রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় করোনা সংক্রমণের হার বেশি। রামেক হাসপাতালের পাশের এ লক্ষ্মীপুর এলাকাটি ‘ডক্টরস জোন’ বলেও খ্যাত।
গুরুত্বপূর্ণ এ পয়েন্টে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে। কেবল এ পয়েন্টেই নয়, রাজশাহী মহানগরের এমন পাঁচটি জনবহুল পয়েন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ ১৩টি পয়েন্টে এ টেস্ট করা হচ্ছে। তবে শনাক্তের হারে দেখা যাচ্ছে হাসপাতাল সংলগ্ন এ এলাকাতেই করোনার সংক্রমণ বেশি।
গত দু’দিন থেকে রাজশাহী মহানগরের এ স্থানগুলোতে ভ্রাম্যমাণ বুথ বসিয়ে সাধারণ মানুষের টেস্ট করা হচ্ছে বিনামূল্যে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো হলো- রাজশাহী মহানগরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, লক্ষ্মীপুর মােড়, সিঅ্যান্ডবি মােড়, হড়গ্রাম বাজার ও তালাইমারী মোড়। এছাড়া মহানগরের আমচত্বর, কাশিয়াডাঙ্গা মোড়, বিন্দুর মোড়, ভদ্রা স্মৃতি অম্লান চত্বরসহ মোট ১৩টি পয়েন্টে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন। মূলত সিটি করপোরেশন এলাকায় করোনার সংক্রমণ কেমন ছড়িয়েছে তা জানতেই এ র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে। এতে দেখা যায়, মঙ্গলবার (৮ জুন) মহানগরের লক্ষ্মীপুর পয়েন্টে মোট ১৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ২৬ জন করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন।
এ হাসপাতাল এলাকায় করোনা সংক্রমণের হার ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ। এছাড়া মহনগরের ১৩টি পয়েন্টে ৯৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় গড় সংক্রমণের হার ১০ দশমিক ২২ শতাংশ। মঙ্গলবার মোট ৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছে। রাসিক আরও জানায়, মঙ্গলবার মহানগরের আমচত্বর এলাকায় ৮০ জনের মধ্যে ছয়জন, কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় ৮০ জনের মধ্যে একজন, সিঅ্যান্ডবি মোড়ে ৯৯ জনের মধ্যে আটজন, সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে ৭৭ জনের মধ্যে ১৪ জন, ভদ্রার মোড়ে ৬৬ জনের মধ্যে আটজন, তালাইমারী মোড়ে ৯৪ জনের মধ্যে ছয়জন, বিন্দুর মোড়ে ৭৭ জনের মধ্যে ছয়জন, টুলটুলিপাড়া হেলথ সেন্টারে ৩৭ জনের মধ্যে তিনজন, কাদিরগঞ্জ হেলথ সেন্টারে ২৬ জনের মধ্যে দু’জন, পঞ্চবটি হেলথ সেন্টারে ৭৭ জনের মধ্যে পাঁচজন ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের এলাকায় ৫৭ জনের মধ্যে ১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এছাড়া মহানগরের মেহেরচণ্ডী হেলথ সেন্টারে ৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলেও কারো করোনা পজিটিভ রিপোর্ট হয়নি। এখানে সংক্রমণের হার শূন্য। এর আগে র্যাপিড টেস্টের প্রথম দিন গত রোববার (৬ জুন) রাজশাহীর পাঁচটি পয়েন্টে বুথ বসানো হয়েছিল। সেদিন সংক্রমণের গড় হার ছিল ৯ শতাংশ। পরদিন সোমবার (৭ জুন) তা বেড়ে ১২ দশমিক ৬৫ শতাংশে দাঁড়ায়। মঙ্গলবার এ হার আরও কিছুটা কম পাওয়া গেছে। সোমবার মহানগরে ৬৯৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয় ৮৪ জনের। সেদিন রামেক হাসপাতাল সংলগ্ন লক্ষ্মীপুর এলাকায় সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছিল ১৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। মঙ্গলবারের হার কিছুটা কম হলেও তা শহরের অন্য এলাকার চেয়ে বেশি।
রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, কী পরিমাণ সংক্রমণ আছে সেটা দেখতেই মূলত এ কার্যক্রম। সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণ কতটা ছড়িয়েছে এর মাধ্যমে তার কিছুটা ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। সিটি করপোরেশন এলাকার পাশাপাশি রাজশাহী জেলার ৯টি উপজেলায়ও একইভাবে টেস্ট করা হচ্ছে। যেখানে মোট সংক্রমণের হার পাওয়া গেছে ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ বলেও উল্লেখ করেন রাজশাহীর সিভিল সার্জন।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ বাংলানিউজ