রাজশাহী নগরীর শেষ প্রান্ত সিটি হাট এলাকার প্রধান সড়ক। রাস্তার দক্ষিণ-পূর্বের নিচে দীর্ঘ মাঠ চারিদিকে বিস্তীর্ণ সবুজ শাক-সবজির খেত। একটু সামনে এগিয়েই নতুন রাস্তা সাথে রয়েছে নতুন রেলিং। রাস্তায় পাশের খেতে নানান শাক-সবজির যত্ন নিতে ব্যস্ত কৃষক।
এলাকার সবজি চাষী কৃষক সজিব জানালেন, নতুন রাস্তা ও রেলিং হওয়াতে এ এলাকার মানুষের অনেক উপকার হয়েছে। পাশের ড্রেন দিয়ে শহরের পানির চলাচলের ব্যবস্থা থাকবে ও এলাকার মানুষের চলাচলে নতুন রাস্তাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নানা সুবিধাও পাচ্ছে স্থানীয় জনসাধারণ। শহরের মাঝে সবজিখ্যাত এই এলাকার টন কে টন সবজির আবাদে নতুন রাস্তার সুবাদে অনেক উপকার পাচ্ছেন কৃষকরা। এমনটাই জানাচ্ছিলেন সবজি চাষী কৃষক কাশেম আলী ও শরিয়ত। একটু এগিয়ে যেতেই আরেক কৃষক মহসিন জানান, আগে রাস্তা না থাকায় ব্যাপক দুর্ভোগে পোহাতে হয়েছে। কাঁদা মাটি পেরিয়ে প্রধান রাস্তায় উঠতে হয়েছে। শাকসবজি বহনের গাড়ি প্রধান সড়কে রেখে মাল নিয়ে যেতে হয়েছে। আর শহরের সব পানি এই রাস্তা দিয়েই নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগে মাঝে মাঝেই ড্রেনের পানি আটকে রাস্তায় জমে থাকতো। আমাদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। কিন্তু এর মাঝে মেয়র সাহেব এই রাস্তাটি করে আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে। কৃষক শেখ আব্দুল বারেক জানান, আগে বাচ্চারা স্কুলে গেলে পানি ডিঙ্গিয়ে মাঝে মাঝে বাড়িতে আসতে হয়েছে। কিন্তু এখন এই রাস্তা দিয়ে সহজে স্কুলে যাচ্ছে বাচ্চারা। আমরা সহজে কৃষিপণ্য সহজেই গন্তব্যে নিতে পারছি।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর নাহার একাডেমি থেকে শুরু করে সিটি হাট এলাকা পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তাটি ব্যাপক সুবিধা সৃষ্টি করেছে সংলগ্ন হজার হাজার মানুষের জন্য। রাস্তায় গাড়ি রেখে ড্রেনের বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে নিয়মিত। এতে শহরের মাঝে ড্রেনের পানি দ্রুত চলাচল করবে। শহরের জলাবন্ধতা নিরশনে রাস্তাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
রাজশাহী সিটি কপোরেশন সূত্র মতে, রাজশাহী নগরীর সকল ওয়ার্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতে এখন উন্নয়নের কাজ চলছে। অন্যদিকে বাদ যাচ্ছে না নগরীর শেষ জায়গা গুলোও। সকল গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলোকে এখন নতুন ভাবে ঢেলে সাজনো হচ্ছে। তার মাঝে এই রাস্তাটিও রয়েছে।
রাসিক-এর প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানান, নগরীর সকল জায়গায় উন্নয়নের কাজ চলছে। এর মাঝে সিটি হাট এলাকার প্রধান রাস্তা-সংলগ্ন ড্রেন দিয়ে শহরের কিছু অংশের পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। জলাবন্ধতা নিরসনে ওই ড্রেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নগরীর রাস্তাগুলোও এখন চওড়া করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। কাজটি শেষ হবে ২০২০ জুন। ৯ কিলোমিটার রাস্তা এবং তিন ধরনের ড্রেন নিয়ে ১০০ কিলোমিটার ড্রেনের কাজ হচ্ছে। এর মাঝে মোট ১০ একর জায়গা ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। যার মোট বাজেট ১৯৩ কোটি টাকা।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ দৈনিক সানশাইন