রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় প্রেমিকার ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে এক যুবকের ভাগ্যে জুটেছে খুঁটির সঙ্গে হাত বাঁধা অবস্থায় নির্মম নির্যাতন। প্রেমিকার আত্মীয়-স্বজনের নির্যাতনে জ্ঞান হারিয়েছেন ওই প্রেমিক।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার কলিগ্রামে প্রেমিকার বাবার বাড়িতে জনি নামের ওই যুবককে নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে জনিকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, স্কুলপড়ুয়া মেয়ের বাবা-মার অনুপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাঘা উপজেলার বাঘা পৌরসভায় ৩ নম্বর ওয়ার্ড কলিগ্রামের নবাব মন্ডলের বাড়িতে যায় একই গ্রামের কালাম উদ্দীনের ছেলে জনি। বাড়িতে স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে এক পেয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে জনি। এ সময় স্কুলছাত্রীর চাচা-চাচি ওই বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে বিষয়টি দেখে ফেলে। পরে তারা খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে জনির হাত বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
তাদের পিটুনিতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে জনি। নির্যাতনের খবর পেয়ে এলাকার লোকজন ওই বাড়িতে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। এলাকার লোকজনকে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করতে না দিয়ে জনিকে নির্মম নির্যাতন করা হয়।
নির্যাতনের খবর পেয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বাঘা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর আলম বাবু ঘটনাস্থলে গিয়ে খুঁটির সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় জনিকে দেখেন এবং বাঘা থানা পুলিশকে খবর দেন।
বাঘা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মুঞ্জুরুল ইসলাম জনিকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে কর্মরত চিকিৎসক আখতারুজ্জামান জনিকে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠান।
জানা যায়, স্কুলছাত্রীর চাচা বিচ্ছাদ মন্ডল, আরেক চাচা জিল্লুর মন্ডল, তার স্ত্রী মাতোয়ারা বেগম, স্কুলছাত্রীর মা সীমা বেগমসহ অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন জনিকে নির্যাতন করেন।
জনির বাবা কালাম উদ্দিন শুক্রবার বাঘা থানায় নির্যাতনের অভিযোগ করেন। ছেলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, প্রেমের ডাকে সাড়া দিয়ে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়েছিল জনি। ছাত্রীটি তার মা-বাবার অনুপস্থিতির সুযোগে জনিকে ডেকে নেয়।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে স্কুলছাত্রী জানায়, আমার সঙ্গে জনির কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। বাড়িতে এসে আমার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছিল জনি।
স্কুলছাত্রীর বাবা নবাব আলী বলেন, চিকিৎসার জন্য স্ত্রীকে নিয়ে স্থানীয় ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম আমি। বাড়িতে ফিরে জনিকে বাঁধা অবস্থায় দেখেছি। ওই যুবক অনেক আগে থেকেই আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতো।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাঘা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসীন আলী বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এ ঘটনায় কেউ মামলা করেনি।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ জাগোনিউজ২৪