আজ শনিবার বেলা একটার ঠিক একটু আগে। রাজশাহী নগরের শিরোইল এলাকায় রেলওয়ে অফিসার্স মেস ভবনের সামনে হঠাৎ অনেক মানুষের ভিড়। সব মানুষের চোখ ড্রেনের কালো পানির দিকে। ড্রেনে নেমে পাঁচ থেকে সাতজন কিছু একটা ধরার চেষ্টা করছেন। প্রাথমিকভাবে অন্যরা ধরেই নিলেন, ড্রেনে নামা ব্যক্তিরা মাছ ধরছেন। তবে একটু পরই জানা গেল, তাঁরা মাছ নয়, ভেসে যাওয়া টাকা ধরছেন।
ড্রেনটির পানিপ্রবাহ শিরোইল থেকে ভদ্রার দিকে। দ্রুতগতিতে পানি চলে যাচ্ছে। সেই পানি থেকে কেউ এক হাজার টাকার নোট, কেউ ৫০০ টাকা, এমনকি পাঁচ টাকাও তুলছিলেন। পানিতে কাগজের কিছু ফাইল ভেসে যাচ্ছিল। সেসব কাগজের ভেতর থেকেও টাকা বেরিয়ে আসছিল। কাগজগুলো রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপ কার্যালয়ের।

১৫ বছরের রংমিস্ত্রি দিপু ড্রেন থেকে এক হাজার টাকার একটি নোটসহ বেশ কিছু টাকা কুড়িয়েছে। কথা বলতে গেলে সে ব্যস্ত ভঙ্গিতে শুধু এক হাজার টাকার নোটটি দেখিয়ে আবার টাকা ধরার কাজে মনোযোগ দেয়।
আলমগীর হোসেন (৪৫) নামের এক রিকশাচালক রিকশা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এই রাস্তা দিয়ে। পরে তিনি জানতে পারেন ড্রেন দিয়ে এক হাজার টাকার নোট ভেসে যাচ্ছে। তবে তিনি জানান, তিনি এখনো এক হাজার টাকার নোট দেখতে পাননি। ১০০, ৫০০ টাকার নোট পেয়েছেন। তিনি কথাগুলো বলছিলেন ভেজা কিছু কাগজপত্র খুলে দেখতে দেখতে।
তবে পাঁচ-সাতজন ড্রেন থেকে টাকা তুললেও তাঁরা কত টাকা পেয়েছেন, তা খোলাসা করেননি। তাঁদের ভয়, পুলিশ জানলে টাকাগুলো নিয়ে যাবে।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মন বলেন, তিনি জেনেছেন ওই ড্রেন দিয়ে কোনো অফিসের পুরোনো কাগজপত্র ভেসে যাচ্ছে। তার সঙ্গে কিছু টাকাও নাকি পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে পরিবহন গ্রুপের কাগজপত্রের সঙ্গে ড্রেনে টাকা ভেসে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা সড়ক পরিবহন গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক বলেন, তাঁদের অফিসের অনেক বছরের পুরোনো কাগজপত্র ছিল। সেগুলো তাঁদের কোনো কাজেই আসবে না। পোড়ানোর ব্যবস্থা করা যায়নি বলে সেগুলো ড্রেনে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সেসব কাগজপত্রের ভেতর হয়তো কিছু টাকা থেকে গেছে। এটা আর কিছু নয়।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ প্রথম আলো