এই তো মাত্র ক’বছর আগেই পুরো বিশ্বের বিভিন্ন নগরীকে পেছনে ফেলে রাজশহী নগরী ‘নির্মল বায়ুর শহর’ হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে সমাদৃত হয়েছিল। নগরের পরিচ্ছন্নতা আমাদের এই প্রাণ প্রিয় শহরকে এই সুখ্যাতি এনে দিয়েছিল। তবে সময়ের সাথে সেই খ্যাতি আমরা যেমন হারিয়েছি, তেমনি ক্রমেই এই শহরের বয়ুতে বিশাক্ত ধুলিকণার পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে। এ হিসাব স্বয়ং বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তরের দেয়া। অর্থাৎ পরিচ্ছন্ন নগরী খ্যাত রাজশাহী প্রতিনিয়তই ‘দুষণের নগরী’ খেতাবের দিকে ধাবিত হয়ে চলেছে। আর এরজন্য দায়ী যেমন অসচেতন নগরবাসী; তার চাইতে বেশি দায়ী স্বয়ং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক)।
সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন পথ-ঘাট ঘুরে দেখা যত্র-তত্র উন্মুক্ত ফেলে রাখা হয়েছে নগরবাসীর সৃষ্ট উচ্ছিষ্ট। তাতে মুখ ডুবিয়ে ভোজনে ব্যস্ত গবাদী পশুসহ কুকুর-বিড়াল। খাবার পাশাপাশি তারা এই উচ্ছিষ্ট ছড়াচ্ছে চারি ধারে। এতে করে বড়ছে মশা-মাছি; সেই সাথে বাড়ছে নানা রোগের জীবাণু। আর সেই জীবাণুই বায়ুতে মিশে সৃষ্টি হচ্ছে নান জটিলতা। নগরবাসীর মধ্যে বাড়ছে রোগের প্রকোপ; ক্রমেই আমরা হারাচ্ছি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
নগরীর পুলিশ লাইনের মোড় পেরিয়ে হটিকালচার সেন্টারের সামনের সড়কটি এমনই একটি আবর্জনার স্তুপে বোঝাই সড়ক। দুই লেনের এই সড়কটি নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে। যার এক ধার এখনও নির্মনাধীন হওয়ায় অব্যবহৃত হয়ে পড়ে রয়েছে। আর এই নির্মাণাধীন অংশের প্রায় পুরো অংশই এখন উন্মুক্ত ডাস্ট বিন বা শুদ্ধ বাংলায় ভাগাড়! রাসিকের নগর পরিচ্ছন্ন কর্মীরা এখানে আশপাশেল পুরো এলাকার সমস্ত ময়লা ও উচ্ছিষ্ট দিন শেশে নিয়ে এস এখানেই জড়ো করছে। ময়লাগুলেঅ এভাবেই অনেক সময় পড়ে থাকছে দিনের পর দিন। পচে সৃষ্টি হচ্ছে দুর্গন্ধ। এই ভাগাড়ে গরু-কুকুর মুখ ডুবিয়ে তাদের আহার খুজছে। চারি ধারে মাছি ভিন-ভিন করে উড়ে বেড়াচ্ছে। স্থানটির পাশদিয়ে যানে বা পায়ে হেটে যারা এই সড়কটি পাড়ি দিচ্ছেন সকলেই নিশ্বাস বন্ধ করে নয়তো নাকে হাত বা রুমাল দিয়ে পাড়ি দিচ্ছেন। উৎকট দুর্গন্ধে পুরো এলাকা চলাচল বা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ওই ধারের সংযুক্ত ফুপটাতটি এই আবর্জনার কারণে কেওই ব্যবহার করেন না।
আবর্জনা মিশ্রিত সড়কের বিপরীত ধারে কয়েকটি দোকন রয়েছে। রয়েছে একটি স্কুল। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, প্রতিদিন আশপাশের সকল এলাকার বাড়ি থেকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নিয়োগকৃত পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ভ্যানে করে আবর্জনা ও উচ্ছিষ্ট নিয়ে এনে এখানে ফেলেন। এভাবে কখনও দিনের পর দিন পড়ে থাকে ময়লাগুলো। ক্রমেই পচে তা থেকে উৎকট দুর্গন্ধে পুরো এলাকা দুষিত হয়ে পড়ে। এলাকাটিতে বসবাসরতরা উপহাস করে বলেন স্থানটি ‘সড়ক নয় যেন ভাগাড়’!
খবর কৃতজ্ঞতাঃ ডেইলি সানশাইন