বৃহৎবঙ্গের প্রাচীনতম বিদ্যাপিঠ রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলে শুরু হয়েছে ১৯০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠান। এতে শুক্রবার থেকে স্কুলপ্রাঙ্গনে শুরু হয়েছে নবীন ও প্রবীণ শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা। প্রবীণদের অনেকেই স্কুল জীবনের প্রিয় বন্ধুকে দীর্ঘ দিন পর কাছে পেয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন। পরম মমতায় জড়িয়ে ধরেন একে অপরকে। শুরু হয় স্মৃতিচারণ।
ঐতিহ্যবাহী এই স্কুলটির ১৯০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুইদিন ব্যাপী এ মিলন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে এর উদ্বোধন করেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়র ও স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এ সময় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারও উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনকালে মেয়র লিটন বলেন, আমি নিজেও এই প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী স্কুলের ছাত্র ছিলাম। এখানে এসে স্কুলজীবনের স্মৃতির কথা মনে পড়ে গেল। এখানকার অনেক শিক্ষার্থী বতর্মানে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। আগামীতেও এখানকার শিক্ষার্থীরা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে, ভবিষ্যতের কান্ডারি হবে এই শুভ কামনা করছি।
প্রথম অধিবেশনে পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন শেষে বের করা হয় বর্ণাঢ্য র্যালী। নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীরা র্যালীতে অংশ নেন। র্যালী শেষে স্কুল ক্যাম্পাসে পুর্নমিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ড. নুরজাহান বেগম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ১৯৫৫ ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, ১৯৫৮ ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র আতফুল হাই সিদ্দিকী, ১৯৬০ ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র নুরুল হক প্রমূখ।
দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। আজ শনিবার প্রথম অধিবেশনের প্রধান অতিথি থাকবেন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) এএইচএম আব্দুল মোমেন। আর সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। অনুষ্ঠান আনন্দঘন করতে দুই দিনই জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ব্যান্ড-শো ও আতশবাজীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র উপশহর দড়িখরবোনার মিনহাজ তৌহিদ বলেন, অনেক ভালো লাগছে। পুরো দিনের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়ে। অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ ছিলনা। এবার বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্ত হয়ে নিচ্ছি। যেন আর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না হই। এ যেনো পুরো দিনগুলো নতুন করে ফিরে পাওয়া। মনে থাকবে চিরোদিন।
প্রসঙ্গত, ইংরেজী শিক্ষার প্রসারে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিং ১৮২৮ সালে ‘বউলিয়া ইংলিশ স্কুল’ নামে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে উইলিয়াম অ্যাডাম ১৮৩৫ সালে স্কুলটি পরিদর্শনের পর সরকারের কাছে এর উজ্জ্বল সম্ভাবনা তুলে ধরলে পরের বছরের ২০ জুন স্কুলটিকে সরকারীকরণ করা হয়। ১৮৭৩ সালে বউলিয়া সরকারি ইংলিশ স্কুলের সঙ্গে মহাবিদ্যালয়ের দুটি শ্রেণি সংযোজিত হয় এবং তখন থেকেই এর নামকরণ হয় ‘রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল’।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ ডেইলি সানশাইন