রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা ঘিরে উত্তেজনার পারদ বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের গণসংযোগ কর্মসূচিতে ককটেল বিস্ফোরণের পর সেই আগুনে যেন ‘ঘি’ পড়েছে। হামলাকারী শনাক্ত না হলেও দোষারোপের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। এই প্রেক্ষাপটে বুলবুলকে কাছে পেয়ে বুকে জড়িয়ে ধরলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। রাজনৈতিক শিষ্টাচার রক্ষায় বুলবুলও জড়িয়ে ধরলেন লিটনকে। একে অপরকে বললেন- ‘শান্তির নির্বাচন চাই’।
বুধবার (১৮ জুলাই) দুপুরে রাজশাহী কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড মিলনায়তনে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত মেয়র এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা এই অভাবনীয় দৃশ্যের সাক্ষী হন।
ভোটের মাঠে যাই হোক না কেন, লিটন-বুলবুলের এই হৃদ্যতাপূর্ণ কোলাকুলিকে সাদরে অভিনন্দন জানান সবাই। তাদের মতে, এর মধ্য দিয়ে মেয়র প্রার্থী লিটন রাজশাহীর রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও মহানুভবতা ও সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
গত ৬ জুলাই রাজশাহী কলেজ মাঠে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের নির্বাচনী টকশোতে অংশ নেন লিটন ও বুলবুল। টকশো শেষে কোনো কথা না বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বুলবুল চলে যেতে কিছুদূর এগিয়ে গেলে লিটন তার দিকে এগিয়ে গিয়ে কোলাকুলি করেন। এ ঘটনায়ও সর্বমহলে প্রসংশিত হন খায়রুজ্জামান লিটন।প্রচার-প্রচারণার ব্যস্ততার মধ্যে বুধবার দুপুরে রাজশাহী কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড মিলনায়তনে রাসিক নির্বাচন-২০১৮ প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় নির্বাচন কমিশনার শাহাদত হোসেন চৌধুরী, নির্বাচন কমিশন সচিব, জেলা প্রশাসক ও মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ নির্বাচনের সব মেয়র, কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। সভার শেষের দিকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বক্তব্য দেন।
বিএনপির এ নেতা তার বক্তব্যে রাসিক নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহারসহ নানান অভিযোগ ও নির্বাচন কমিশনের কাছে তার প্রত্যাশা তুলে ধরেন। বুলবুলের বক্তব্য দেওয়ার পর মঞ্চে ওঠেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী লিটন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের শেষ দিন পর্যন্ত এমন পরিবেশ আমরা রাখতে চাই’।
সাত মিনিটের বক্তব্য শেষ করে মঞ্চের সামনে প্রার্থীদের নির্ধারিত স্থানে এসে লিটন হাত মেলান বুলবুলের সঙ্গে। এরপর কোলাকুলিও করেন। তারপর বুলবুল ও নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনের মাঝখানের সোফায় বসে যান লিটন।
এ সময় বুলবুলের পাশে বসে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক মেয়র মিজানুর হমান মিনু। খায়রুজ্জামান লিটনের এই রাজনৈতিক উদারতা ও সম্প্রীতির দৃশ্য দেখে হাততালি দেন উপস্থিত অন্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ২৪