রাজশাহীতে অতিরিক্ত বৈদ্যুতিক লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। দিনে-রাতে অন্তত ৭/৮ বার চলছে বিদ্যুতের যাওয়া আসা। ফলে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মানুষ। এতে জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছে, তেমন লোডশেডিং নেই। যেটুকু হচ্ছে সেটাও লাইন সংস্কার বা অন্যান্য কারণে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।
তবে রাষ্ট্রায়ত্ব বিদ্যুৎ সরবরাহ সংস্থা নেসকোর এমন কথা মানতে নারাজ নগরবাসী। নগরবাসী বলছেন, রাতেও বিদ্যুতের লাইন মেরামত বা সংস্কার হয় নাকি? তাহলে রাতে কেন এত লোডশেডিং হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে রাজশাহী মহানগরজুড়ে বিদ্যুতের ভেলকিবাজি লেগেই আছে। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। দিন-রাত উভয় সময়েই বিদ্যুতের লোডশেডিং হচ্ছে সমানতালে।
একদিকে প্রচুর গরম, অন্যদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং। দুইয়ে মিলে নগরবাসী ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। এ নিয়ে নেসকোর গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বছরের অন্য সময়ে গ্রামাঞ্চলে সেচ সুবিধা দেয়ার জন্য বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়ার কথা বলা হলেও বর্ষা মৌসুমে এমন সুযোগ নেই। তারপরও লোডশেডিং। দেশে নাকি বিদ্যুতের ঘাটতি নাই, তাহলে লোডশেডিং কেন? এমন প্রশ্ন নিয়ে গ্রাহকরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, গত ৩/৪ দিন ধরে নগরীতে অসহনীয়ভাবে লোডশেডিং বেড়েছে। দিনরাত মিলিয়ে ৭/৮ বিদ্যুতের লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে একদিকে, মানুষ যেমন গরমে কষ্ট পাচ্ছেন; অন্যদিকে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় জিনিস ফটোকপি বা কম্পোজ করতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকছে। এছাড়াও অফিস-আদালতের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সময়মত ফটোকপি করতে না পারায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এ নিয়ে তাদের ক্ষোভের যেন শেষ নেই।
নগরীর টিকাপাড়া এলাকার রাব্বি নামের এক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যুৎ যেভাবে আসছে-যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে নেসকো থেকে বিল নেবে না। তারা জনগনকে ফ্রি সার্ভিস দিচ্ছেন। যখন ইচ্ছা তখন বিদ্যুৎ টেনে নিচ্ছেন। এভাবে চলতে পারে না। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। খতিয়ে দেখা দরকার বিদ্যুতের এত লোডশেডিং কেন হচ্ছে?
আব্দুল্লাহ নামের আরেক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, দিনরাত মিলিয়ে ৮/১০ বারের বেশি সময় ধরে লোডশেডিং হচ্ছে। টাকা দিয়ে কেনা বিদ্যুতের এমন হাল হবে কেন? বর্ষা মৌসুমে বিদ্যুতের এত লোডশেডিং মেনে নেওয়ার মত নয়। এদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ আদায় করতে হবে।
নগরীর হড়গ্রাম এলাকার সাইফ নামের একব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, এ এলাকায় আরো বেশি বিদ্যুতের লোডশেডিং হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের মধ্যে পড়ে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। গরমের মধ্যে এমন লোডশেডিং কাম্য নয়।
লোডশেডিং নেই এমনটা কর্তৃপক্ষ দাবি করছে জানালে তিনি বলেন, হয় কর্তৃপক্ষ প্রকৃত সত্য জেনেও সত্যকে আড়াল করার জন্য এ কথা বলেন, না হয় তারা দেখেন না।
বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়ে অভিযোগ ও ক্ষোভ শুধুমাত্র রাব্বি, আব্দুল্লাহ ও সাইফের না। এটা নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে নগরীর প্রায় প্রত্যেক গ্রাহকের মনেই।
এ বিষয়ে নেসকোর তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দায়িত্বপ্রাপ্ত শিরিন ইয়াসমিন বলেন, লোডশেডিংতো নেই। লাইন সংস্কার বা মেরামতের জন্য কিছু সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে।
রাতেও কি কাজের জন্য বিদ্যুতের লোডশেডিং হয়? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, রাতে কোন মেরামতের কাজ হয়না।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ Daily Sunshine