্রমণের প্রতি চাহিদা বাড়ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত বগি না থাকায় রেল কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের সেই চাহিদা যেমন পুরণ করতে পারছে না, তেমনি পারছে না আশানুরূপ সেবা নিশ্চিত করেতে।
তবে পশ্চিমাঞ্চল রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, নিরাপদ যাত্রার পাশাপাশি রেলের সেবার মান আগের চাইতে বৃদ্ধি পাওয়ায় চাহিদা বাড়ছে রেল ভ্রমনে। বর্তমানে যে যতসামাস্য সংকট বিদ্যমান তা কাটিয়ে উঠতে সরকার এরই মধ্যে কার্যকর ও টেকসই পদক্ষেপ নিয়েছে। যার সুফল যাত্রীরা খুব শিঘ্রই ভোগ করবে।
রাজশাহী রুটে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার যাত্রী যাতায়ত করে। এর বাইরে প্রায় ৫হাজার যাত্রীকে টিকেট দিতে পারে না এই রুটের রেল কর্তৃপক্ষ। যাদের অনেকে বিনা টিকেটে দাড়িয়েই ট্রেনে যাতায়ত করে। আর প্রতিদিন রাজশাহী স্টেশন টিকেট বিক্রি করে আয় হয় গড়ে ২৫ থেকে ২৬ লাখ টাকা।
এদিকে সামনে ঈদ। আর এই ঈদসহ বিশেষ দিন বা সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে যাতায়াতে উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের চাহিদার শীর্ষে থাকে এই ট্রেন ভ্রমন।
পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, ঢাকার, খুলনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁর পাশাপাশি ঈশ্বরর্দী, জয়পুরহাট, নাটোর, চিলাহাটি, পার্বতীপুর, কুষ্ঠিয়া, পঞ্চগড়, বগুড়া, টুঙ্গিপাড়াসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা সমূহে প্রায় ৯০টির মতো ট্রেন রাজশাহী স্টেশন থেকে প্রতিদিন যাতায়াত করছে। আর এসকল ট্রেন ধারণ ক্ষমতার চাইতে তিনটি থেকে চারটি করে বগি কম নিয়ে নিয়মিত যাতায়ত করছে। পর্যাপ্ত বগি না থাকায় ট্রেনগুলোতে নির্দিষ্ট সংখ্যক বগি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার জানান, শুধু উত্তরাঞ্চলেই না বাংলাদেশ রেলের চাহিদা সারা দেশেই বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে প্রতিটি রুটেই যাত্রীদের চাপ বাড়ছে। এটি আমাদের জন্য ভালো খবর। তিনি জানান, এই রুটে চলাচল করা প্রতিটি টেনে পর্যাপ্ত বগি নিশ্চিত করতে পারলে যাত্রীদের শতভাগ চাহিদা পুরণ সম্ভব। আর সরকার এ লক্ষে কাজ করছে। শুধু বগিই না, নুতুন ও পুরাতন রুটে নুতন নতুন ট্রেন চালু করা হচ্ছে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত নিরাপদ যান হিসেবে সবাই রেলকেই চেনে। আর তাই দেশের সকল রুটে রেলের চাহিদা প্রতিদিন বাড়ছে। চাহিদা বৃদ্ধির কারণে এই সাময়িক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। আর তাই বিদেশ থেকে নতুন নতুন কোচ ও ইঞ্জিন আমদানি করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা কোচ দিয়ে আমরা রাজশাহী-ঢাকা রুটে নতুন একটি বিরতিহীন ট্রেন চালু করতে পেরেছি।
তিনি আরো জানান, এভাবে পর্যায়ক্রমে কোচ ও ইঞ্জিন আসার সাথে সাথে সেগুলো গুরুত্বের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট রুটগুলোতে চলাচলের জন দিয়ে দেয়া হবে। আমরা সৌভাগ্যবান ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা প্রথম চালন থেকেই নুতন একটি ট্রেন আমরা চালু করতে পেরেছি। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine