শেষ পর্যন্ত যেই মেসির পায়ে ভর করে আরো একবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নে রাশিয়া এসেছিল আর্জেন্টিনা, সেই মেসির পেনাল্টি মিসেই প্রথম ম্যাচে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে হোচট খেল আর্জেন্টিনা। নবাগত দলটির বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করলো দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। অথচ ম্যাচে প্রথমেই এগিয়ে গেছিল আর্জেন্টিনা। পেনাল্টি থেকে সুযোগও পেয়েছিল ব্যবধান বাড়ানোর কিন্তু মেসি পারেননি স্পট কিক থেকে গোল দিতে। প্রথমবার খেলতে এসেই মেসিদের ভালোই পরীক্ষা নিল নবাগত দলটি। আগুয়েরোর গোলে প্রথমে এগিয়ে গিয়েও ফিনবোগাসনের গোলে সমতায় ফেরে তারা।
ম্যাচের ৪ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে মেসির বাড়ানো বলে ওটামেন্ডি মাথা ছোয়ালেও গোলবারের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৮ মিনিটে আবারো ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। মেসির নেওয়া ফ্রি কিকে তালিয়াফিকোর হেড একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এর ঠিক এক মিনিট পরেই গোলের সহজ সুযোগ পেয়েছিল আইসল্যান্ড। কাবায়েরোর ভুল পাসে আইসল্যান্ড বল পেলে ডি বক্সের ভেতর জারনাসন গোলমুখে শট নিতে ব্যর্থ হন।
১৭ মিনিটে মেসির নেওয়া দূরপাল্লার আচমকা শট আইসল্যান্ডের গোলরক্ষক রুখে দেন। ১৯ মিনিটেই আইস দুর্গ ভাঙ্গেন সার্জিও আগুয়েরো। মার্কস রোহোর কাছ থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের ভেতর বা পায়ের বুলেট গতির কোণাকুণি শটে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোলটি করেন আগুয়েরো।
এই গোলের আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী ছিল আর্জেন্টিনা শিবিরে। ২৩ মিনিটে আইসল্যান্ডের হয়ে ইতিহাস গড়েন ফিনবোগাসন। ডি বক্সের ভেতর জটলা থেকে বিশ্বকাপে আইসল্যান্ডের হয়ে প্রথম গোলটি করেন তিনি। সমতায় ১-১ গোলে সমতায় ফেরে বিশ্বকাপের ৩২টি দেশের ভেতর সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম দেশটি।
গোল খেয়ে যেন স্বরূপে ফেরে আর্জেন্টিনা। নিজেদের চিরাচরিত ছোট ছোট পাসে আক্রমণের ধাঁর বাড়াতে থাকে মেসিরা। ৩১ মিনিটে লুকাস বিলিয়ার নেওয়ার দূরপাল্লার শট গোলবারের সামান্য উপর দিয়ে চলে যায়। প্রথমার্ধের শেষ দিকে গিলফি সিগার্ডসনের শট রুখে দেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক কাবায়েরো। শেষ দিকে আর তেমন কোন আক্রমণের সুযোগ না পেলে ১-১ এ সমতায় থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
দ্বিতীয়ার্ধে ছন্নছাড়া আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডে বিলিয়ার পরিবর্তে বানেগাকে নামান কোচ। খেলায় গতি আসলেও আইসল্যান্ডের ফুটবলারদের উচ্চতা ও দৈহিক গড়নের কাছে পেরে উঠতে পারছিল না আর্জেন্টিনা। ৬৪ মিনিটে আইসল্যান্ডের ম্যাগনুসন ডি বক্সের ভেতর আগুয়েরোকে ফেলে দিলে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেয় রেফারি।
পেনাল্টি নিতে এগিয়ে এলেন মেসি। যেই মেসি আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনিই পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হলেন। আইসল্যান্ডের গোলরক্ষক হ্যালডরসন ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্তভাবে মেসির নেওয়া পেনাল্টি রুখে দেন। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ২১টি পেনাল্টি নিয়ে ৪টিতে মিস করলেন মেসি।
৮১ মিনিটে পাপ মোচন করার সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি কিন্তু ডি বক্সের বাইরে থেকে নেওয়ার দূরপাল্লার শটটি একটুর জন্য বাইরে চলে যায়। ৮৮ মিনিটে মাসেরানোর দূরপাল্লার দুর্বল শট সহজে তালুবন্দী করেন আইস গোলরক্ষক হ্যালডারসন। অতিরিক্ত সময়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে মেসির নেওয়া ডান পায়ের জোরালো শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ১-১ গোলে ড্র মেনে নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় আর্জেন্টিনাকে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ জাগোনিউজ২৪