করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় গত ২৫ মার্চ থেকে সারা দেশের সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছে। তবে ঈদের পর সীমিত আকারে পশ্চিমাঞ্চলে ট্রেন চালু হতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে পুনরায় ট্রেন চলাচল চালু করা যায়, তা নিয়ে ইতোমধ্যে স্টেশনগুলোতেও প্রস্তুতি চলছে। তবে পশ্চিম রেলে ট্রেন ছাড়তে হলে মানতে হবে ১৯ দফা নির্দেশনা।
এর অংশ হিসেবে রাজশাহী রেল স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে গোল গোল করে বৃত্ত এঁকে দেওয়া হয়েছে। ট্রেন চালু হলে যাতে স্টেশনে আসা যাত্রীরা টিকিট কাটার জন্য তিন ফুট দূরত্বে অবস্থান করতে পারেন, সেজন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ভবিষ্যতে লকডাউন শিথিল ও প্রত্যাহার করার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অফিস শুরু ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন চলাচল বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে ১৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। পশ্চিামাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার মিহির কান্তি গুহ এমন এমন একটি চিঠি গত ৯ মে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগীয় প্রধানের কাছে পাঠিয়েছেন। এর একটু অনুলিপি রেলওয়ে মহাপরিচালক বরাবরও পাঠানো হয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে পশ্চিমাঞ্চাল রেলওয়ের ওই ১৯ দফা নির্দেশনায় বলা হয়েছে- ট্রেন চালু হলে রাজশাহী স্টেশনের প্রবেশপথে ডিজইনফেকশন (জীবাণুমুক্তকরণ) চ্যানেল বসানো, যাত্রীদের নিজ দায়িত্বে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম ও টিকিট কাউন্টারে সামাজিক/শারীরিক দূরত্ব বজায় ও জীবাণুমুক্ত করা এবং যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষাসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়- পরীক্ষামূলকভাবে রাজশাহী স্টেশনের প্রবেশপথে ডিজইনফেকশন চ্যানেল বসাতে হবে, সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করতে হবে এবং তা ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, যাত্রীরা নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে ট্রেনে ভ্রমণ করবেন। এ বিষয়ে টিকেট বিক্রয়কালে টিকেটের ওপর নির্দেশনামূলক সিলমোহর ব্যবহার করতে হবে।
ওয়াশপিট ও স্টেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি স্থান নির্ধারণ করতে হবে এবং সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নিতে হবে, কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রতিটি যাত্রীবাহী ট্রেনে একটি করে ডিব্লিউইসি/উব্লিউই/এস আইসোলেট করে সংযোজন করতে হবে, প্ল্যাটফর্ম ও টিকিট কাউন্টারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য এক মিটার দূরে দূরে গোলাকার বৃত্ত আঁকতে হবে।
যাত্রী ও রেল কর্মচারীদের করণীয় সম্পর্কে প্রচারণার জন্য পোস্টার তৈরি, বায়ু চলাচল বাড়ানোর জন্য সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে তা স্বাভাবিক মাত্রায় চালানো এবং বিশুদ্ধ বাতাস চলাচল বাড়ানো, সব এয়ার সিস্টেমের ফিরতি বাতাস বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রতিটি ট্রেন প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে ছাড়ার আগে এবং গন্তব্যে পৌঁছার পর ট্রেনের সব হাতল, ছিটকিনি, টয়লেট ও মেঝে জীবাণুমুক্ত করতে হবে এবং যাত্রী আসনের হেডরেস্ট কভার প্রতিদিন পরিবর্তন করতে হবে। প্রতিটি কোচের প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ নির্দিষ্ট করে স্টিকার লাগাতে হবে।
প্রতিদিন কর্মীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক অবস্থা নথিভুক্ত করতে হবে এবং যারা অসুস্থ অনুভব করবে তাদের সঠিক সময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে। যাত্রীদের অপেক্ষা করা স্থান, ট্রেন কম্পার্টমেন্ট ও অন্য এলাকা যথাযথভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের সরঞ্জামাদি রেল স্টেশনের প্রবেশপথে স্থাপন করতে হবে। স্টেশনে আগত সবার তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। যাদের শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকবে তাদের ওই এলাকায় অস্থায়ী কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে এবং প্রয়োজন মতো চিকিৎসা সেবা দিতে হবে।
এছাড়া, যদি নিশ্চিত কোভিড-১৯ এর রোগী পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে টার্মিনালগুলো স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ