রাজশাহীর বাজারগুলোতে পর্যাপ্ত নতুন আলু থাকলেও দাম হাঁকা হচ্ছে আকাশ ছোঁয়া। অগ্রিম চাষ করা এ আলু বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিকেজি নতুন আলুর বাজারমূল্য এখন ৮০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। আপাতত দাম কমার কোনো সম্ভাবনাও দেখছেন না ক্রেতারা।
দাম বেশি হওয়ায় অল্প করে নতুন আলু রাখছেন সবজি বিক্রেতারা। দামের কারণে কোনো কোনো ক্রেতা এক কেজি বা আধা কেজি পরিমাণ করে নতুন আলু নিচ্ছেন। তবে বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম কিছুটা কমেছে। ফলে ক্রেতাদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে আগের চেয়ে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে। ফলে শীতকালীন সবজির দাম কমছে। কিন্তু নতুন আলুর দামটা বেশি। সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে দাম কমতে শুরু করবে।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে এর আগেও কোনো সবজির ঘাটতি ছিল না। অতিরিক্ত দাম রাখতে ব্যবসায়ীরা সরবরাহ কম থাকার অজুহাত দিচ্ছেন। বাজারে প্রশাসনের মনিটরিং বাড়ানো দরকার।
রোববার (৬ ডিসেম্বর) নগরীর সাহেব বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে। বাজারে প্রতি কেজি চিচিঙ্গা-ধুন্দুল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, পটল ও ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, শসা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, ফুলকপি-বাধাকপির দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়।
এছাড়া কচুর লতি ৩০ টাকা, কলা প্রতি হালি ২০ টাকা, শিম ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, লাউ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, রসুন ৯০ থেকে ১৪০ টাকা, আদা ৮০ থেকে ১৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, অপরিবর্তিত রয়েছে চালের দাম। আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়, পায়জাম ৬০ টাকা, মিনিকেট ৫৩ থেকে ৫৫ টাকা, নাজিরশাল ৫৯ থেকে ৬১ টাকা। কাটারিভোগ ৫২ থেকে ৭৫ টাকা ও কালজিরা চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে।
অন্যদিকে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়, বকরির মাংস ৬০০ টাকায়, গরুর মাংস ৫৪০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, সোনালী মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও দেশি মুরগি ৩৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের মধ্যে ইলিশ প্রতিকেজি ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, রুই ২০০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি, কাতল ২০০ থেকে ৪৮০ টাকা, বোয়াল ৪৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, চিতল ৬৫০ টাকা, সিলভার কার্প ১২০ থেকে ২১০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ টাকা, চাষের পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৮০ টাকা, নদীর পাঙ্গাস এক হাজার টাকা ও দেশি কই এক হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সাহেব বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী রহমত আলী বাংলানিউজকে বলেন, শীত পড়তে শুরু করেছে মাত্র। নতুর আলুর মৌসুম শুরু হয়নি। তবে এ বছর মৌসুমের আগেই বাজারে নতুন আলু আসতে শুরু করেছে। সামর্থ্যবান ক্রেতাদেরও আগ্রহ রয়েছে নতুন আলুর প্রতি। তাই বিক্রির জন্য অল্পকিছু আনি। বিক্রিও হয়ে যায়। পুরনো আলুর কেজি ৫০ টাকা, সেখানে নতুন আলু বিক্রি করি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে। গত বছরও নতুন আলু ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। সে সময়ে পুরনো আলুর কেজি ছিল ৩০ টাকা। এ বছর ৫০ টাকা।
আরেক ব্যবসায়ী নুরুল আমিন বলেন, পুরাতন আলুর দাম এ বছর বেশি বলেই নতুন আলুর দামও স্বাভাবিক নিয়মে বেড়েছে। অন্যান্য বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে নতুন আলু বাজারে এলেও এ বছর নভেম্বরেই চলে এসেছে। ফলে দাম কিছুটা বেশি।
সাহেব বাজারে আসা ক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, সবজির দাম কমায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পাচ্ছি। কিছুদিন আগে ১০০ টাকা দিয়ে একবেলার সবজি কেনা যাচ্ছিল, এখন এই টাকায় অনেকগুলো সবজি পাওয়া যাচ্ছে। তবে আলুর দাম এখনও বেশি।
সাহেব বাজার থেকে সবজি কিনে অভি পাল বলেন, কিছুদিন আগে বাজারে এসে একটা-দুইটা সবজি কিনে নিয়ে যেতাম। এখন দুই হাত বোঝায় করে সবজি কিনতে পারছি। তবে নতুন আলুর দাম আরো কমানো উচিত।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ