বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার চরে গুলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বাড়ি তল্লাশি করে আর্মি পরিহিত এক সেট পোশাক ও ১২ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। সংঘর্ষ ও গুলাগুলির ঘটনায় রোববার রাত ৯টার দিকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার পদ্মার চরের মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চৌমাদিয়া চরের মজনু হোসেন দর্জি ও দিলা ইসলাম ব্যাপারি মধ্যে জমির আগাছা পরিস্কার করাকে কেন্দ্র করে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে উভয় পক্ষ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একে অপরের উপর আক্রমন করা হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন চৌমাদিয়া চরের আদম আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৩০), অলি ঢালীর ছেলে লিটন ঢালী (৩৫), সামসুল ইসলামের ছেলে দুলাল দর্জি (৩০), দিলু দর্জির স্ত্রী মরিয়ন বেগম (৩৫)।
এদিকে নুরুল ইসলামের ছেলে ইদ্রিস আলী (৪০), আলিম আলী দর্জির ছেলে ইয়ার আলী (৪৫), সেকেন্দার আলীর ছেলে ইব্রাহীম হোসেন, দিলু দর্জির ছেলে মজনু দর্জি লোহার রড়ে গুরুতর আহত হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে গেলে মরিয়ম বেগমের বান পায়ে, রাজ্জাকের বুকে, লিটন ঢালীর পেটে, দুলালের পিঠে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়।
এই ঘটনায় বাঘা থানার পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে পদ্মার মধ্যে চৌমাদিয়া চরের মৃত হাকিম ব্যাপারির ছেলে আলাউদ্দিন (৪০), আবদুর রশিদের স্ত্রী রুবি বেগম (২৫), মৃত জলিল ব্যাপারির ছেলে আসাদ (৪৫) নামের তিনজনকে গ্রেফতার করে থানায় আনা হয়েছে। এছাড়া গ্রেফতারকৃতদের বাড়ি তল্লাসি করে এক সেট আর্মি পরিহিত পোশাক ও ১২ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সংঘর্ষ ও গুলাগুলির ঘটনায় চকরাজাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর ও চৌমাদিয়া চরের রহমান আলী বাদি হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক সোলাইমান হোসেন জানান, আহতদের মধ্যে ইদ্রিস আলী ছাড়া সবাইকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
চৌমাদিয়া চরের স্থানীয় সোহেল রানা, সোলাইমান হোসেন, সুফিয়ান হোসেন জানান, মজনু হোসেন দর্জির কলা বাগানের সাথে দিলা ইসলাম ব্যাপারির জমি রয়েছে। সেই জমিতে আগাছা পরিস্কার করার জন্য দিলা ইসলাম ব্যাপারি আগুন দেয়। সেই আগুনে মজনু দর্জির কলা বাগানের ক্ষতি হয়। এই বিষয়টি দিলা ইসলাম ব্যাপারিকে জানাতে গেলে উল্টো মজনু দর্জিকে মারপিট করা হয়। এর জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে বন্ধুক, লাঠি, হাসুয়া, লোহার রড় নিয়ে একে উপরের মধ্যে সংর্ঘষ হয়।
এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি জানার সাথে সাথে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে য়ায়। তবে এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তিন জনকে গ্রেফতার করে তাদের বাড়ি তল্লাসি চালিয়ে আর্মি পরিহিত পোশাকের মতো এক সেট পোশাক ও ১২ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।
বাঘায় পদ্মার চরে গুলাগুলি গ্রেফতার ৩, আর্মির পোশাক ও ফেন্সিডিল উদ্ধার
previous post