রেলওয়ের ইতিহাসে একটানা ৬৬ বন্ধ থাকার পর রোববার (৩১ মে) সকাল ৭টায় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেলো একমাত্র বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন বনলতা এক্সপ্রেস।
এর আগে গত ২৫ মার্চ থেকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সব রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে জীবাণুনাশক কক্ষের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ, হাত স্যানিটাইজেশন ও নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ ১৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে যাত্রীদের প্রথমবারের মতো ট্রেনে উঠতে হয়েছে। যাত্রার আগে ওয়াশপিটে পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি জীবাণুমুক্ত করা হয় ট্রেনের ভেতর ও বাইরে।রোববার সকালে রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীরা সুশৃংখলভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। তবে ট্রেনে ওঠার সময় কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এ সময় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও জিআরপি থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব মেনে ট্রেনে ওঠার বিষয়টি নিশ্চিত করে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে নির্ধারিত সময়েই ছেড়েছে বনলতা এক্সপ্রেস। এছাড়া ট্রেনের মধ্যে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য একটি সিট ফাঁকা রেখে আরেকটি সিটের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। তাই নতুন সিট প্ল্যান অনুযায়ী ফাঁকা ফাঁকা করে কভার যুক্ত সিটে বসে ভ্রমণ করতে পেরেছেন রেলওয়ে যাত্রীরা। ট্রেনের মধ্যে কোনো হকার উঠতে দেওয়া হয়নি আজ।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক আব্দুল করিম জানান, প্রাথমিকভাবে রোববার বনলতা এক্সপ্রেসসহ চারটি ট্রেন চলাচল শুরু হলো। ৩ জুন দ্বিতীয় দফায় কিছু রুটের ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
করোনা ভাইরাস মহামারিতে যাত্রী সুরক্ষার দিক বিবেচনা করে ট্রেনের সব (১০০%) টিকিটই অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়। এছাড়া স্বাস্থবিধি মেনে ট্রেনের মোট আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশের টিকিট বিক্রি হচ্ছে।
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শনিবার (২৯ মে) বিকেল থেকে অনলাইনে শুরু হচয় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের টিকিট বিক্রি। প্রথম দফায় রাজশাহী-ঢাকা রুটের বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন বনলতা এক্সপ্রেস (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা), লালমনি এক্সপ্রেস (লালমনিরহাট-ঢাকা) ও চিত্রা আন্তঃনগর এক্সপ্রেস (খুলনা-ঢাকা) ট্রেনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চলাচলের জন্য পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।এদিকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) ফুয়াদ হোসেন আনন্দ বলেন, করোনার সংক্রমণরোধে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে শতভাগ টিকিট অনলাইে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৪টি ট্রেনের টিকিট মিলছে। এসব ট্রেন আগের সময় অনুযায়ী গন্তব্যে যাবে এবং আবার নির্ধারিত স্থানে ফিরে আসবে।
তিনি আরও বলেন, ট্রেনের মোট আসন সংখ্যার অর্ধেক আসনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে এটি করা হচ্ছে। তবে টিকিট মূল্য অপরিবর্তিত থাকছে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ