রাজশাহী মহানগরীর বিলসিমলা রেলক্রসিং থেকে কাশিয়াডাঙ্গা মোড় পর্যন্ত চারলেন সড়কে বসানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন আধুনিক সড়কবাতি। সড়কের মধ্যে পোলগুলোতে দিনের বেলা দেখে মনে হয় প্রজাপতি বসে আছে।
রাতের বেলা সেই প্রজাপতির ডানায় জ্বলে উঠে আলো। দৃষ্টিনন্দন এ প্রজাপতি বাতিতে আলোকিত হয় সড়ক।
আর তার নিচেই সড়ক বিভাজকে হাসছে সূর্যমুখী ফুল। এর ফাঁকে ফাঁকে শোভা পাচ্ছে বিদেশি ফুল হলিহক। আছে রঙ্গনেরও গাছ। দিনে হরেক রকমের ফুলের সৌরভ আর রাতে প্রজাপতির ডানায় জ্বলে ওঠা আলোর অপরূপ সৌন্দর্যে সড়কটি নগরবাসীকে বিমোহিত করেছে।
২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) দায়িত্বগ্রহণের পর রাজশাহী মহানগরীকে পরিকল্পিতভাবে সাজাতে কাজ শুরু করেন মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। ইতোমধ্যে নগরীর বহুমুখী উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে। মহানগরীর বিলশিমলা থেকে কাশিয়াডাঙ্গা পর্যন্ত ৪ দশমিক ২ কিলোমিটারের সড়কটি সম্প্রতি চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। ৫২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা খরচে সড়কটি ৩০ ফুট থেকে ৮০ ফুটে উন্নীত করা হয়।
সড়ক বিভাজকে সম্প্রতি বসানো হয়েছে চীন থেকে আনা দৃষ্টিনন্দন সড়কবাতি। এর পোলগুলোও দৃষ্টিনন্দন। সড়কটিতে রয়েছে ১৭৪টি দৃষ্টিনন্দন বৈদ্যুতিক পোল। প্রতিটি পোলে দুইটি করে মোট ৩৪৮টি এলইডি বাতি প্রজাপতির মতো ডানা মেলে রয়েছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী সড়কবাতিগুলো অটোলজিক কন্ট্রোলারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন-অফ হয়।
বাতিগুলো লাগানোর পর চার লেনের এ সড়কটির সৌন্দর্য বেড়েছে। রাতে যখন প্রজাপতির মতো দেখতে সড়কবাতিগুলোতে দুই পাশের আলো জ্বলে ওঠে, তখন এক নান্দনিক রূপ দেখা যায় সড়কে। সেই সঙ্গে দিনে সড়কে সৌন্দর্য বাড়িয়েছে সূর্যমুখী ও হলিহক ফুল। সড়ক ডিভাইডারে রঙ্গন ফুলেরও গাছ লাগানো হয়েছে। এখনই রঙ্গন না ফুটলেও কয়েক দিন আগে থেকে ফুটতে শুরু করেছে সূর্যমুখী এবং হলিহক। নগরের সৌন্দর্যবর্ধনে রাসিকের পরিবেশ উন্নয়ন শাখা সড়কটিতে এসব ফুলের গাছ লাগিয়েছে।
ওই সড়কে ঘুরতে আসা মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা রাফসান জনি বলেন, সড়ক বিভাজকে ফুল ফোটার কারণে সৌন্দর্য আরও বেড়েছে। এ দৃশ্য আমাদের মুগ্ধ করছে। শহরের সব সড়ক এমন হলে খুব ভালো হতো।
মহানগরীর বিলসিমা এলাকার বাসিন্দা সালমান আলী বলেন, সড়কবাতিগুলো দেখে মনে হচ্ছে যেন সড়ক বিভাজকের ফুল থেকে উঠে প্রজাপতি উড়ছে। এত সুন্দর সড়ক দেশের আর কোনো শহরে আছে কি না আমার জানা নেই।
রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সড়কের দুই পাশে ১০ ফুট চওড়া ফুটপাত এবং রাস্তার দক্ষিণ পাশে ৮ ফুট বাইসাইকেল লেন নির্মাণ করা হয়েছে। দুই পাশেই আছে আরসিসি ড্রেন। সবচেয়ে সুন্দর এর আইল্যান্ড। সবুজায়নের জন্য এর ভেতরে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। ফুলের চারা রোপণ করা হয়েছে। ফুল এরই মধ্যে ফুটতেও শুরু করেছে। এর ফলে সড়কটি নান্দনিক রূপ পেয়েছে।
তিনি বলেন, মহানগরীতে নতুন যত রাস্তা করা হবে সবটিকেই এভাবে সাজানো হবে। রাজশাহীকে আরো পরিচ্ছন্ন, সবুজ, দৃষ্টিনন্দন, পরিকল্পিত, উন্নত ও বাসযোগ্য মহানগরীকে পরিণত করা হবে। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ