মাত্র ৫ টাকায় শিক্ষার্থীদের দুপুরে ডালভাত খাওয়ানোর ‘প্যাকেজ’ চালু করেছেন রাজশাহীর আড়ানীর একজন হোটেল ব্যবসায়ী। পাঁচ বছর ধরে পাঁচ টাকায় শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার খাওয়াচ্ছেন তিনি।
পাঁচ টাকার প্যাকেজের কথা জিজ্ঞেস করতেই হোটেল মালিক বিপ্লব সরকার বলেন, গ্রামের অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে আসে না। অনেকের বেশি টাকা দিয়ে হোটেলে দুপুরের খাবার কিনে খাওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। তারা স্কুলে এসে টিফিনের সময় আশপাশের দোকান থেকে মুখরোচক কিছু একটা কিনে খায়। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অথচ দুপুরে এক প্লেট ভাত খেতে পারলে তাদের শরীর ভালো থাকে। এই চিন্তা থেকেই পাঁচ বছর আগেই এই প্যাকেজ চালু করেছি আমি।
বিপ্লব সরকার বলেন, শিক্ষার্থীদের কয়েকটি শর্তে খেতে দেই আমি। হোটেলের এই প্যাকেজ খেতে হলে অবশ্যই স্কুল ড্রেস পরে আসতে হবে। আর খাবার আগে বা পরে বাইরের দোকানে অন্য কোনো মুখরোচক খাবার খাওয়া যাবে না। আমি দেখেছি বেশির ভাগ বাচ্চা এক প্লেটের বেশি ভাত খেতে পারে না। ভাতের সঙ্গে সবজি আর ডাল দিয়ে এই প্যাকেজটি চালু করেছি। খাবার সময় কোনো বাচ্চা যেন সবজি নষ্ট না করে সেটিও আমি দেখি।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের শরীরের জন্য সবজির বড় প্রয়োজন। তাই তাদের সবজি খেতে বাধ্য করি। টমেটোর মৌসুমে টমেটোর সালাদ খেতে বাধ্য করি। এই প্যাকেজটির মূল্য পাঁচ টাকা। তবে পাশাপাশি খেতে বসে কোনো বাচ্চা যদি বেশি টাকা দিয়ে মুরগির মাংস খেতে চায়। তাহলে পাশের বাচ্চাটাকেও ছোট এক টুকরা মুরগির মাংস ও একটু ঝোল দেই। যাতে তার মন খারাপ না হয়। এসব আমি লক্ষ্য করি।
বিপ্লব সরকার বলেন, মনের আনন্দে এই কাজটি করছি আমি। সেবার মানসিকতা থেকে করছি। কারণ আমার এসএসসি পরীক্ষা দেয়া হয়নি। লেখাপড়া না করে কী ভুল করেছি এখন তা বুঝতে পারি। এজন্য যেসব শিশু লেখাপড়া শিখছে, তারা যেন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পারে, সেজন্য সাধ্যের মধ্যে যতটুকু পারছি সহযোগিতা করছি তাদের।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ জাগোনিউজ২৪