সৃষ্টিকর্তার পরেই চিকিৎসকদের বিশ্বাস করেন রোগীরা। মৃত্যুর দুয়ার থেকে রোগীকে ফিরিয়ে আনেন চিকিৎসকরা। এজন্য সত্যিকারের হিরো তারাই।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়েছে সর্বত্র। বাদ পড়েনি রাজশাহীও। পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে করোনা যুদ্ধে মাঠে নেমেছেন রাজশাহীর একদল চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী।
জানা গেছে, করেনা নিয়ে সাধারণ রোগীরা আতঙ্কিত। করোনার প্রাথমিক উপসর্গের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় জ্বর, সর্দি-কাশি কিংবা শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে এসে পালিয়েছেন রাজশাহীর পাঁচ রোগী। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন রাজশাহী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীদের করোনাভীতি দূর করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে তারা।
এরই মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডে শোভা পাচ্ছে, ‘করোনা নিয়ে ভয় নেই, হিরোরা এখানে কাজ করেন।’ করোনা যুদ্ধের লড়াকু যোদ্ধা চিকিৎসকদের উৎসাহ দিতেই অভিনব এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এতে করোনাভাইরাস নিয়ে রোগীসহ সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হলে চিকিৎসা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এদিকে রামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্যাথলজি ইউনিটে চালু হচ্ছে দ্বিতীয় করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ ল্যাব। এজন্য প্রস্তুত চিকিৎসক, নার্স ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট।
গত ১ এপ্রিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগে চালু হয়েছে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের প্রথম ল্যাব। বিভাগের আট জেলার করোনা শনাক্তে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে প্রতিদিন। এরই মধ্যে দুজনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে।
রামেকের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. বুলবুল হাসান ও ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাবেরা গুলনাহারের নেতৃত্বে পাঁচ চিকিৎসকের একটি দল এখানে কাজ করছেন।
এছাড়া সন্দেহভাজন রোগীদের চিকিৎসা চলছে রামেক হাসপাতালের অধীনে সংক্রমক ব্যাধি হাসপাতালে।
করোনা চিকিৎসায় রামেক হাসপাতালে গঠন করা হয়েছে ১৫ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মেডিকেল টিম। হাসপাতালে আসা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন রোগীদের নিরলস সেবা দিচ্ছেন হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আজিজুল হক আজাদের নেতৃত্বাধীন মেডিকেল টিম।
সবখানেই চিকিৎসক-নার্স, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন নিরলসভাবে।করোনামুক্তির এই লড়াইয়ে হিরোর ভূমিকায় রয়েছেন তারা।
রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, চিকিৎসকদের পাশাপাশি জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে বিলবোর্ডে এমন স্লোগান যুক্ত করা হয়েছে। আশা করি, এতে সবার আতঙ্ক দূর হবে, সাহস বাড়বে।
স্বাস্থ্য দফতরের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় চিকিৎসক-নার্স, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পৃথক পৃৃথক টিম গঠন করা হয়েছে। সরাসরি করোনা সেবাদানকারী চিকিৎসক-নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবার থেকে একেবারেই আলাদা রাখা হয়। মানবতার সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করেছেন তারা। আসলে তারাই তো সত্যিকারের হিরো।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ জাগোনিউজ২৪