রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছে। মহামারী না হলেও এটা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন তারা।
সবমিলিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন ১০ জন। এরমধ্যে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ইউনিট ডেঙ্গু কর্ণারে ৭ এবং ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ৩ জন।
হাসপাতালের সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ বলছেন, ভর্তি হওয়া দশজনের কারো অবস্থাই ভাল নয়। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
হাসপাতালের ডেঙ্গু কর্ণারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দুইটি রুমে ৭ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের সবাই নানা প্রয়োজনে ঢাকায় থাকতেন। কিংবা ঢাকায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। আর এতেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন তারা। এছাড়া ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন তিনজন। তারাও ঢাকায় থাকার সুবাদে এতে আক্রান্ত। বুধবার হাসপাতালে এ রোগী ভর্তি হয়েছে তিনজন। মোট দশজনের সবাই গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভর্তি হয়েছেন এখানে।
সিরাজগঞ্জে নানার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় তিন বছরের এক কন্যাশিশু। সেখানেই ডেঙ্গুর শিকার হয় সে। তার বাড়ি রাজশাহীর বালিয়াপুকুর এলাকায়। এসব কথা বলছিলেন ওই শিশুর পিতা।
তিনি জানান, সিরাজগঞ্জে ডেঙ্গু ধরা পড়ার পর সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসা চলে। পরে গত পরশু (২৩ জুলাই) রাতে রামেকে তার মেয়েকে ভর্তি করা হয়। আজ (২৪ জুলাই) ভালোভাবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আবার তার পরীক্ষা দিয়েছে ডাক্তাররা।
জেলার চারঘাটের তাজমুল হোসেন। তিনি ঢাকায় থাকতেন বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরির সুবাদে। এক পর্যায়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তিনি। একমাসের মধ্যে দুইবার তার ডেঙ্গুর আলামত ধরা পড়ে।
গত ৩০ জুন প্রথমে ঢাকায় ধরা পড়ে তার ডেঙ্গু হয়েছে। সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসার পর কিছুটা সেরে যায়। কিন্তু বিশদিন পর আবার জ্বর, মাথা ব্যাথা শুরু হয়। তাই বাড়ি এসে রামেকে ভর্তি হয়েছেন।
ডেঙ্গু নিয়ে নাটোরের গুরুদাসপুরের ভর্তি আছেন তিনজন। যাদের দুইজন চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকতেন।
মানিক নামের অন্যজন গুরুদাসপুরেই থাকেন। জুয়েলারীর কাজ করেন। প্রয়োজনে প্রায় সপ্তাহেই ঢাকা যেতেন তিনি। এভাবেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন মানিক। প্রচন্ড জ্বরের কারণে প্রথমে নাটোরে এক ডাক্তারের কাছে এবিষয়ে কথা বলেন। পরে রাজশাহীর একটি ক্লিনিকে পরীক্ষার পর নিশ্চিত হন। গত শুক্রবার ভর্তি হয়ে রামেকের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে তার চিকিৎসা চলছে। এছাড়া গুরুদাসপুরের অন্য দু’জন ভর্তি আছেন ডেঙ্গু কর্ণারে।
ডেঙ্গু কর্ণারের ভর্তিকৃত ৭ জনের কারো অবস্থাই ভালো নয় বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স মনোয়ারা খাতুন। তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে এখানে ৭ রোগী ভর্তি আছে। তাদের কারো অবস্থাই ভালো নয়। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এবিষয়ে হাসপাতালের উপ-পরিচালক (অর্থ ও ভান্ডার) ডাক্তার আলী আকবর খান জানান, এর আগে এখানে চারজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছিল। তাদের সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। এখন যারা ভর্তি আছে, আমরা তাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিচ্ছি।
ভর্তিকৃত সবার সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের সবাই নানা প্রয়োজনে ঢাকায় থাকতেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ী, পুঠিয়া, নওগাঁ জেলা, নাটোর জেলা থেকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তারা এখানে ভর্তি হয়েছেন।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine