মাঠ প্রস্তুত রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের। প্রস্তুতি মেয়র পদের দুই হেভিয়েট প্রার্থী বর্তমান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে এখনো নামেননি রাজশাহী আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ এই দুই নেতা। টানা তৃতীয়বারেরমত মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন তারা।
তাদের কেউই এখনো মেয়র পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে এ নির্বাচন। আর এতে অংশ নিতে আগামী ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিল করতে হবে তাদের। সেই হিসেবে হাতে আর মাত্র ৫ দিন সময় পাচ্ছেন লিটন ও বুলবুল।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দলীয় সূত্রগুলো বলছে, আসন্ন এ নির্বাচনে বর্তমান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের প্রার্থীতা প্রায় চুড়ান্ত। দলীয় প্রতীকের এ নির্বাচনে দলের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন রাজশাহী নগর বিএনপির সভাপতি বুলবুল। তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছেন সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনিও দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। আগামী শুক্রবার তাদের দলীয় প্রার্থীতা চুড়ান্ত হবার কথা জনিয়েছেন সংশি¬ষ্টরা।
সর্বশেষ গত ২০১৩ সালের ১৫ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মেয়র পদে পরাজিত হন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তালা প্রতীক নিয়ে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন পান ৮৩ হাজার ৭২৬ ভোট। আনারস প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের বাক্সে পড়ে এক লাখ ৩১ হাজার ৫৮ ভোট। অবশ্য এর আগের নির্বাচনে লিটনের কাছে ধরাশয়ি হন নতুন মুখ বুলবুল।
এদিকে, নির্বাচন কমিশনের আল্টিমেটামে বড় বড় ব্যানারগুলো সরিয়েছেন লিটনের কর্মী ও সমর্থকের। কোথাও কোথাও সরানো হয়েছে পোস্টারও। তবে যাচ্ছেতাই ভাবে সরানোই সৌন্দর্য হারিয়েছে নগরী। শেষ পর্যন্ত হাত লাগিয়েছে নগর কর্তৃপক্ষ। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার দিনভর পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালায় রাসিকের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মীরা।
রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মোমিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নিজ দায়িত্বে নির্বাচনী বিলবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুন ও পোস্টার সরিয়ে নিতে ২০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছিলো সম্ভাব্য প্রার্থীদের। ওই সময়ের পরও যে সব প্রচারপত্র সরেনি সেগুলো অপসারণ করছে রাসিক। আগামী দু-একদিনের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হবে।
এদিকে, নির্বাচনে অংশ নিতে এ পর্যন্ত ১৮৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন এরা।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান জানান, ছুটির দিনসহ প্রতিদিনই সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সবমিলিয়ে ১৮৭ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে ১৪০ জন কাউন্সিলর ও ৪৭ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে। এ পর্যন্ত একজনই মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এখনো মেয়র পদে কোন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি। আগামী ২৮ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন প্রার্থী।
তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ ও ২ জুলাই। আর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ জুলাই। ১০ জুলাই প্রতীক বরাদ্দের পরে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করতে পারবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা ছাড়াও ১০জন সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা এ নির্বাচনে দায়িত্বপালন করছেন। গত ১২ জুলাই আসন্ন এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়। রাজশাহী ছাড়াও একই দিনই বরিশাল ও সিলেট সিটিতেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
খবর কৃতজ্ঞতাঃ ডেইলি সানশাইন