২০১৮ সালের ৩০ জুলাই রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বিজয়ী হন। রাজশাহীবাসীর কাছে স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হিসেবে পরিচিত। তবে, তিনি দায়িত্বগ্রহণ করেছিলেন ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর। তবু নির্বাচনের বিজয়ী হওয়ার পর থেকে রাজশাহীবাসী আধুনিক ও মেগা রাজশাহীর স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন।
ইতোমধ্যেই রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সুদক্ষ হাতে রাজশাহী উন্নয়নের মহাসড়কে রকেট গতিতে ছুটছে। রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বিজয়ী হওয়ার পর থেকে রাজশাহীতে পরিস্কার করার উপরে সবচেয়ে বেশ গুরুত্ব দিয়েছেন।
তার উদ্যোগের কারণে রাত ১১টা বাজতেই ঝাড়ু হাতে রাস্তা পরিষ্কারের কাজে নেমে পড়েন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। ভোরের আলো ফুটতেই জেগে ওঠে সবুজ শান্তির পরিচ্ছন্ন শহর রাজশাহী। এক বছর আগেও পদ্মাপাড়ে সকালে হাঁটতে যেতে দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চাপতে হতো মানুষকে। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে পাল্টে গেছে সেদিন।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি নতুন রাস্তাঘাট, নগরীতে জেনারেল এবং স্পেশালাইজ হাসপাতাল, হজরত শাহ মখদুম বিমানবন্দর সম্প্রসারণ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং টেকনিক্যাল সুবিধা বাড়ানো হবে, নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, গণপরিবহন, রাস্তার আলোকায়ন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল ও ফ্লাইওভার প্রকল্প নিয়েছে সিটি করপোরেশন। ৫০ বছরের মহাপরিকল্পনা আর এসব প্রকল্পের অগ্রগতিতে ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে সবুজনগরী রাজশাহী।
২০১৩ সালে লিটন পরাজিত হন। এরপর পরিচ্ছন্নতায় মন ছিল না রাসিকের। তবে আবারও রাসিক সূত্রে জানা যায়, নগরীর সড়ক উন্নয়নে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। নগরীর যানজট মোকাবিলা ও নগরবাসীর যাতায়াত নির্বিঘ্নে করতে ১৫টি সড়ক নিয়ে এই পরিকল্পনা নেয়া হয়। এর আওতায় প্রতিটি সড়ক ৪২ মিটার চওড়া করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর সড়কগুলোকে ঢেলে সাজানো হবে। বাকি আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে ভূমি অধিগ্রহণে। এসব কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।
রাজশাহীর বিভিন্ন খাতে ব্যাপক উন্নয়নে মাস্টার প্ল্যানও তৈরি করা হচ্ছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে চীনের বৃহত্তর কোম্পানি চায়না পাওয়ার। এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে চায়না পাওয়ারের একটি প্রতিনিধি দলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জ্যুয়ো রাজশাহীতে এসে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেছিলেন। এরপর তিনি চীনের বৃহত্তর একটি কোম্পানি চায়না পাওয়ারকে রাসিকে পাঠান।
এ বছরের ৩১ জানুয়ারি কোম্পানিটির সঙ্গে বৈঠক হয় রাসিক মেয়রের। কোম্পানিটি মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে রাজশাহীর উন্নয়ন করার কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।
চীনের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী রাজশাহীতে নির্মাণ করা হবে ইকোপার্ক ও সায়েন্স সিটি। হজরত শাহ মখদুম বিমানবন্দর সম্প্রসারণ এবং অবকাঠামো উন্নয়ন ও টেকনিক্যাল সুবিধা বাড়ানোর পরিকল্পনাও শুরু হয়েছে।
এ ছাড়া স্যুয়ারেজ ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে চায়না পাওয়ার নামে চীনের একটি প্রতিষ্ঠান। ফলে উন্মোচিত হয়েছে মাস্টার প্ল্যানে রাজশাহীর উন্নয়নের ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার। ৫০ বছর দীর্ঘমেয়াদি মাস্টার প্ল্যানটি বাস্তবায়ন হতে শুরু করেছে।
রাসিকের আয়তন বাড়ানোর পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই নগর পিতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নাগরিক সেবার পরিধি বৃদ্ধি এবং পরিকল্পিত নগরায়নের লক্ষ্যে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) সীমানা বৃদ্ধির বিষয়টি নজর দেন। ইতোমধ্যে অনেকখানি কাজ এগিয়েও গেছে।
মহানগরীর আয়তন হবে ৩৫০ কিলোমিটার। যা বর্তমানে রয়েছে ৯৬ দশমিক ৭২ বর্গ কিলোমিটার। আধুনিক নগরায়নের বিষয়টি মাথায় রেখে মহানগরীকে বর্তমানের চেয়ে তিনগুণ বেশি বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে রাজশাহী অপরিকল্পিত নগরায়ন হতে রক্ষা পাবে। ফলে নাগরিক সেবার পরিধি বৃদ্ধি পাবে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine