আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন। তাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতীক বরাদ্দ হবে মঙ্গলবার (১০ জুলাই)। তাতে কী, দলীয় প্রতীকে মেয়র পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবার। ফলে অনেকটা নির্ভাবনাতেই নিজ নিজ পোস্টার, হ্যান্ডবিল ও ফেস্টুনসহ বিভিন্ন প্রচারপত্র প্রস্তুত করে ফেলেছেন নৌকা ও ধানের শীষের দুই প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
যদিও প্রতীক বরাদ্দ না পাওয়ায় পর্যন্ত কোনো ধরণের প্রচারপত্র ছাপানো বা তৈরি করা যাবে না বলে বিধিনিষেধ আছে নির্বাচন কমিশনের।
জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল ইসলাম বলেন, আইনে স্পষ্ট বলা আছে, প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা করা যাবে না। কাজেই প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রার্থীই প্রচারপত্র প্রস্তুত করতে পারেন না। তাদের দৃষ্টিতে এগুলো আসেনি। আসলে বা কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হতো বলেও জানান এ রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এদিকে, খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নওশের আলীর মালিকানাধীন নিউমার্কেট গৌরহাঙ্গা এলাকার বিকল্প অফসেট প্রেসে নৌকার পোস্টার ছাপা হচ্ছে। এ পোস্টার ও হ্যান্ডবিল আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের। বিকল্প অফসেট প্রেসে নৌকা প্রতীকের দেড় লাখ পোস্টার, এক লাখ লিফলেট এবং ১৫ লাখ হ্যান্ডবিল ছাপার কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে।
এছাড়া বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের ৬০ হাজার পোস্টার, ১০লাখ লিফলেট ও তিনলাখ হ্যান্ডবিল ছাপছে নগর ভবন সংলগ্ন গৌরহাঙ্গা গ্রেটাররোড এলাকার প্রভাত প্রিন্টিং প্রেস অ্যান্ড পাকলিকেশন্সে।
তবে কবে থেকে প্রচারপত্র ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে তা জানাতে চাননি বিকল্প অফসেট প্রেসের ব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী। রাত-দিন মিলিয়ে ৭/৮ দিন ধরে প্রচারপত্র ছাপানোর কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বিকল্প প্রেসের ব্যবস্থাপক।
এদিকে সামনের দিনে বৃষ্টি থেকে পোস্টার বাঁচাতে নিউমার্কেট উপহার সিনেমা হল এলাকার মতিন লেমিনেশন হাউজে মেয়র প্রার্থী লিটনের নৌকা প্রতীকের পোস্টার লেমিনেটিং হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী আবদুল মতিন বলেন, এ পর্যন্ত মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের ৪৫ হাজার পোস্টার লেমিনেটিং করা হয়েছে। এক সপ্তাহ থেকে এ কাজ চলছে। তবে লিটন ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর পোস্টার তাদের কাছে আসেনি। রাজশাহীতে তারাই একমাত্র পোস্টার লেমিনেটিং করেন। ১০ জুলাই নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর কাজের চাপ আরও বাড়বে বলেও জানান।
প্রতীক বরাদ্দের আগেই প্রার্থীর প্রচারপত্র ছাপানোর কথা স্বীকার করে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নওশের আলী বলেন, প্রচারণার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে এ উদ্যোগ। ১০ জুলাই প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যেনো এসব প্রচারপত্র রাজশাহীবাসীর কাছে পৌঁছানো যায় সেজন্য আগে ছাপা হচ্ছে। তবে এগুলো প্রেসে রাখা হচ্ছে। কোথাও প্রদর্শন বা বিতরণ করা হয়নি।
এছাড়া রাজশাহী নগর ভবনের পাশে থাকা প্রভাত প্রিন্টিং প্রেস অ্যান্ড পাকলিকেশনের ছাপাখানায় ধানের শীষের প্রচারপত্র ছাপার কাজ চলছে।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম বলেন, গত চার দিন ধরে তারা বুলবুলের প্রচারপত্র ছাপাচ্ছেন। এ ক’দিনে প্রায় ৩৫ হাজার পোস্টার এবং ৫০ হাজারেরও বেশি হ্যান্ডবিল ছাপার কাজ শেষ হয়েছে। তবে আরও প্রচারপত্র ছাপানো হবে বলেও জানান আমিনুল ইসলাম।
কিন্তু ধানের শীষের প্রচারপত্র ছাপার কথা অস্বীকার করছেন প্রচারণায় থাকা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন। তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই তারা প্রচারণায় নামবেন। নিয়ম লঙ্ঘন হয় এমন কোনো কাজ বিএনপি করবে না। উল্টো মহানগর আওয়ামী লীগই বিধি লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এ নেতা।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ২৪