বাংলাদেশের ১০টি বিভাগের মধ্যে রাজশাহী বিভাগ একটি অন্যতম। রাজশাহী শহর বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম শহরও বটে। রাজশাহী শহরে রয়েছে একটি অসাধারণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেলওয়ে স্টেশন। আজকে আমরা রাজশাহীর সকল ট্রেনের সময়সূচী নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। রাজশাহী স্টেশন থেকে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন। আপনি যদি তাদের একজন হন, আমি আশা করি এই নিবন্ধটি আপনাকে রাজশাহী ট্রেনের সময়সূচী সম্পর্কে তথ্য পেতে সাহায্য করতে পারে।
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ, এদেশের মানুষ বেশির ভাগ ট্রান্সপোর্ট হিসেবে ব্যবহার করেন বাস বা ট্রেন। বাস বা ট্রেন জার্নির মধ্যে সুবিধার দিক দেখলে ট্রেন এগিয়ে। ট্রেনে যাতায়াতের সুবিধা গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কম ঝুঁকিপূর্ণ, দ্রুতগামী, ট্রাফিক জ্যামের মুখোমুখি হতে হয় না, আরামদায়ক, যাতায়াত খরচও কম, এছাড়াও রয়েছে কেবিনের ব্যবস্হা, নামাজ ঘড়,খাবারের ব্যবস্হা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ।
বাংলাদেশের উওরবঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং সুন্দর রেলওয়ে স্টেশন হলো রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন। যা সারা বাংলাদেশের যাতায়াত ব্যবস্হার সাথে যুক্ত। এটি রাজশাহী শহরের প্রাণকেন্দ্র অবস্হিত যা বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক পরিচালিত।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনটি সামনে থেকে দেখতে অনেকটা পাখির মতো। স্টেশনের প্রধান প্রবেশ পথে যেতেই চোখে পরে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি যা বিভিন্ন জায়গার যাএীদের আনানেওয়ার কাছে ব্যবহৃত হয়, এছাড়াও রয়েছে গাড়িসহ অন্যান্য যানবাহনের পার্কিংয়ের সুবিশাল জায়গা।
স্টেশনের প্রধান প্রবেশ পথ পার হলেই ভবনের ডান পাশে আছে বিশ্রামাগার এবং টিকেট কাউন্টার। বাম পাশে আছে পুরুষ যাত্রীদের জন্য আরেকটি বিশ্রামাগার, রেলওয়ে ইনকোয়ারি, খাবার হোটেল, বইয়ের দোকান এবং ২ টি ফাস্টফুডের দোকান। এ রেলওয়ে স্টেশনের মূল আকর্ষণ দেখতে গেলে এর যাতায়াত ব্যবস্হার রেলপথ কে কেন্দ্র করে নয় শুধু এর সাথে যুক্ত এর আকর্ষণীয় কাঠামোগত সৌন্দর্যও।কারণ এ প্লাটফর্ম এর ভিন্নতা এনে দিয়েছে এর বিশেষায়ীত সুবিশাল ছাদ। চিরাচরিত কনক্রিটের ছাদের পরিবর্তে একটু ভিন্নধর্মী প্লাস্টিক দিয়ে ত্রিভুজ আকৃতির কয়েকটি অংশ দিয়ে ছাদ তৈরি করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের মধ্যে একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রেলওয়ে স্টেশন।
মোট ৬ টি প্লাটফর্ম সহ প্রধান ভবনটি ৩ তলা বিশিষ্ট। বামপাশের দোতলাতে আছে মসজিদ আর দোতলা ও তিনতলাতে আছে একটি আবাসিক হোটেল। রেলওয়ে স্টেশন এর দুই পাশে দুইটি প্রবেশ পথ দিয়ে প্লাটফর্ম এ প্রবেশ করা যায়। এছাড়াও একটি প্লাটফর্ম আছে যা মূল স্টেশন ভবনের সাথে সরাসরি সংযুক্ত নয়। মূলত চাঁপাইনবাবগঞ্জ/রহনপুরগামী লোকাল ট্রেনসমূহ উক্ত প্লাটফর্মে থামে। স্টেশন ইয়ার্ডে ট্রেন ওয়াশ পিট ও ক্যরেজ শপ অবস্থিত। ওয়াশ পিটটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন তার ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে টিকে আছে এদেশের বিশেষ করে রাজশাহী বাসির অন্তরে।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনটি প্রথম চালু হয় ১৯৩০ সালে। স্টেশনের নাম রাখা হয়েছিলো ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে। এই স্টেশনটি আবদুলপুর-আমনুরা ব্রডগেজ লাইনটি সারা-সিরাজগঞ্জ লাইনের একটি শাখা হিসাবে খোলা হয়। তখন আবদুলপুর-আমনুরা শাখা লাইনের স্টেশন হিসাবে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন চালু হয়। ২০০৩ সালে স্টেশনের টার্মিনাল ভবন, প্ল্যাটফর্ম এবং ইয়ার্ডটি পুনর্গঠন এবং পুনঃনির্মাণ করা হয়।
সাপ্তাহিক বিরতির দিন বাদে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা, উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ট্রেন এই স্টেশনের মাধ্যমে চলাচল করে। রাজশাহী থেকে ট্রেনে খুলনা, নীলফামারী, চিলাহাটি, ঢাকা, গোয়ালন্দ ঘাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, পার্বতীপুর, ঈশ্বরদী, রহনপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যেতে পারেন।
ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। রাজশাহী এবং ঢাকার মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্প্রদায় রয়েছে। আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর মধ্যে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, পদ্মা এক্সপ্রেস, ধূমকেতু এক্সপ্রেস, বনলতা এক্সপ্রেস নামক চারটি ট্রেন ঢাকার পথে যাতায়াত করে। যার মধ্যে বনলতা এক্সপ্রেস একটি বিরতিহীন ট্রেন যা সরাসরি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী-ঢাকার মধ্যে চলাচল করে। ঢাকা-রাজশাহীর নতুন এই নতুন এই ট্রেনটি কোথাও থামবে না। ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সবুজ পতাকা নেড়ে ও বাঁশি বাজিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহী-ঢাকা রুটে বিরতিহীন আন্তঃনগর এক্সপ্রেস বনলতার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিছুদিন পর ১৭ই জুলাই ২০১৯ তারিখে ট্রেনটির রুট চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। যেহেতু আন্তঃনগর ট্রেনগুলো বিলাসবহুল, তাই বলা যায় আপনি রাজশাহী থেকে ঢাকা রুটে আরামদায়ক যাত্রা পাবেন।
বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনদুটি উত্তরবঙ্গের নীলফামারী জেলার চিলাহাটি পর্যন্ত যাতায়াত করে এবং বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনটি পঞ্চগড় জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করে। কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস ও মধুমতি এক্সপ্রেস – এই চারটি ট্রেন দক্ষিণবঙ্গের খুলনা, গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা পর্যন্ত যাতায়াত করে।
রাজশাহীর সকল আন্তঃনগর ট্রেনের নতুন সময়সূচী এবং সাপ্তাহিক বন্ধের তালিকা –
রেলের নম্বর | ট্রেন এর নাম | বন্ধের দিন | ছেড়ে যাওয়ার স্থান | ছেড়ে যাওয়ার সময় | গন্তব্য | পৌঁছানোর সময় |
৭১৬ | কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস | মঙ্গলবার | রাজশাহী | ২:১৫:০০ অপরাহ্ন | খুলনা | ৮:১০:০০ অপরাহ্ন |
৭৩১ | বরেন্দ্র এক্সপ্রেস | রবিবার | রাজশাহী | ৩:০০:০০ অপরাহ্ন | চিলাহাটি | ৯:২৫:০০ অপরাহ্ন |
৭৩৩ | তিতুমীর এক্সপ্রেস | বুধবার | রাজশাহী | ৬:৩০:০০ পূর্বাহ্ণ | চিলাহাটি | ১:০০:০০ অপরাহ্ন |
৭৫৪ | সিল্কসিটি এক্সপ্রেস | রবিবার | রাজশাহী | ৭:৪০:০০ পূর্বাহ্ণ | ঢাকা | ১:৩০:০০ অপরাহ্ন |
৭৫৬ | মধুমতি এক্সপ্রেস | বৃহঃস্পতিবার | রাজশাহী | ৮:০০:০০ পূর্বাহ্ণ | ভাঙ্গা | ০২:০০:০০ অপরাহ্ন |
৭৬০ | পদ্মা এক্সপ্রেস | মঙ্গলবার | রাজশাহী | ৪:০০:০০ অপরাহ্ন | ঢাকা | ৯:৪০:০০ অপরাহ্ন |
৭৬২ | সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস | সোমবার | রাজশাহী | ৬:৪০:০০ পূর্বাহ্ণ | খুলনা | ১২:১০:০০ অপরাহ্ন |
৭৭০ | ধুমকেতু এক্সপ্রেস | বুধবার | রাজশাহী | ১১:২০:০০ অপরাহ্ন | ঢাকা | ৪:৪৫:০০ পূর্বাহ্ণ |
৭৮০ | ঢালারচর এক্সপ্রেস | সোমবার | রাজশাহী | ৪:৩০:০০ অপরাহ্ন | ঢলারচর | ৮:১৫:০০ অপরাহ্ন |
৭৮৪ | টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস | সোমবার | রাজশাহী | ৩:৩০:০০ অপরাহ্ন | গোবরা | ১০:২৫:০০ অপরাহ্ন |
৭৯১ | বনলতা এক্সপ্রেস | শুক্রবার | রাজশাহী | ০৬:৩৫:০০ অপরাহ্ন | চাঁপাইনবাবগঞ্জ | ৭:৩০:০০ অপরাহ্ন |
৭৯২ | বনলতা এক্সপ্রেস | শুক্রবার | রাজশাহী | ০৭:০০:০০ পূর্বাহ্ণ | ঢাকা | ১১:৩০:০০ পূর্বাহ্ণ |
৮০৩ | বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস | শুক্রবার | রাজশাহী | ০৯:১৫:০০ অপরাহ্ন | বি.মু.সি.ই. (পঞ্চগড়) | ০৫:১০:০০ পূর্বাহ্ণ |
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর কমিউটার ও সাটল ট্রেনের সময়সূচী-
রেলের নম্বর | রেলের নাম | বন্ধের দিন | ছেড়ে যাওয়ার স্থান | ছেড়ে যাওয়ার সময় | গন্তব্য | পৌঁছানোর সময় |
৫৭ | রহনপুর কমিউটার | মঙ্গলবার | রাজশাহী | ৯:১৫:০০ পূর্বাহ্ণ | রহনপুর | ১১:১০:০০ পূর্বাহ্ণ |
৭৭ | রহনপুর কমিউটার | মঙ্গলবার | রাজশাহী | ৩:০০:০০ অপরাহ্ন | রহনপুর | ৪:৩০:০০ অপরাহ্ন |
৭৮ | ঈশ্বরদী কমিউটার | মঙ্গলবার | রাজশাহী | ৬:৩০:০০ অপরাহ্ন | ঈশ্বরদী | ৯:০০:০০ অপরাহ্ন |
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া মেইল/এক্সপ্রেস ও লোকাল ট্রেনের সময়সূচী-
রেলের নম্বর | রেলের নাম | বন্ধের দিন | ছেড়ে যাওয়ার স্থান | ছেড়ে যাওয়ার সময় | গন্তব্য | পৌঁছানোর সময় |
৫ | রাজশাহী এক্সপ্রেস | নাই | রাজশাহী | ৮:২৫:০০ অপরাহ্ন | চাঁপাইনবাবগঞ্জ | ১০:৩০:০০ অপরাহ্ন |
৬ | রাজশাহী এক্সপ্রেস | নাই | রাজশাহী | ১০:১৫:০০ পূর্বাহ্ণ | ঈশ্বরদী | ১২:৪০:০০ অপরাহ্ন |
১৫ | মহানন্দা এক্সপ্রেস | নাই | রাজশাহী | ৮:৪০:০০ অপরাহ্ন | চাঁপাইনবাবগঞ্জ | ১০:৪৫:০০ অপরাহ্ন |
১৬ | মহানন্দা এক্সপ্রেস | নাই | রাজশাহী | ৮:১৫:০০ পূর্বাহ্ণ | খুলনা | ৪:৪০:০০ অপরাহ্ন |
৩১ | উত্তরা এক্সপ্রেস | নাই | রাজশাহী | ১২:৩০:০০ অপরাহ্ন | পার্বতিপুর | ৮:০৫:০০ অপরাহ্ন |
১ কমেন্ট
রাজশাহী হতে চট্রগ্রাম কোনো ট্রেন কি আসা যাওয়া করে?আর কয়টায় সময় আসা যাওয়া করে কি কি বার?