১৮২৯ সালে উত্তরবঙ্গের বিশাল অংশ নিয়ে একটি বিভাগ গঠিত হয়েছিলো এবং তখন এর সদর দপ্তর মুর্শিদাবাদ। এই বিভাগে ৮টি জেলা ছিল যেমনঃ মুর্শিদাবাদ, মালদহ, জলপাইগুড়ি, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, পাবনা এবং রাজশাহী। কয়েক বছরের মধ্যেই বিভাগীয় সদর দপ্তরটি মুর্শিদাবাদ থেকে রাজশাহী শহরের রামপুর–বোয়ালিয়া মৌজায় স্থানান্তরিত হয়। তারপর, ১৮৮৮ সালে বিভাগীয় সদর দপ্তর জলপাইগুড়িতে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৪৭ সালের পাক–ভারত বিভাজনের পর, রাজশাহীকে বিভাগে পরিণত করে এবং বিভাগীয় সদর দফতরটি রাজশাহী শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলো হয়েছিলো কুষ্টিয়া, খুলনা, দিনাজপুর, বগুড়া, পাবনা, যশোর, রংপুর ও রাজশাহী। পরবর্তীতে, ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিভাগের খুলনা, কুষ্টিয়া, যশোর এবং ঢাকা বিভাগের বরিশাল জেলা নিয়ে খুলনা বিভাগ গঠন করা হয়। ফলে রাজশাহী বিভাগের জেলার সংখ্যা ৫ হয়ে উঠলো এবং জেলাগুলো ছিলো দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া, রংপুর ও রাজশাহী। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর, ৫ টি জেলা নিয়ে রাজশাহী বিভাগ গঠিত হয়। ১৯৮৪ সালে এই বিভাগের প্রতিটি জেলা মহকুমা জেলাতে পরিণত হয়। সেসময় এই বিভাগে মোট জেলার সংখ্যা ছিল ১৬টি। যে ৫ জেলাকে ভেঙে নতুন জেলা হয়ঃ
- বগুড়া (বগুড়া ও জয়পুরহাট)
- পাবনা (পাবনা ও সিরাজগঞ্জ )
- রাজশাহী (রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ)
- দিনাজপুর (দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও)
- রংপুর (রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট)
২০১০ সালে রংপুর অঞ্চলের ৮টি জেলা নিয়ে রংপুর বিভাগ গঠন করা হয় এবং রাজশাহী অঞ্চলের ৮টি জেলা নিয়ে বর্তমান রাজশাহী বিভাগ পুনঃগঠিত হয়।
রাজশাহী জেলা
রাজশাহী জেলা বাংলাদেশের একটি অন্যতম সুন্দর জেলা। এটি বাংলাদেশের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলের জেলা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জেলা হিসেবে দেশব্যাপী বিখ্যাত রাজশাহী। আমের রাজ্য হিসেবেও রাজশাহী দেশব্যাপী বিখ্যাত। রাজশাহীতে সব ধরনের শাক–সবজি চাষ করা হয়, যার ফলে এটি সবজিভান্ডার বলে পরিচিত। এছাড়াও রাজশাহী দেশের শ্রেষ্ঠ ফসল ও ফল উৎপাদনের দাবিদার। এখানে সর্বাধিক পান উৎপাদন হয়। রাজশাহী রেশমের নগরী হিসেবেও পরিচিত।
রাজশাহী জেলার সীমান্তে নওগাঁ জেলা, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, কুষ্টিয়া জেলা ও পদ্মা নদী অবস্থিত। এটির মোট আয়তন ২৪০৭.০১ বর্গকিলোমিটার।
রাজশাহীতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সাধারণ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, কারিগরি মহাবিদ্যালয়, টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, ক্যাডেট কলেজ, সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
রাজশাহী জেলা থেকে বিভিন্ন বাংলা দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়, যেমন সোনালী সংবাদ, সানশাইন, দৈনিক বার্তা, সোনার দেশ, নতুন প্রভাত, আমাদের রাজশাহী ইত্যাদি। এছাড়াও অনলাইন নিউজ পোর্টাল প্রকাশিত হয়, যেমন রাজশাহী এক্সপ্রেস ডটকম, সত্যের সকাল ডটকম, দ্য ক্যাম্পাস, সাহেব–বাজার টোয়েন্টিফোর ডটকম, সিল্কসিটিনিউজ ডটকম, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন, পদ্মাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম, উত্তরকাল ইত্যাদি। এছাড়াও রাজশাহীতে সরকার পরিচালিত বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারের ট্রান্সমিশন কেন্দ্র রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হলো বাংলাদেশের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এই জেলাটি প্রাচীনকাল থেকেই নবাবগঞ্জ বা চাঁপাই নামে পরিচিত। পূর্বে এটি ভারতের মালদহ জেলার অংশ ছিলে, কিন্তু ১৯৪৭ সালে এটি পাকিস্তানেরর অধীনে আত্মপ্রকাশ করে এবং তারপর একক জেলা হিসেবে গণ্য হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অনেকে এই জেলাকে ‘আমের শহর‘ বা ‘আমের দেশ‘ বলে। এই জেলায় সম্পূর্ণ বাংলাদেশের মোট আমের একটি বড় অংশ উৎপাদিত হয়, যার ফলে এটি ‘আমের রাজধানী‘ বা ‘Capital of Mango’ হিসেবে পরিচিত।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মোট আয়তন ১,৭৪৪ বর্গ কিলোমিটার। এটি বাংলাদেশের মানচিত্রে সর্বপশ্চিমে অবস্থিত। চাঁপাইনবাবগঞ্জের উত্তরে, পশ্চিমে এবং দক্ষিণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অবস্থিত, এবং পূর্বে রাজশাহী জেলা ও নওগাঁ জেলা অবস্থিত। শিক্ষা ক্ষেত্রে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বেশ প্রসিদ্ধ। এখানে রয়েছেঃ
- ৩৭০টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়;
- ২৮২টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়;
- ৪টি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়;
- ২০৪টি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়;
- ৪টি সরকারি কলেজ;
- ৪৮টি বেসরকারি কলেজ;
- ১২৮টি মাদ্রাসা;
- ১টি সরকারী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র;
- ১টি বেসরকারী কারীগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
- ১টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং
- ১টি যুব উন্নয়ন কেন্দ্র ।
- ২টি PTI আছে।
জয়পুরহাট জেলা
জয়পুরহাট জেলা অবস্থিত বাংলাদেশের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এই জেলাটির অন্তর্গত তিলকপুর বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের একটি প্রাচীন মফস্বল শহর ছিলো। এটি প্রায়শই সুতা ক্রয়–বিক্রয়ের হাটের জন্য বিখ্যাত ছিলো, কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সেই হাট হারিয়ে যায়। তিলকপুরের প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো তিলকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, যা ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এটি একটি শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত। উল্লেখ্য প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও একই বছর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। মজার ব্যাপার হলো এটি এমন একটি জেলা যেখানে সকল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বাস করে।
জয়পুরহাট জেলার উত্তরে দিনাজপুর, দক্ষিণে বগুড়া ও নওগাঁ, পূর্বে বগুড়া ও গাইবান্ধা, পশ্চিমে নওগাঁ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাথে সংযুক্ত। জয়পুরহাট জেলার শিক্ষার হার হল ৮১.৮৬%। এটি বাংলাদেশের ৭টি নিরক্ষরমুক্ত জেলার মধ্যে অন্যতম। এই জেলায় সরকারি কলেজ ৩টি, বেসরকারী কলেজ ৩৯টি, মহিলা ক্যাডেট কলেজ ১টি, সরকারি ইনস্টিটিউট অব হেলথ্ টেকনোলজি ১টি, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪টি, বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৬১টি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৬৩টি, বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৭টি, সরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২টি, বেসরকারী কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৩টি, কামিল মাদ্রাসা ৪টি, ফাজিল মাদ্রাসা ১০টি, আলিম মাদ্রাসা ১৭টি, দাখিল মাদ্রাসা ৮০টি, পিটিআই ১টি, মডেল মাদ্রাসা ১টি, টিটিসি ১টি, এবং ১টি শিশু কল্যাণ বিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়াও জয়পুরহাটে গার্লস ক্যাডেট কলেজ, জয়পুরহাট সরকারি কলেজ, মহীপুর হাজী মহাসীন সরকারি কলেজ, ক্ষেতলাল এস. এ. ডিগ্রী কলেজ, কালাই ডিগ্রী কলেজ, নান্দাইল দিঘি কলেজ, রামদেও বাজলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, জয়পুরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, জয়পুরহাট সদর থানা উচ্চ বিদ্যালয়, কালাই সরকারি এম. ইউ. উচ্চ বিদ্যালয়, ক্ষেতলাল সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এই জেলার মধ্যে বিখ্যাত।
নওগাঁ জেলা
নওগাঁ জেলা হলো বাংলাদেশের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা। ভৌগোলিকভাবে নওগাঁ জেলা বৃহত্তর বরেন্দ্র ভূমির অংশ। এটি বাংলাদেশের উত্তর–পশ্চিমভাগে বাংলাদেশ–ভারত আন্তর্জাতিক সীমারেখা সংলগ্ন একটি ভূখণ্ড। এই জন্যে নওগাঁ মহকুমা হিসাবে গণ্য হতো, যা ১৯৮৪ সালের ১লা মার্চের আগ পর্যন্ত অবস্থিত ছিল।
নওগাঁ জেলার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে নাটোর জেলা ও রাজশাহী জেলা, পূর্বে জয়পুরহাট জেলা ও বগুড়া জেলা, পশ্চিমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা অবস্থিত।
নওগাঁ জেলার পশ্চিমে পুনর্ভবা, মধ্যবর্তী আত্রাই এবং পূর্বে ছোট যমুনা নদী প্রবাহিত। যমুনা মূলত তিস্তা নদীর একটি শাখা।
নাটোর জেলা
নাটোর জেলা বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত একটি জেলা। জেলাটির উত্তরে নওগাঁ জেলা ও বগুড়া জেলা, দক্ষিণে পাবনা জেলা ও কুষ্টিয়া জেলা, পূর্বে পাবনা জেলা ও সিরাজগঞ্জ জেলা, এবং পশ্চিমে রাজশাহী জেলা অবস্থিত। এই জেলাটির আয়তন ১৯০৫.০৫ বর্গ কিলোমিটার। নাটোর জেলা বাংলাদেশের উত্তর–পশ্চিমের আটটি জেলার মধ্যে একটি।
নাটোরে অন্যতম প্রশংসিত স্থানগুলির মধ্যে রাজবাড়ী, উত্তরা গণভবন, কাঁচাগোল্লা, চলনবিল, হালতি বিল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। নাটোর জেলা দূর্যোগপ্রবণ এলাকা না হলেও এই জেলার মধ্যে সিংড়া উপজেলা এবং লালপুর উপজেলায় অন্তর্ভুক্ত আত্রাই নদী এবং পদ্মা নদীতে মাঝে মাঝে বন্যা দেখা দেয়। সদর ও নাটোরের সকল উপজেলার আবহাওয়া একই হলেও লালপুরে গড় তাপমাত্রা সবসময় বেশি।
পাবনা জেলা
পাবনা জেলা হলো বাংলাদেশের মধ্যবর্তী জেলা এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি “এ” শ্রেণিভুক্ত জেলা। জেলাটির মধ্যভাগে বয়ে গেছে ইছামতি নদী। ঈশ্বরদী উপজেলায় অবস্থিত হার্ডিঞ্জ সেতু এবং লালন শাহ সেতু এটির অন্যতম ঐতিহাসিক স্থান।
পাবনা জেলায় প্রতিষ্ঠান হলো পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, পাবনা সরকারি মহিলা কলেজ, পাবনা ক্যাডেট কলেজ, সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ, পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, এবং পাবনা জেলা স্কুল ইত্যাদি। পাবনা জেলায় আরও একটি ঐতিহাসিক হাসপাতাল রয়েছে যার নাম সরকারি মানসিক হাসপাতাল। এছাড়াও পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অবস্থিত, যা পদ্মা নদীর পাশেই অবস্থিত।
বগুড়া জেলা
বগুড়া জেলা অবস্থিত বাংলাদেশের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলে, যা রাজশাহী বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা হিসেবে বগুড়া পরিচিত। বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গে এক ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন জনপদ গড়ে উঠেছিলো এই বগুড়ায়। প্রাচীন পুণ্ড্র রাজ্যের রাজধানী পুণ্ড্রবর্ধনের বর্তমান নাম মহাস্থানগড়, যা বগুড়া জেলায় অবস্থিত এবং এটি একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসেবে পরিচিত। বগুড়াকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার ও রাজধানী হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও বগুড়া শিক্ষানগরী নামে পরিচিত এবং এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পৌরসভা হিসেবে পরিচিত।
বগুড়ার উত্তরে গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট, উত্তর পশ্চিমে জয়পুরহাটের অংশবিশেষ,পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিমে নওগাঁ, দক্ষিণে নাটোর ও সিরাজগঞ্জের অংশবিশেষ এবং দক্ষিণ পূর্বে সিরাজগঞ্জের অবশিষ্ট অংশ বিদ্যমান। বগুড়ার পূর্বে জামালপুর থাকলেও এর স্থলভাগ সংযুক্ত নয়।
বগুড়া ভৌগোলিকভাবে ভূমিকম্পের বিপজ্জনক বলয়ে অবস্থিত। তাছাড়া বগুড়া জেলা বরেন্দ্রভূমির অংশবিশেষ যা ধূসর ও লাল বর্ণের মাটির পরিচিতির জন্য উল্লেখ্য।
উত্তরবঙ্গের ১৬ টি জেলার মধ্য জনসংখ্যায় বৃহত্তম জেলা হচ্ছে বগুড়া। এবং সারা বাংলাদেশে ষষ্ঠ বৃহত্তম জেলা। বগুড়া জেলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিক দিয়ে অনেক উন্নত। এ জেলায় রয়েছে উত্তরবঙ্গের ১ম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পুন্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (রংপুর রোড,গোকুল,বগুড়া)। এছাড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই জেলায় ১ টি সরকারি মেডিকেল কলেজ (শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ), ১টি বেসরকারী মেডিকেল কলেজ, ১টি বেসরকারী প্রকৌশল কলেজ, ৮ টি সরকারি কলেজ,১ টি ‘ল‘ (আইন) কলেজ,১টি সরকারি মাদরাসা, ৭৬ টি বেসরকারি কলেজ, ১.৫৬৮ টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৪০২ টি বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১,৫৬৮ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৩ টি বেসরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়, ১ টি সরকারি পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট, ১ টি ভিটিটিআই, ২ টি পিটিআই, ১ টি টিটিসি ও ১ টি আর্ট কলেজ, ১ টি আইএইচটি রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা
সিরাজগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। জেলাটি বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা। তাঁতশিল্প এ জেলাকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করেছে।
বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু এবং সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধের অপূর্ব সৌন্দর্য এ জেলাকে পর্যটনসমৃদ্ধ জেলার খ্যাতি এনে দিয়েছে। এছাড়াও শাহজাদপুর উপজেলার রবীন্দ্র কাঁচারি বাড়ি, এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বাঘাবাড়ি মিল্কভিটা, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তের ইকোপার্ক, বাঘাবাড়ি বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, বাঘাবাড়ি নদী বন্দর, বাঘাবাড়ি প্যারামাউন্ট বাংলা ট্রাক এনার্জি কনসোর্টিয়াম বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ইত্যাদি বিখ্যাত স্থাপত্য ও শৈল্পকর্মের নিদর্শন এ জেলাকে সমৃদ্ধ করেছে।
জেলাটির উত্তরে বগুড়া জেলা, দক্ষিণে পাবনা জেলা ও মানিকগঞ্জ জেলা, পূর্বে টাঙ্গাইল জেলা ও জামালপুর জেলা, পশ্চিমে পাবনা জেলা, নাটোর জেলা ও বগুড়া জেলা। জেলাটির আয়তন ২৪৯৭.৯২ বর্গ কিলোমিটার।