রাজশাহী নগরীর তীর ঘেষে বয়ে চলা এক সময়ের প্রমত্তা পদ্মার বুক জুড়ে এখন শুধুই ধু ধু বালুচর। আর নদীর এই দুর্দশাকে কাজে লাগিয়ে এর তীরে চলছে দখল ও দুষনের হিড়িক। নগরবাসীর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও নদীটিকে ধিরে-ধিরে গ্রাস করতে চলেছে। আর দ্বায় এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন একে অন্যের দায়িত্বের কথা বলছে।
সরেজমিনে নগরীর আলুপট্টি, টি-বাঁধের পূর্ব দিক, কোর্ট এর পশ্চিমের নদীর তীর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন প্লাস্টিক, নির্মাণ সামগ্রির ভগ্নাংশ ইট, প্লাস্টারসহ বালু, মাটি, বাসা বাড়ির ময়লা আবর্জনা ও খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেলা হচ্ছে নদীর তীরে। অনেক সময় রাসিকের পরিচ্ছন্ন কর্মীরাও সচেতনতার অভাবে ভ্যানে করে বাসা-বাড়ির উচ্ছিষ্ট নদী তীরে ফেলছে। আর এর মধ্য দিয়ে নদী তীরটি ধিরে-ধিরে ভরাট করার পায়তারা চলছে। বেশ কিছু জায়গা এরই মধ্যে এভাবে ভটার করা হয়েছে। আর সে জায়গাগুলো এখন দখল নিয়ে রেখেছে স্থানীয়রা। আর নদী তীরে সেই জায়গাগুলোতে কেও দাড়াতে গেলে স্থানীয়রা নানা ভাবে দর্শনার্থীদের উত্যক্ত করে। বিশেষ করে অবৈধ দখল নেয়া ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান থেকে কোন খাবার না কিনলে দর্শনার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। আর খাবার কেনার পর তা খেয়ে শেষ করতে না করতেই দর্শনার্থীদের উঠে যেতে বলেন। এছাড়া নদী তীরের কিছু স্থান অবৈধ ভাবে দখল নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে পাকা বাড়ি। নদীর বাঁধের দক্ষিণে দখলের বিধি নিষেধ থাকলেও সেখানে গড়ে উঠেছে আবসস্থল।
এদিকে নদী তীরের আশপাশের বাড়িগুলোর সোয়ারেজ (টয়লেট) লাইন দিয়ে মলমুত্র নদীতে ফেলা হচ্ছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে নদী দুষণ। এই দুষণের কারণে নদীতে সরু হয়ে বয়ে চলা পানি এখন কালো বর্ণ ধারণ করেছে। সেই পানিতে এখন দুর্গন্ধ। এই চিত্র বিস্তীর্ণ নদী তীরের অধিকাংশ স্থানেই।
স্বপরিবারে নদী তীরে ঘুরতে আসা আয়নাল হক অভিযোগ করে বলেন, আট-দশ বছর আগেও নদীর চেহারা ছিলো ভিন্ন। তবে এখন নানা কারণে আমাদের বিশাল পদ্মা মৃতপ্রায়। আর নদীর এই মৃত্যুকে কাজে লাগিয়ে দখলদারেরা তাদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে। এখন নদী তীরে আসলে দখলদার ও ব্যবসায়ীদের দৌরাত্মে এখানে বেশিক্ষণ টেকা যায় না। একই অভিযোগ করে নদী এলাকার বাসিন্দা সরেন মল্লিক বলেন, বাসা বাড়ির মলমূত্র পাইপ লাইন দিয়ে নদীতে ফেলা হচ্ছে। সেই সাথে নদীর তীর ভরাটের উদ্দেশ্যে সেখানে রাবিশসহ বিভিন্ন বস্তু ফেলা হচ্ছে। পরবর্তিতে সে জায়গাটা দখল নেয়ার উদ্দেশ্যে এটি পরিকল্পিত ভাবেই করা হচ্ছে। আর এই অন্যায়ের সবকিছুই ঘটছে প্রকাশ্য দিবলোকে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine